নতুন বাজেটে ৩১৩ কোটি টাকা পাচ্ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়  © সম্পাদিত

আসন্ন নতুন অর্থবছরের (২০২৩-২৪) বাজেটে রাজস্ব, উন্নয়ন ও গবেষণা মিলিয়ে ৩১৩ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে দক্ষিণের অন্যতম শীর্ষ উচ্চশিক্ষালয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি)। এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রাজস্ব বাজেটে বরাদ্দ করা হয়েছে প্রায় ১৬১ কোটি টাকা; যা চলতি অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২৩ কোটি টাকা বেশি।

বাজেটে চলমান ভৌত নির্মাণ অবকাঠামোর কাজ বাস্তবায়নে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় নতুন অর্থবছরের জন্য ১শ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। নতুন অর্থবছরে গবেষণা খাতেও দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ বেড়ে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকায় উন্নীত হচ্ছে উচ্চশিক্ষা-প্রতিষ্ঠানটিতে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সামগ্রিক বরাদ্দের প্রেক্ষাপটে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ বরাদ্দ আশাব্যঞ্জক—বলছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।

রাজস্ব বাজেটের বরাদ্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাং-বাৎসরিক সংশ্লিষ্ট খাতের নানা ব্যয় মেটাতে খরচ করবে কর্তৃপক্ষ। দেশের উচ্চশিক্ষার তদারক সংস্থা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক এই রাজস্ব, উন্নয়ন ও গবেষণা বাজেটের বরাদ্দ অনুমোদন দিয়েছে। 

অন্যদিকে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে খুবি প্রথম প্রণয়ন করেছে ‘সফট্ অবকাঠামো’ শীর্ষক একটি প্রকল্প। ৪৭ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় সাপেক্ষ এ প্রকল্পটি আসন্ন নতুন অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি-এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে আগামী বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩১৩ কোটি টাকারও বেশি নানা কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে বলে আশা করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এদিকে খুবির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটির সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থার ঘাটতি পূরণে অগ্রাধিকার ভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণসহ বেশ কিছু নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আবাসনে কেন্দ্রীয় মসজিদ ও মেডিকেল সেন্টারের পূর্বপাশে অবস্থিত খালি জায়গায় বহুতল বিশিষ্ট নতুন হল নির্মাণ কথাও জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন ডরমিটরি ভবন নির্মাণ, খানজাহান আলী হলের নতুন উইং ঊর্ধ্ব ও পার্শ্ব-মুখী সম্প্রসারণের উদ্যোগও রয়েছে নতুন পরিকল্পনায়।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজিতা ও বঙ্গমাতা হলের মধ্যবর্তী স্থানে নতুন একটি ব্লক নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এসব অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর আবাসন সুবিধা নিশ্চিত হবে বলে আশা করছেন তারা। এবছর শিক্ষার্থীদের জন্য ৫২ সিটের একটি বাস ক্রয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এ ক্রয় প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর আগের বছর শিক্ষকদের জন্য একটি মিনি-কোস্টার ক্রয় করা হয়।

পাশাপাশি পরিকল্পনা কমিটির সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা স্কুলের জন্য নতুন স্থান ও একাডেমিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত, চারুকলা স্কুলের এ ভবনে ডিজাইন ল্যাব, এক্সিবিশন ল্যাব ও ড্রইং ল্যাবের সুবিধা অন্তর্ভুক্ত রাখতে কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া নতুন নতুন উচ্চ-ফলনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন, জীববিজ্ঞান শাখার গুণগত শিক্ষা ও গবেষণার মান বাড়াতে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রিন হাউজ ও নেট-হাউজ নির্মাণেরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ইউজিসি এ ব্যাপারে প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে। 

এ নিয়ে ডিপিপি প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। এগ্রো-টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের আওতায় গল্লামারী আবহাওয়া অফিসের পাশে ১১ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষ একটি অ্যানিম্যাল শেড নির্মাণের কাজ আগামী অর্থবছরে শুরু হবে আশা করা হচ্ছে। নতুন এসব উদ্যোগ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত করা ও প্রজেক্টের ওয়ার্ক ডিটেইল নিয়েও প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে তা প্রথমে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটিতে উপস্থাপন করতে হয়। এই কমিটির সিদ্ধান্ত ও সুপারিশের পর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগকে ডিপিপি প্রণয়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

একই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সম্প্রতি পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটির ৫৪তম সভায় শিক্ষার্থীদের নতুন আবাসন সুবিধাসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক রিসার্চ, অটোমেশন, ফেয়ার রিক্রুটমেন্ট কিংবা বাজেট বরাদ্দ সদ্ব্যবহারের ক্ষেত্রে সক্ষমতা ও স্বচ্ছতা প্রমাণ করে খুবি সংশ্লিষ্ট সব মহলে নজর কেড়েছে—মনে করে খুবি কর্তৃপক্ষ।

প্রসঙ্গত, সোমবার দেশের ৫১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের ব্যয় নির্বাহের জন্য ১০ হাজার ৫১৫ কোটি ৭১ লক্ষ টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে ইউজিসি। বাজেটে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১০ হাজার ৪৪৪ কোটি ০৪ লক্ষ টাকা এবং ইউজিসি’র জন্য ৭১ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা। এসব অর্থ দেশের উচ্চ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো পড়াশোনা, আবাসন, গবেষণা ও উন্নয়নসহ নানা খাতে খরচ করবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence