শতাধিক নারীকে ধর্ষণ-ভিডিও ধারণ, জিলাপি বাবার ১৪ বছর জেল

এক সময়ে জিলিপি বিক্রি করতেন। তীব্র অর্থকষ্ট ছিল। এক তান্ত্রিকের সাক্ষাতে আচমকাই তন্ত্রসাধনায় দীক্ষা নেন। তার পর এক দিন হয়ে উঠেন স্বঘোষিত গুরু। তৈরি করেন মন্দির। সেখানেই চলত ধর্ষণ।

অভিযোগ, অন্তত ১০০ জন নারীকে ধর্ষণ করেছেন তিনি। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে পরে ব্লাকমেইলও করেছেন। আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত সেই জিলাপি বাবা ওরফে বিল্লু ওরফে অমরবীর। ভারতের ফতেহাবাদের অতিরিক্ত জেলা বিচারক বিল্লু ওরফে অমরবীরকে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।

এর আগে ২০১৯ সালের ১৯ জুলাই হরিয়ানার তোহানা পুলিশ গ্রেফতার করে জিলাপি বাবাকে। ওই সময় ধর্ষণের একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছিল তাঁর। এর পরেই গ্রেফতার। তদন্তে নেমে এ রকম আরও ১২০টি ভিডিওর খোঁজ পায় তোহানা পুলিশ। ভিডিওগুলো নিজের মোবাইলে করেছিলেন এই ভণ্ড তান্ত্রিক। সেই প্রমাণও পেয়েছে পুলিশ।  

৬৩ বছরের জিলাপি বাবার আসল নাম অমরবীর ওরফে অমরপুরী। পঞ্জাবের মানসা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। চার মেয়ে এবং দুই ছেলে রয়েছে তার। স্ত্রী মারা গিয়েছিলেন অনেক বছর আগে। ২৩ বছর আগে মানসা থেকে হরিয়ানার ফতেহাবাদের তোহানা গ্রামে চলে আসেন তিনি। সেখানে জিলাপি বিক্রি করতেন। তোহানায় এসে প্রথম ১৩ বছর সেই কাজটাই করেছিলেন অমরবীর। সে ভাবেই সংসার চালাতেন।  

কয়েক বছরের জন্য অমরপুরী তোহানা থেকে নিখোঁজ হয়ে যান অমরপুরী। এরপর ফিরে এসে একটি বাড়ি তৈরি করেন। সঙ্গে লাগোয়া মন্দির। সেই মন্দিরে ধীরে ধীরে ভক্ত সমাগম হতে থাকে। বেশির ভাগই ছিলেন মহিলা। জিলাপি বাবা নামে পরিচিত হন তিনি।

বলা হত, জিলিপি বাবার উপর শক্তির ভর হয়। তখন তিনি অনেক অজানা কথা বলেন। সেই শুনতেই হাজির হতেন মহিলারা। সেই সুযোগে মহিলা ভক্তদের মাদক খাইয়ে ধর্ষণ করতেন অমরপুরী ওরফে জিলিপি বাবা। সেই ঘটনার ভিডিও তুলে রাখতেন। সেই ভিডিও দেখিয়েই পরে ব্ল্যাকমেল করতেন নির্যাতিতাদের। তার পর চলত লাগাতার ধর্ষণ।

২০১৮ সালে এক মহিলা অভিযোগ করেন, মন্দিরের ভিতর তাঁকে ধর্ষণ করেছেন জিলাপি বাবা। তার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেফতার করে অমরপুরীকে। যদিও ওই মামলায় পরে জামিন পেয়ে যান তিনি। নির্যাতিতা ছিলেন অমরপুরীর এক পরিচিতের স্ত্রী।

২০১৯ সালে একটি ধর্ষণের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর আবার তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার মন্দিরে তল্লাশি চালিয়ে যৌন উত্তেজক ওষুধ, ধর্ষণের ভিডিওর হদিস পায় পুলিশ।  তোহানার ভাটিয়া নগরে ছিল অমরপুরীর মন্দির। স্থানীয়রা অনেক দিন আগেই টের পেয়েছিলেন তাঁর কীর্তি। তাতে অমরপুরীর কোনও সমস্যা হয়নি। অন্য শহর, রাজ্য থেকে তখন আসতে থাকেন মহিলা ভক্তরা। তাঁদের উপরও চলতে থাকে ধর্ষণ।

২০১৯ সালের জুলাই থেকে হাজতে আছেন জিলাপি বাবা। দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) আদালত তাঁকে ১৪ বছর কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে।

সুত্র: আনন্দবাজার


সর্বশেষ সংবাদ