করিডোরে হাঁটার দৃশ্য সিসি ক্যামেরায়, কিছুক্ষণ পর মৃত্যু স্কুলছাত্রের

ছয়তলা থেকে পড়ে মারা যাওয়া দশম শ্রেণির ছাত্র শেখ শান
ছয়তলা থেকে পড়ে মারা যাওয়া দশম শ্রেণির ছাত্র শেখ শান  © আনন্দবাজার

স্কুলের ছয়তলায় সংস্কারের কাজ চলছিল। বারান্দায় গ্রিল বসানো হচ্ছে। শুক্রবার সেখান থেকেই ঝাঁপ দিয়েছে দশম শ্রেণির ছাত্র শেখ শান। সোমবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কসবার রথতলার সিলভার পয়েন্ট হাইস্কুলের এ মৃত্যুর ঘটনায় কর্তৃপক্ষের দাবিকে যদিও উড়িয়ে দিয়েছে পরিবার। তাদের দাবি, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করে পুলিশ জানিয়েছে, ওই ছাত্রকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল সোমবার দুপুরে।

তখন করিডোরে ছিল সে। তার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে নীচে মেলে তার রক্তাক্ত দেহ। ছাত্রের বাবা শেখ পাপ্পু স্কুলের প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং আরও দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কসবা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।

বাবা শেখ পাপ্পুর অভিযোগ, তাঁর ছেলেকে মারধর করেছেন শিক্ষকেরা। অনেক দিন আগেই তাকে চিহ্নিত করেছিল কর্তৃপক্ষ। কী কারণে তার কোনও ব্যাখ্যা পাপ্পু দেননি। তাঁর কথায়, পাঁচ তলা থেকে পড়লে হাড়গোড় ভাঙত ছেলের। সে সব কিছুই তো হয়নি।

স্কুল কর্তৃপক্ষ এ দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, কোনও স্কুলই তাদের শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে না। হেনস্থাও করে না। কোনও শিক্ষকই এমন আচরণ করে না।

সোমবার দুপুরে সিলভার পয়েন্ট হাইস্কুলে রক্তাক্ত অবস্থায় শানকে পাওয়া যায়। তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৬ বছরের ওই ছাত্রকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, ওপর থেকে পড়ে এই মৃত্যু হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্রের দেহের ময়নাতদন্ত হবে। এর মধ্যে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেছে শানের পরিবার। মৃত ছাত্রের বাবার কথায়, ওর কান থেকে রক্ত বেরোচ্ছিল। শরীরের হাড় ভাঙেনি। তা হলে কীভাবে উপর থেকে পড়ে মৃত্যু হল?

ছয়তলায় কেন গিয়েছিল শান, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তার কথায়, করোনার সময় বেতন বৃদ্ধির প্রতিবাদ করায় দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এক শিক্ষিকার নাম করে অভিযোগ করেন। পাশাপাশি দুই ছাত্রকে নিয়ে কয়েকজন শিক্ষিকা ছয়তলায় গিয়েছিলেন বলেও দাবি করেছেন পাপ্পু।

শিক্ষার্থীর এক আত্মীয়ের কথায়, শান ভদ্র ছেলে ছিল। পড়াশোনায় ভাল। বাবা এবং দিদার সঙ্গে থাকত। পারিবারিক কিছু কারণে ছেলেটির মা অন্যত্র থাকেন। বাবার কথায়, আমার ছেলের আজ দুটো প্রজেক্ট স্কুলে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। ও একটা প্রজেক্ট নিয়ে যায়। গোটা ক্লাসের সামনে ওকে বলা হয়, কান ধরো। হয়তো ওর মনে কোথাও দাগ পড়ে। আমাকে ফোনে বলা হয়েছিল যে, ও সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়েছে। পাপ্পু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ছেলের মৃত্যুর বিচার চেয়েছেন।

গত ৯ অগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ পাওয়া যায় হোস্টেলের নীচে। এ ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চলছে। এ বার স্কুলছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। খবর: আনন্দবাজার।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence