ইবিতে বেঞ্চে বসার দ্বন্দ্বে সহপাঠীকে পেটালেন ছাত্রলীগ নেতা
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২২, ১১:১৮ PM , আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২৫, ১২:২১ PM
শ্রেণিকক্ষে বেঞ্চে বসা নিয়ে বাক বিতন্ডার জেরে নিজ দলের কর্মীকে দিয়ে সহপাঠীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আসিফ আহমেদ শিমুল নামে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। মারধরকারী ছাত্রলীগ কর্মীর নাম সাইফুল ইসলাম রিয়ন। আর ভুক্তভোগী ছাত্রের নাম শিবলী আলী।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ সংলগ্ন রহিমের চায়ের দোকানে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
অভিযুক্ত শিমুল ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ও রিয়ন আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় সভাপতি, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্র।
লিখিত অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে শ্রেণিকক্ষে একটি বেঞ্চে ব্যাগ রেখেছিলেন শিমুল। সেই ব্যাগ সরিয়ে বসেন শিবলী। এসময় শিমুল কক্ষে গিয়ে তার ব্যাগ সরানোর কারণ জানতে চাইলে উভয়ের মাঝে বাকবিতণ্ডা হয়। এসময় শিবলীকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন শিমুল। পরে ক্লাস শেষে বাণিজ্য অনুষদ সংলগ্ন রহিমের চায়ের দোকানে বসেছিলেন শিবলী। এসময় ছাত্রলীগ কর্মী এবং আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রিয়নসহ অন্তত ৫-৭ জন অতর্কিত তার ওপর হামলা করে। এসময় শিবলীর বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান।
ভুক্তভোগী শিবলী বলেন, আমি ক্লাসে বেঞ্চে বসেছিলাম। ক্লাস শুরুর আগে ওই বেঞ্চ থেকে শিমুল আমাকে উঠতে বলে। আমি রাজি না হলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। আমার সহপাঠী শিমুলের মদদে এই হামলা করা হয়েছে। এমতবস্থায় আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। আমি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
অভিযুক্ত আসিফ আহমেদ শিমুল বলেন, ক্লাসের বেঞ্চে বসা নিয়ে শিবলীর সঙ্গে ছোট্ট একটা ঝামেলা হয়েছিল। আমার ব্যাগ সরিয়ে সে বেঞ্চে বসেছিল। ফ্যাকাল্টির সামনে এনিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রিয়ন সেখানে আসে। এসময় রিয়নের গলায় শিবলীর আচড় লাগে। তখনই সেটা মিটমাট করে আমি চলে এসেছিলাম। পরে কী হয়েছে জানি না।
বেঞ্চে বসা নিয়ে শিবলীর সঙ্গে ছোট্ট একটা ঝামেলা হয়েছিল। আমার ব্যাগ সরিয়ে সে বেঞ্চে বসেছিল। ফ্যাকাল্টির সামনে এনিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রিয়ন সেখানে আসে। এসময় রিয়নের গলায় শিবলীর আচড় লাগে। তখনই সেটা মিটমাট করে আমি চলে এসেছিলাম। পরে কী হয়েছে জানি না।
এদিকে অভিযুক্ত রিয়ন বলেন, আমি বিবিএ ফ্যাকাল্টির ওইদিক দিয়ে ক্লাসে যাচ্ছিলাম। ওইখানে আরও ৬-৭ জন ছিল। শিমুল ভাইয়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হচ্ছে দেখে আটকাতে গেছিলাম। ওই সময় আমার ঘাড়ে আঘাত লাগলে পরে অনিচ্ছাকৃতভাবে শিবলীকে দুয়েকটা আঘাত করেছি। দলবেঁধে মারার বিষয়টি সত্য নয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, কারও ব্যক্তিগত দায় কখনো সংগঠন নেবে না। রিয়নকে এর আগেও কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছিল। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
এদিকে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনা খতিয়ে দেখতে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন, সহকারী প্রক্টর ড. আমজাদ হোসেন ও ড. মুর্শিদ আলম। কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। দুইজন সহকারী প্রক্টরকে সদস্য করে একটি কমিটি করে দিয়েছি। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে