এনসিটিবিকে মন্ত্রণালয়মুক্ত আলাদা স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন
অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন  © ফাইল ছবি

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড সংক্ষেপে যাকে এনসিটিবি বলে, তাকে যত শিগগিরই সম্ভব মন্ত্রণালয়মুক্ত একটা আলাদা স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। বিমান, রেল, টেলিটক, ব্যাংক, বীমা, চিনিকল, পাটকল ইত্যাদি কোনো কিছু কি মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সফল হয়েছে? এমন একটি উদাহরণ দিতে পারবেন না, যা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থেকে সফল হয়েছে। এমনকি ভোট ডাকাতির নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি যারা সহায়তা করেছে, সেটিও হলো মন্ত্রণালয়। বিশ্ব ডাটা ড্রিভেন। গত ৩০-৪০ বছরের ডাটা দেখুন তারপর সিদ্ধান্ত নিন।

মন্ত্রণালয় এসব প্রতিষ্ঠানকে দেখে এসেছে সোনার ডিম পাড়া রাজঁহাস হিসেবে। এনসিটিবিতে আমার খুবই স্বল্প সময় থাকার সুযোগে আমি বুঝে গিয়েছিলাম, এটি পুরোপুরি এক বা একাধিক মাফিয়া গোষ্ঠীর অধীনে। যারাই এখানে ভালো কিছু করতে যাবে তারাই এর রোষানলে পড়বে এবং মান-সম্মান- এমনকি জীবনও হুমকির মধ্যে ফেলে দেবে। এদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উপর কোন ভালোবাসা নেই। ভালোবাসা আছে কেবল টাকার প্রতি। 

টেক্সট বই লেখা, ছাপানো, কাগজ ইত্যাদি নানা কাজের সাথে এনসিটিবির কর্তা ব্যক্তিরা জড়িত থাকেন। বিনামূল্যে বই দেওয়ার প্রজেক্ট একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ। এই বিশাল কর্মযজ্ঞকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এক মাফিয়া চক্র। বই লেখায় বা ছাপানো কিংবা কাগজে দামের কোন সিদ্ধান্ত যদি মাফিয়ার স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়, তাহলেই টের পাবেন। এরা সাংবাদিকদের দিয়ে মিথ্যায় রিপোর্ট লেখাবে, কোনো মহলকে দিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে একটা ভয় বা ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করবে। 

আরো পড়ুন: শাহবাগ ব্লকেড থেকে সরে এসে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা ৩০ কলেজ শিক্ষার্থীদের

তাই টেক্সট বুক বোর্ডের কাজের সাথে তাদেরকেই জড়িত করা উচিত, যাদের দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি ও দেশের শিক্ষার প্রতি দরদ ও কমিটমেন্ট আছে। বর্তমানে এনসিটিবি কীভাবে চলে? মন্ত্রণালয়ের কিছু লোক থাকে, বিসিএস কলেজ শিক্ষকদের থেকে কিছু শিক্ষককে পেষণে আনে। প্রশ্ন হলো, কাদেরকে আনে? যখন যেই সরকার ক্ষমতায়, সেই সরকারের আজ্ঞাবহ কিছু শিক্ষককে আনে। তেমনিভাবে মন্ত্রী আমলারাও এখানে এমন সব কর্মকর্তাদের আনে, যাদের প্রায় সবাই ধান্দাবাজ। 

এমন লোক দিয়ে কীভাবে আপনি টেক্সট বই লেখা, ছাপানো ও বিতরণের মতো এত বড় কাজটি সফলভাবে করবেন? এই চক্রের কারণে কোনো মন্ত্রী বা কোনো একজন আমলা ভালো কাজ করতে চাইলে তার জীবনকে কঠিন করে তুলবে। তাই বর্তমান শিক্ষা উপদেষ্টাসহ সব উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, এটিকে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করে উচ্চ শিক্ষিত, যোগ্য ও নিবেদিত মানুষদের নিয়োগ দিয়ে কাজটি করান। 

শুধু এনসিটিবি না। বিমান, রেল, টেলিটক, ব্যাংক, বীমা, চিনিকল, পাটকল ইত্যাদি সব কিছুকেই মন্ত্রণালয়মুক্ত করা উচিত। মন্ত্রণালয়তো কেবল সাচিবিক কাজ করার কথা। কিন্তু আমাদের দেশে প্রশাসন বা আমলারা বিশেষায়িত কাজের নীতি নির্ধারণেও ঢুকে যায়।

লেখক: অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
(ফেসবুক থেকে নেওয়া


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence