পাঠ্যবই থেকে প্রথম শিক্ষামন্ত্রীর নাম বাদ দিল ভারত
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:২৪ PM , আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:২৪ PM
ভারতের পাঠ্যবই থেকে দেশটির প্রথম শিক্ষামন্ত্রী মৌলানা আবুল কালাম আজাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। দিল্লি বোর্ডের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষাবর্ষে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের যে বই দেওয়া হয়েছে, তাতে কোথাও নেই আজাদের নাম। -খবর আনন্দবাজার পত্রিকার
জানা গেছে, ওই বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে ‘সংবিধান— কেন এবং কীভাবে’ শীর্ষক পর্বের শুরুতেই লেখা থাকত সংবিধান সভার বিভিন্ন সমিতির বৈঠকে সচরাচর উপস্থিত থাকতেন জহরলাল নেহরু, রাজেন্দ্র প্রসাদ, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ এবং বিআর অম্বেদকর।
কিন্তু পরিমার্জিত সংস্করণে সবার নাম থাকলেও নেই আজাদের নাম। এমনকি ওই বইয়ের অন্য একটা অংশে কাশ্মীরের ভারতভুক্তির শর্ত হিসাবে যে রাজ্যটির স্ব-শাসন মেনে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, তা-ও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
যদিও এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশন এন্ড ট্রেইনিংয়ের (এনসিইআরটি) কর্তৃপক্ষের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি এনসিইআরটির পাঠ্যবই থেকে মোগল ইতিহাস এবং গান্ধীহত্যার প্রসঙ্গ বাদ দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য মহাত্মা গান্ধীর প্রয়াসকে অনেক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন যে ভালোভাবে নেয়নি, সেই অংশটিও বাদ গেছে।
যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অতিমারিকালে শিক্ষার্থীদের উপর অতিরিক্ত চাপ কমাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইতিহাসবিদদের একাংশ। শিক্ষার্থীদের বিকৃত ইতিহাস পড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে, এই অভিযোগেও সরব হয়েছেন তারা।
এই প্রসঙ্গে ‘দি হিন্দু’কে ঐতিহাসিক ইরফান হাবিব বলেন, “স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে আজাদ বিনামূল্যে দেশের সব শিক্ষার্থীকে পড়াশোনার সুযোগ করে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন। গণপরিষদ বা সংবিধান সভার একাধিক আলোচনাতেও গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন আজাদ। তাই পাঠ্যবই থেকে তার নাম বাদ পড়াটা দুর্ভাগ্যজনক।”
মৌলানা আজাদ ইসলামি ধর্মশাস্ত্রে সুপণ্ডিত ছিলেন। তরুণ বয়সে তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির প্রবক্তা ছিলেন এবং দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত বিভাগের বিরোধিতা করেছিলেন। এমনকি নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রে সামরিক শাসন ও পাকিস্তান ভাগ সম্পর্কেও তিনি ভবিষ্যতবাণী করে গিয়েছিলেন।
১৯৯২ সালে তাকে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান ভারতরত্নে (মরণোত্তর) ভূষিত করা হয়। স্বাধীন ভারতে শিক্ষাবিস্তারে তার উজ্জ্বল ভূমিকার কথা স্মরণে রেখে তার জন্মদিনটি সারা দেশে ‘জাতীয় শিক্ষা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।