শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পরীক্ষা পেছাল গবি প্রশাসন

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

টানা দুইদিন আন্দোলনের পর এপ্রিল-২০২৩ সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা পেছাতে সক্ষম হয়েছে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন ও মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে অবরুদ্ধ করার পর চাপের মুখে পরীক্ষার শিডিউলে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয় গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী,  পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২৯ মার্চ ও পরবর্তীতে লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে ৩০ এপ্রিল থেকে। সেক্ষেত্রে ক্লাস চলবে ২৮ মার্চ পর্যন্ত এবং ব্যবহারিক পরীক্ষার পর লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য ঈদের ছুটিসহ ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সময় পাবে শিক্ষার্থীরা।

এর আগে মঙ্গলবার (৭ মার্চ) সকাল থেকেই  শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এতে করে একাডেমিক ভবনে বিভাগীয় শিক্ষকগণ ও প্রশাসনিক ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সহ ভবনের মধ্যে থাকা সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে যান। ২য় দিনের আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়ে ৩২ একরের ক্যাম্পাস। কর্মকর্তা, কর্মচারী সহ শিক্ষকবৃন্দের যারা যথাসময়ে উপস্থিত হতে পারেনি তাদের অনেককেই বাহিরে অবস্থান করতে হয়েছে। তখন অবরুদ্ধ ভবনগুলোর চারপাশে অবস্থান নিয়েছিল শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, ৬ মাসের সেমিস্টার ৫ মাসেই শেষ করতে চায় প্রশাসন। খেলাধুলা, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রোগ্রামের কারণে এই ৫ মাসে সিলেবাসও পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি। অনেকের প্রস্তুতিরও ঘাটতি রয়েছে। এরই মধ্যে সামনে রমজান। রোজা রেখে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া ও পরীক্ষা দেওয়া কষ্টসাধ্য। 

প্রথমে পরীক্ষা না পেছানোর কারণ হিসেবে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আবু হারেজ জানান, এতে অনেক শিক্ষার্থীর সমস্যা হবে। করোনার সময় যে গ্যাপ টা পড়ে গেছে সেটার কারণেই এমনটা করা। শিক্ষার্থীরা ঈদের বন্ধের পর ক্যাম্পাস খোলার পরেরদিনই পরীক্ষা দিতে রাজি, তবে অনেক শিক্ষার্থী দূরদূরান্ত থেকে আসবে। যার কারণে এপ্রিলের ৩০ তারিখ পরীক্ষা নিচ্ছি কিন্তু ঈদের আগে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা নেয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ভালোর জন্যই ২৯ মার্চ পরীক্ষা নিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা পিছিয়ে লাভবান হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ভেটেরিনারি ও ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাদের ভাষ্যমতে, তাদের ব্যবহারিক পরীক্ষার চাপ লিখিত পরীক্ষা থেকে কোনো অংশে কম নয়। রমজান মাসে রোজা রেখে ব্যবহারিক পরীক্ষা দেওয়াটা খুবই কষ্টসাধ্য হবে বলে মন্তব্য করেছে তারা।

এদিকে অর্থ ও হিসাব বিভাগ থেকে জানা যায়, সেমিস্টার ফি জমা দেয়ার শেষ তারিখ ১৫ই মার্চই থাকবে। ফরমপূরণ সহ যাবতীয় সবকিছু ঈদের আগেই সম্পন্ন করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ৫ মার্চ এপ্রিল-২০২৩ সেমিষ্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরুর বিজ্ঞপ্তি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেখানে ২৯ মার্চ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করলে বাঁধে বিপত্তি। এরই প্রেক্ষিতে গতদিন স্মারকলিপিসহ আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। এতে করে এক সপ্তাহে পরীক্ষা পিছায় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। এই সিদ্ধান্তও মানতে নারাজ শিক্ষার্থীরা। তারা রমজানে নয় একেবারে ঈদের পরই পরীক্ষা দিবে বলে অনড় শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে গেলে প্রশাসন থেকে এই সিদ্ধান্ত আসে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence