‘৭০-এর নির্বাচনে না গেলে মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বের সমর্থন পেতেন না বঙ্গবন্ধু’
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২০, ১২:১৬ PM , আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২০, ১২:১৬ PM
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি) ট্রাস্টের সম্মানিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সফিক আহমেদ সিদ্দিক বলেছেন, ৭০-এর নির্বাচনে না গেলে স্বাধীনতা সংগ্রামে বিশ্বের সমর্থন পেতেন না বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসের অনলাইন আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক ড. সফিক আহমেদ সিদ্দিক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উত্থাপিত ৬ দফা দাবি ছিল পূর্ব বাংলার মুক্তির দাবি। তবে তারও আগে থেকে বঙ্গবন্ধু মহান স্বাধীনতার লক্ষ্যে কাজ করেছিলেন। ১৯৪৮ সাল থেকে শুরু করে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর দিনলিপি পর্যালোচনা করলেই আমরা তা অনুধাবন করতে পারব। এবং আমরা এ পর্যালোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে আসতে পারব যে বঙ্গবন্ধু জাতির ন্থপতি হবার সত্যিই যোগ্য কি না। তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান সম্পর্কে ভালভাবে জেনে সিদ্ধান্ত নেবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
তিনি আরো বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। তার প্রমাণ পাওয়া যায় স্বাধীনতা সংগ্রামে বিপুল সংখ্যক কৃষক-শ্রমিক-ছাত্র জনতার অংমগ্রহণ দেখেই। কারাবন্দি বঙ্গবন্ধু ছিলেন মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি। জাতীয় চার নেতা তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় মুক্তিযুদ্ধকে জয়ের দিকে এগিয়ে নেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিইউবিটির সম্মানিত উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ফৈয়াজ খান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আমেরিকা বিশ্ববাসীর আবেগ ও মনোযোগ কেড়ে নিতে মার্কিন সঙ্গীত শিল্পী জর্জ হ্যারিসন ও পণ্ডিত রবি শংকরের অবদান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলার মুক্তি সংগ্রাম ও বঙ্গবন্ধুর ওপর বিস্তর গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।
এসময় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে বিইউবিটি আয়োজিত তিন পর্বের কুইজর বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন তিনি। কুইজ বিজয়ীরা হলেন- শিক্ষার্থী রিয়াজুল, রবিউল, তামান্না, ইমরান, নুসরাত, গালিব, ইমতিয়াজ, স্বর্ণা ও সোহাগ।
বিইউবিটি’র উপদেষ্টা ও ট্রাস্ট সদস্য অধ্যাপক মো. আবু সালেহ গেস্ট অব অনার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধকে জনযুদ্ধ আখ্যায়িত করে বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধও স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাষা আন্দোলন, ২১ দফা ও ৬ দফা দাবি, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন ধারাবাহিক আন্দোলনের ফসল। তিনি সবার প্রতি দেশকে ভালবাসার আহবান জানান।
বিইউবিটির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আলী নূর বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে আমরা কেবল একটি পতাকাই পাইনি- অর্থনৈতিক স্বাধীনতাও পেয়েছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ারুল হক বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে। জাতির জনক স্বাধীনতার যে বহ্নিশিখা বাঙালির হৃদয়ে প্রজ্বলিত করেছিলেন, ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে এই জাতি তা স্বার্থক করেছেন।
প্রধান আলোচক হিসেবে বিইউবিটি ট্রাস্টের সদস্য অধ্যাপক মিঞা লুৎফার রহমান তরুণ প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার ইতিহাস নির্মোহভাবে তুলে ধরার আহবান জানান। তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে জয় পরাজয়ের বিষয়টি দ্বিপাক্ষিক ছিল না। পাকিস্তানের দোসর দেশি-বিদেশি শক্তিও তখন পরাজিত হয়েছিল। পরাজিত শক্তি প্রতিশোধের জন্য বারবার ষড়যন্ত্র করেছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরও সে ষড়যন্ত্র কমেনি।’
স্বাগত বক্তব্যে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সৈয়দ সরফরাজ হামিদ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে উন্নতির শীর্ষে পৌঁছানোর লক্ষ্যে শিক্ষা, কৃষি, প্রযুক্তি, চিকিৎসা, অবকাঠামো, সামাজিক-ধর্মীয়-রাজনৈতিক বিজ্ঞানভিত্তিক উন্নয়নের জন্য নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার আহবান জানান।
সবশেষে বিইউবিটি কালচারাল ক্লাবের আয়োজনে দেশাত্মবোধক গান-কবিতায় সাংস্কৃতিক পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, প্রক্টরসহ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা এতে যুক্ত ছিলেন।