আমাদের ছেলেমেয়েরা পেশাগত দিক থেকে অনেক হতাশায় ভুগেন: ব্র্যাকের সেমিনারে বক্তারা

  © সংগৃহীত

আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা পেশাগত দিক থেকে অনেক হতাশায় ভুগে থাকেন। এই হতাশাগুলোই পরবর্তীতে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়। এমনকি আত্মহত্যার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়। 

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অফ এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্ট (ব্র্যাক আইইডি) এর আয়োজনে বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সেমিনারে  এ কথা বলেন বক্তারা।   

আজ রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর ) সেমিনারটি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। "আশা, প্রশান্তি এবং পদক্ষেপ বিষয়ক আলাপন' শীর্ষক এই সেমিনারে সমাজে আত্মহত্যা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এর সাথে জড়িত সকল প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে সকলের সম্মলিত প্রচেষ্টাকে একত্রিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

একিসাথে সমাজে যারা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন এবং আত্মহত্যার ঝুঁকিতে রয়েছেন তাদের মধ্যে সামগ্রিকভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। 

সেমিনারে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. একিউএম শফিউল আজম, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অফ এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্টের রিসার্চ লিড ও প্রোগ্রাম হেড সমীর রঞ্জন নাথ, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি’র উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ মাহমুদুর রহমান, বরেণ্য অভিনয়শিল্পী, পরিচালক, উদ্যোক্তা এবং সমাজকর্মী সারা যাকের এবং ব্র্যাক আইইডি’র মানসিক স্বাস্থ্য ও মনোসামাজিক সহায়তা টিম লিড ও সহকারি অধ্যাপক ড. তাবাসসুম আমিনা। 

মাউসি’র পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. একিউএম শফিউল আজম বলেন, “আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা পেশাগত দিক থেকে অনেক হতাশায় ভুগে থাকেন। এই হতাশাগুলোই পরবর্তীতে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়। এই পেশাগত হতাশা দূরীকরণের জন্য বাংলাদেশ সরকার শিশুকাল থেকে শিশুদের জীবন দক্ষতা বাড়ানোর জন্য এমন একটি শিক্ষাক্রমকে শিশুদের কাছে পরিচিত করার চেষ্টা করেছেন যেখানে তারা সব বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবে এবং তাদের আগ্রহের বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা করে পেশাগত জীবনে প্রবেশ করতে পারবে।”

সারা যাকের বলেন, “মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের তাদের জীবনের হতাশার ঘটনাগুলো মিডিয়াতে আরও বেশি করে শেয়ার করতে হবে এবং এর পাশাপাশি এই হতাশা থেকে তারা কী প্রক্রিয়ায় বের হয়ে আসতে পেরেছিলেন সেগুলো আরও বেশি গণমাধ্যমে প্রচার করতে হবে, যাতে করে তরুণ প্রজন্ম নিজেদের সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী হয় এবং তাদের সমস্যাগুলো সমাধানের দিক নির্দেশনা পায়।”

ড. তাবাসসুম আমিনা বলেন, ‘‘ব্র্যাক আইইডি’র এমএইচপিএসএস উদ্যোগের মূলনীতি হলো সমাজের সবাইকে নিয়ে একসাথে কাজ করা যা প্রমাণভিত্তিক ও আমাদের সংস্কৃতির সাথে প্রাসঙ্গিক এবং যার লক্ষ্য হলো দেশ ও বিশ্বের মানুষের সেবা করা ও তাদের ক্ষমতায়িত করা। আমাদের ৪৫ জনের ও বেশি মনোবিজ্ঞানী ও ৭০০'র ও বেশি প্যারাকাউন্সেলর দেশের বিভিন্ন জায়গাসহ মানবিক প্রেক্ষাপটে এ সকল উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।’’

ব্র্যাক আইইডি’র রিসার্চ লিড ও প্রোগ্রাম হেড সমীর রঞ্জন নাথ বলেন, “একজন মা যখন গর্ভধারণ করেন তখন থেকে শিশুর জন্ম ও বেড়ে উঠা প্রত্যেকটি ধাপে শিশুর জন্য যদি আমরা একটি সুন্দর পৃথিবী উপহার দিতে চাই তাহলে শিশুকে ঘিরে যে বাস্তুসংস্থান রয়েছে সেখানে শিশুর মা-বাবা, অভিভাবক, বিদ্যালয়, সমাজ, স¤প্রদায় ও রাষ্ট্র সকলের প্রচেষ্টায় কাজ করতে হবে যাতে করে শিশু সুন্দর ও স্বাভাবিক পরিবেশে বেড়ে উঠে এবং শিশুর সামাজিক আবেগিক বিকাশ নিশ্চিত হয় যার ফলে শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতা নিশ্চিত হবে।”


সর্বশেষ সংবাদ