আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর: আহত ১০
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৪ PM , আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৪ PM

ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় উভয় পক্ষের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয় এবং এক আওয়ামী লীগ সমর্থকের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হন, যাদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মুরুটিয়া গ্রামে এ সংঘর্ষ হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামটিতে দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলছে। এক পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহসভাপতি হারুন মিয়ার ছেলে মিন্টু মিয়া, অপর পক্ষের নেতৃত্বে আছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আফছার মাতুব্বরের সমর্থক বেলায়েত মোল্লা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বৃহস্পতিবার দুপুরে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে আওয়ামী লীগ সমর্থক আজিজুল শেখ (৪০)-কে প্রতিপক্ষের লোকজন কুপিয়ে জখম করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার জেরে বিকেলে দেশীয় অস্ত্রসহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও হামলা চলতে থাকে, এতে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এছাড়া আওয়ামী লীগ সমর্থক কৃষক কবির শেখের বসতঘরে আগুন দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করে।
বেলায়েত মোল্লা অভিযোগ করেন, "সরকার পতনের পর থেকে বিএনপি নেতা হারুন মিয়ার ছেলে মিন্টু মিয়া এলাকায় চাঁদাবাজি করছে। আমাদের সমর্থক আজিজুল শেখ সম্প্রতি মালয়েশিয়া থেকে অসুস্থ হয়ে ফিরেছেন। মিন্টু মিয়ার লোকজন তার কাছে চাঁদা দাবি করে। টাকা কম দেওয়ায় তাকে কুপিয়ে আহত করা হয়। এরপর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।"
তিনি আরও বলেন, "বিএনপির লোকজন আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ১০ থেকে ১২টি বাড়ি ভাঙচুর করেছে এবং আমাদের এক সমর্থকের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।"
অন্যদিকে মিন্টু মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "এই সংঘর্ষ পেঁয়াজ তোলার শ্রমিক সরবরাহের বিরোধ থেকে ঘটেছে। চাঁদার কোনো বিষয় এখানে নেই।" তিনি আরও দাবি করেন, "সংঘর্ষের সময় আওয়ামী লীগের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে আমার সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে এবং আমাদের অনেককে আহত করেছে।"
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, "পূর্ববিরোধের জেরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় বেশ কিছু বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে এবং কয়েকটি খড়ের গাদায় আগুন দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে নতুন করে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।"