‘বিএনপির আমলে জিয়া চেয়ারের প্রস্তাব দেন শাবিপ্রবি ভিসি’
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ০৭:০০ PM , আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ০৭:০০ PM
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনায় উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে শিক্ষার্থীরা। তারা বর্তমান উপাচার্যকে বরখাস্ত করে নতুন উপাচার্য নিয়োগ চেয়ে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করছেন। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্দোলনরতদের দুষেছেন উপাচার্য।
এদিকে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদকে নিয়ে নতুন তথ্য দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন।
তিনি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এক অনন্য ভিসি। বিএনপি যখন ক্ষমতায় তখন তিনি বিএনপি পন্থী সাদা দল করতেন। শুনেছি তিনি বিএনপি আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জিয়া চেয়ার করার প্রস্তাবক। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে আওয়ামী পন্থী নীল দলে যোগ দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন হন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হন।
প্রশ্নপত্র ফাঁসে উপাচার্যের সম্পৃক্ততার কথা অনেকে বলেন বলে উল্লেখ করে তিনি লিখেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসে উনার সম্পৃক্ততা আছে বলে কেউ কেউ বলে। উনি গার্মেন্টস ব্যবসায়ীও। ডক্টরেটও নাই এই অধ্যাপকের। এত কিছুর পরেও তিনি শুধু বহাল তবিয়তেই নেই তিনি দ্বিতীয়বার নিয়োগও পেয়েছেন। এই পর্যন্ত দেখা গেছে সেই ভিসিরাই একাধারে দ্বিতীয়বার ভিসি হয়েছেন যারা দলান্ধতা এবং ধান্দাবাজিতে সরকারের মন জয় করতে পেরেছেন। আর যারা দ্বিতীয়বার ভিসি হয়েছেন তারা প্রথমবারের চেয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে অধিকতর খারাপ কাজ করেছেন।
আরো পড়ুনঃ ‘ভিসি-প্রভোস্ট পদগুলো এতোই লোভনীয় যে শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করতেও তারা দ্বিধা করে না’
উপাচার্যের শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রসঙ্গে তিনি লিখেন, তিনি সিম্পল মাস্টার্স পাস। এই ডিগ্রি দিয়ে বড়জোর একটি কলেজের শিক্ষক হওয়া যায়। অথচ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হয়েছেন, ডিন হয়েছেন, ভিসি হয়েছেন, সফল গার্মেন্টস ব্যবসায়ী হয়েছেন। এই সফল ব্যক্তি ভিসি হিসাবে এই মেয়াদ শেষ করার পর ‘সফল হওয়ার গোপন সূত্র’ শিরোনামে একটা গাইড বই লিখতে পারেন। উনি একা না। শুধু মাস্টার্স পাশ দিয়ে একাধিক শিক্ষক ইউজিসির চেয়ারম্যান, সদস্য পর্যন্ত হয়েছেন। যারা এই ধরনের মানুষদের এই সব একাডেমিক পদ দেন সেই নিয়োগকর্তাদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন জাগে। তারা কি চায় আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মানসম্মত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ সুন্দর করে গড়ে তুলুক?’
উল্লেখ্য, গতকাল রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অবরুদ্ধ শাবিপ্রবি উপাচার্যকে মুক্ত করতে পুলিশ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড হামলা চালায়। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত ও একজন শিক্ষক গুলিবিদ্ধ হন। এই পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় প্রশাসন।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এদিকে ক্যাম্পাসের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর সার্বিক তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।