গ্রন্থাগার প্রভাষক ও শিক্ষকদের স্বপদে স্বগ্রেডে আত্তীকরণের দাবিতে মানববন্ধন

মানববন্ধনে বাংলাদেশ সরকারি কলেজ গ্রন্থাগার পেশাজীবী পরিষদ
মানববন্ধনে বাংলাদেশ সরকারি কলেজ গ্রন্থাগার পেশাজীবী পরিষদ  © সংগৃহীত

সদ্য জাতীয়করণ করা কলেজে অ্যাডহক নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন বেসরকারি আমলে কর্মরত গ্রন্থাগার প্রভাষক ও সহকারী শিক্ষক (গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান) শিক্ষকদের ৯ম ও ১০ম গ্রেডে আত্তীকরণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ সরকারি কলেজ গ্রন্থাগার পেশাজীবী পরিষদ। আগামী এক মাসের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে আমরণ অনশনসহ নানা কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সরকারি কলেজ গ্রন্থাগার পেশাজীবী পরিষদ এ দাবি জানায়।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ সরকারি কলেজ গ্রন্থাগার পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি আবুল কালাম মোহাম্মদ ফরহাদ বলেন, আমরা সদ্য জাতীয়করণ করা কলেজে বেসরকারি আমলে (এমপিওভুক্ত) গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিকরা যথাক্রমে ৯ম ও ১০ম গ্রেডে যোগদান করে অনেকে টাইমস্কেল পেয়ে ৯ম, ৭ম এবং ৬ষ্ঠ গ্রেডে কর্মরত আছি।

ফরহাদ বলেন, ২০২১ সালের ২৮ মার্চ জনবল কাঠামো এমপিও নীতিমালায় পদ দুটির নাম পরিবর্তন করে গ্রন্থাগার প্রভাষক ও সহকারী শিক্ষক (গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান) শিক্ষক হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করে। বর্তমানে এমপিও সিটে শিক্ষক হিসাবে এবং নির্ধারিত বেতন গ্রেড বিদ্যমান রয়েছে। জাতীয়করণ করা কলেজে আত্তীকরণ বিধিমালা ২০১৮ অনুযায়ী বেসরকারি আমলে (এমপিওভুক্ত) কর্মরত শিক্ষক কর্মচারীদের ক্ষেত্রে স্ব পদে স্ব গ্রেডে পদ সৃজন করে অ্যাডহক নিয়োগ প্রদান প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আরও পড়ুন: রুম সংকট কাটলেও অনিশ্চিত ১৭তম নিবন্ধন পরীক্ষা 

তিনি বলেন, শুধু গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিক পদ দুটির ক্ষেত্রে কাম্যযোগ্যতা থাকার পরও গ্রেড অবনমন করে গ্রন্থাগারিক ৯ম গ্রেডের পরিবর্তে ১০ম গ্রেড এবং সহকারী গ্রন্থাগারিকদের ১০ম গ্রেডের পরিবর্তে ১৪তম গ্রেড প্রদান করা হচ্ছে। যা বেসরকারি আমলে যোগদান করা পদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যার ফলে সরকারি হলেও বেতন ভাতা বেসরকারি আমলে প্রাপ্ত বেতনের অর্ধেকে নেমে আসে। বাংলাদেশ তথা পৃথিবীর কোথাও এমন নজির নেই।

তিনি আরও বলেন, গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিকরা ১০ থেকে ৩০ বছর কর্মরত থাকার পরও পদ সৃজন করে যোগদান করা গ্রেডও বহাল রাখা হচ্ছে না। এমনকি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও অর্থ মন্ত্রণালয় কোনো বিধি ছাড়া আত্তীকরণে আমাদের ওপর অবিচার করছে। এতে আমরা আর্থিক, সামাজিক ও মানসিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।

গ্রন্থাগার পেশাজীবী পরিষদের এই সভাপতি আরও বলেন, জাতীয়করণ করা কলেজগুলোর গ্রন্থাগার পেশাজীবীদের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক সুপারিশ করা ও সম্মতি প্রদান করা ৯ম গ্রেড ও ১০ম গ্রেডের ব্যাপারে অসম্মতি প্রদান করায় আমরা গ্রন্থাগার পেশাজীবীরা হতাশ এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।

বাংলাদেশ সরকারি কলেজ গ্রন্থাগার পেশাজীবী পরিষদের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। তাদের দাবিগুলো হলো— 

১. সদ্য জাতীয়করণ করা কলেজে কর্মরত গ্রন্থাগার প্রভাষক ও সহকারী শিক্ষকদের স্ব পদে স্ব গ্রেডে যথাক্রমে ৯ম ও ১০ম গ্রেডে আত্তীকরণ করতে হবে।

২. আত্তীকরণ বিধিমালা ২০১৮ মোতাবেক সরকারি কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের অনুরূপ পদ সৃজন করে অ্যাডহক নিয়োগ প্রদান করতে হবে।

৩. বেসরকারি আমলে এমপিওভুক্ত বিধি মোতাবেক কাম্যযোগ্যতাধারীদের অ্যাডহক নিয়োগ দেওয়ার পর সিলেকশন গ্রেড প্রদান করতে হবে।

৪. সহকারী শিক্ষকদের কাম্যযোগ্যতা সাপেক্ষে প্রমোশন দিয়ে গ্রন্থাগার প্রভাষক করতে হবে। জাতীয়করণ করা কলেজে কাম্যযোগ্যতা থাকলে নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে পদ পূরণ করতে হবে।

৫. গ্রন্থাগার আইন প্রণয়ন করা এবং সব গ্রন্থাগারে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে হবে।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারি কলেজ গ্রন্থাগার পেশাজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রমজান আলী, মোস্তাফিজুর রহমান, প্রকাশ চন্দ্র সরকার, হুমায়ুন কবির, আব্দুল হান্নান, গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।

 


সর্বশেষ সংবাদ