বিল মেটানোর টাকা নেই, নবজাতককে বিক্রি করে দিলেন দম্পতি
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:১৬ PM , আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৪:১৬ PM
করোনার মধ্যে স্থানীয় একটি হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দেন রিক্স চালক শিবচরণের স্ত্রী ৩৬ বছরের ববিতা। হাসপাতালের বিল হয় মোট ৩৫ হাজার টাকা। অত টাকা দেয়ার সাধ্য শিবচরণের নেই। তাঁর দাবি, তখন হাসপাতাল প্রস্তাব দেয়, এক লাখ টাকায় সাত দিনের ছেলেকে বিক্রি করে দিতে। সেটাই তাঁরা করেছেন। দোষীদের শাস্তি দেয়া হবে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের আগ্রায়।
এই দলিত দম্পতির অভিযোগের পর হইচই পড়ে যায়। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার কাছে জেলাশাসক প্রভু এন সিং বলেছেন, এটা রীতিমতো গুরুতর ঘটনা। তদন্ত হবে।
পুরসভার কাউন্সিলার হরি মোহন বলেছেন, তিনিও শুনেছেন, বিল দিতে না পেরে ছেলেকে বিক্রি করতে হয়েছে।
শিবচরণ ও ববিতার পাঁচ সন্তান। তাঁরা শম্ভু নগরে একটা ভাড়া বাড়িতে থাকেন। রিক্সা চালিয়ে দিনে একশ টাকার বেশি পান না। তাঁর ১৮ বছর বয়সী বড় ছেলে একটি জুতো তৈরির কারখানায় কাজ করত। লকডাউনের পর সেই কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। কোনো সরকারি আশা কর্মী তাঁদের কাছে যাননি। কোথায় গেলে বিনা পয়সায় চিকিৎসা পাওয়া যায়, সেটাও কেউ তাঁদের বলেনি।
শিবচরণ টিওআইকে বলেছেন, তাঁরা সরকারি বিমা বা আয়ুষ্মান ভারতে নথিভুক্তও নয়।
শিবচরণ বলেছেন, ববিতার গর্ভযন্ত্রণা শুরু হওয়ার পর তাঁরা হাসপাতালে যান। সিজারিয়ান হয়। কিন্তু তাঁদের কাছে বিল দেয়ার টাকা ছিল না। তাঁরা কেউ লেখাপড়া জানেন না। তাই যেখানে সই করতে বলা হয়েছে, সেখানে তাঁরা টিপছাপ দিয়েছেন। কিন্তু হাসপাতাল তাঁদের কোনো বিল বা কাগজ দেয়নি। এক লাখ টাকায় ছেলে বিক্রি করে তাঁরা চলে এসেছেন।
তথ্যাভিজ্ঞ মহলের দাবি, এইভাবে সদ্যোজাত শিশু পেলে কিছু দম্পতি টাকা দিয়ে দত্তক নেন। এই ধরনের ঘটনা তাই চালু আছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য পুরো ঘটনা অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, কেউ কোনো জোর করেনি। শিবচরণই বাচ্চাকে স্বেচ্ছায় ফেলে রেখে চলে গেছে। এ নিয়ে হাসপাতাল এবং শিবচরণ ও ববিতার মধ্যে লিখিত চুক্তি হয়েছে।
ববিতা এখন ছেলে ফেরত চান। তিনি বলেছেন, তাঁর কিছু টাকা দরকার। কিন্তু প্রশ্ন হলো, গর্ভবতীদের জন্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প আছে। স্থানীয় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তাঁদের কাছে এই সাহায্য পৌঁছে দেয়। সে সব কিছুই কেন করা হলো না? [সূত্র: ডয়চে ভেলে]