করিডোরের বিষয়ে সরকার কিছু একটা লুকাতে চাচ্ছে: স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি

স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি
স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি  © লোগো

মায়ানমারের রাখাইনে মানবিক করিডোর, চ্যানেল কিংবা ভিন্ন নামে কিছু দেয়ার ব্যাপারে সরকার কিছু একটা লুকাতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কাজ করা সংগঠন স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি। আজ বুধবার (৭ মে) সংগঠনটির আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক ও যুগ্ম আহ্বায়ক মুহিউদ্দিন রাহাত স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ করা হয়।

স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি বলছে, কখনো মানবিক করিডোর, কখনো প্যাসেজ কখনো বা চ্যানেল; আবার কখনো বলা হচ্ছে করিডোর দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে, কখনও বলা হচ্ছে সিদ্ধান্ত হয়নি, আবার কেউ বলছে আলোচনা হয়েছে, কেউ বলছে আলোচনা হয়নি- অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা, রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেনটেটিভ কিংবা প্রেস সচিব, তাদের একেক জনের একেক রকম মন্তব্য গণমাধ্যমে আসছে। সরকারের দায়িত্বশীল কর্তা ব্যক্তিদের এমন অস্পষ্ট বক্তব্যে জনগণের মধ্যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে! 

আরও পড়ুন: ৬৫ বছর পর বাবার মাস্টার্সের ফলাফল খুঁজে পেলেন ছেলে ঢাবি উপাচার্য

বিবৃতিতে বলা হয়, করিডোর কিংবা চ্যানেলের মত দেশের সার্বভৌমত্বের সাথে সম্পর্কিত একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের এমন অস্পষ্ট, তথ্য লুকানো বা ধোঁয়াশাযুক্ত বক্তব্যে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি। পাশাপাশি আমরা রাখাইনে করিডোর, চ্যানেল কিংবা ভিন্ন নামে অনুরূপ কিছু দেয়া বা না দেয়ার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সাথে বাংলাদেশের কাছে রাখাইনের কেউ মানবিক সহায়তা চেয়েছে কিনা, চাইলে তারা কারা- আরাকান আর্মি নাকি রোহিঙ্গা, নাকি বাইরের কেউ করিডোর বা চ্যানেল দিতে চাপ দিচ্ছে, এতে বাংলাদেশের স্বার্থ কী, রোহিঙ্গাদের স্বার্থ কী সরকারকে সেটিও স্পষ্ট করতে হবে। 

করিডোর দেয়ার পরিণামের ব্যাপারে জানিয়ে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি তাদের বিবৃতিতে উল্লেখ করে, করিডোর দিলে প্রথমত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বগত ঝুঁকি তৈরি হবে; দ্বিতীয়ত গণহত্যাকারী আরাকান আর্মিকে সহায়তা ও শক্তিশালী করা হবে। ফলে তারা রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর আরো গণহত্যা চালানোর সুযোগ পাবে; তৃতীয়ত বাংলাদেশকে বিভিন্ন পরাশক্তি, বিশেষ করে আমেরিকা-চীন দ্বন্দ্বের বলির পাঠা বানানো হবে, এবং একই সাথে করিডোর বা চ্যানেল ইস্যুটিকে আমরা আমেরিকার ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজির অংশ হিসেবেই দেখছি। যেখানে বাংলাদেশকে যোগদান করতে আমেরিকা দীর্ঘদিন যাবৎ চাপ প্রয়োগ করে আসছে। এ ব্যাপারে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর গত ১০ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর দিল্লী হয়ে ঢাকা সফরকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ যাতে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজির অংশ না হয় সেজন্য গত ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি একটি বিবৃতি প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্কও করেছিল। 

আরও পড়ুন: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়েছেন শিক্ষার্থীরা

স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি জোর দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে আরও জানায়, রোহিঙ্গাদের স্থায়ী ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হলে সেটা এমনভাবে করতে হবে যাতে রোহিঙ্গারা নিজেরাই নিজেদের সমস্যার সমাধান করতে পারে, নিজেদের ভূখণ্ড নিজেরাই উদ্ধার করে রাখাইনে ফিরে যেতে পারে এবং সেখানে স্থায়ী হতে পারে। এজন্য রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে হবে রোহিঙ্গাদের সামনে রেখে রোহিঙ্গাদের মাধ্যমেই। কোনো বিদেশি রাষ্ট্র কিংবা বিদেশি সংস্থার স্বার্থে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করা যাবে না। রোহিঙ্গাদের টেকসই নিরাপত্তা, নাগরিকত্ব ও মৌলিক-মানবাধিকারসহ তাদের নিজ ভূমি রাখাইনে ফিরিয়ে দিতে রোহিঙ্গা নেতৃত্ব তৈরি এবং কূটনৈতিক, সামরিক, অর্থনৈতিকসহ সবদিক দিয়ে রোহিঙ্গাদের সক্ষম করে তোলা জরুরি। রোহিঙ্গাদের আত্মরক্ষা ও বদলা নেবার অধিকারের ভিত্তিতে লাখ’খানেক রোহিঙ্গা তরুন-যুবককে বাছাই করে তাদেরকে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে রাখাইনে পাঠাতে হবে তাদের নিজেদের ভূমি পুনরুদ্ধার করতে। এই অধিকারগুলো আন্তর্জাতিক আইন সম্মত। পাশাপাশি স্থায়ী ও টেকসই সমাধানকল্পে রাখাইন রাজ্যকে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ও রোহিঙ্গা শাসিত অঞ্চল (রোহিঙ্গা ডোমিন্যান্ট স্টেট) হিসেবে গড়ে তুলতে সামরিক সহায়তা থেকে শুরু করে যা যা করা দরকার তার সবটাই করতে হবে।  

বিবৃতিতে বিবৃতিতে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি অন্তর্বর্তী সরকারকে অতিদ্রুত উপরোক্ত ব্যবস্থাপনা হাতে নেয়ার জোর আহ্বান জানায়। এর বিপরীতে দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে এমন কোনো করিডোর, চ্যানেল কিংবা ভিন্ন নামে কিছু করার চেষ্টা করা হলে দেশপ্রেমিক জনগণকে সাথে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে মর্মে সরকারকে সতর্ক করে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence