ফেনসিডিল আমদানির অনুমতি চাইলেন আওয়ামী লীগ নেতা
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২২, ০৪:৫৪ PM , আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২২, ০৫:০৪ PM
ভারত থেকে ফেনসিডিল আনার অনুমতি চেয়েছেন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক ও সরপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম প্রধান।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে সোমবার আদিতমারী থানা আয়োজিত ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠানের। অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ভারতে মাত্র ৩৫ টাকায় ফেনসিডিল কেনা যায়। সেই বোতল ৭০ ট্যাক্স নিয়ে ১০০ টাকায় বিক্রি করলেও ব্যবসা হবে, রাজস্ব বাড়বে সরকারের। তাই ফেনসিডিল আমদানি করে রাজস্ব বাড়াতে বঙ্গবন্ধু কন্যার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, আমি নিজেও এক বোতল ফেনসিডিল খেয়েছি। ফেনসিডিল খেলে ঘুম ছাড়া আর কিছুই হয় না।
এদিকে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপারের সামনে ফেনসিডিল খাওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে বেশ সমালোচিত হচ্ছেন আওয়ামী লীগ এই নেতা।
ভিডিওতে আজিজুল ইসলামকে বলতে দেখা যায়, সত্য বলব, তাতে জেল-ফাঁসি যা হয় হোক। ভারতে ফেনসিডিল মাত্র ৩৫ টাকা। এ ফেনসিডিলের জন্য দৈনিক হাজার হাজার কোটি টাকা ভারতে পাচার হচ্ছে। আমার তিন ছেলে মাস্টার্স পাস করেছে। তাদেরকে নিষেধ করলেও শোনে না। গোপন জিনিসের প্রতি আরও বেশি আগ্রহী হয়ে তারা ফেনসিডিল খাচ্ছে। ভারতে গিয়ে আমি নিজেও এক বোতল ফেনসিডিল খেয়েছি, ঘুম ছাড়া কিছু হয় না। এ ছাড়া ভারতে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছি, দেশের তুস্কা সিরাপের মতোই ফেনসিডিল। যা খেলে ঘুম ছাড়া আর কিছু হয় না।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টা বঙ্গবন্ধু কন্যার নজরে আনা যায় কি না? ভারত থেকে ৩৫ টাকায় ফেনসিডিল কিনে ৭০ টাকা ট্যাক্স নিয়ে ১০০ টাকায় বিক্রি করলেও ব্যবসা হবে, রাজস্ব বাড়বে সরকারের। তাই বিষয়টি নিয়ে উচ্চ মহলে আলোচনা করা দরকার বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।
আওয়ামী লীগ নেতার এমন বক্তব্য অনুষ্ঠানস্থলে সবাই অট্ট হাসিতে ফেটে পড়েন। এ সময় কৌশলে তার বক্তব্য থামিয়ে দেন আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোক্তারুল ইসলাম। এ ঘটনায় প্রধান অতিথি পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা হতভম্ব হয়ে পরেন।
আরও পড়ুন : রাতে হুমকি দিয়ে সকালে শিক্ষার্থীকে বের করে দিল ছাত্রলীগ
তবে আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক ও সরপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম প্রধান বিষয়টি মুঠোফোনে অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমি কথাগুলো ওইভাবে বলিনি। দেশ হাজার হাজার-কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। তাই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে বলেছি।
সারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির জানান, আদিতমারি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বর্তমান চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে সাবেক চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ করেছেন। সাবেক চেয়ারম্যানের সঙ্গে উনার সুসম্পর্ক। থানার কাউসার নামে একজন এসআই আছে, তিনিও ঘুষখোর। গরিব মানুষকে জিম্মি করে হয়রানি করছে। এ সবের প্রতিবাদ করায় ওসির সঙ্গে আমার সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। তাই তিনি আমাকে আমন্ত্রণ জানাননি।’
তিনি আরও বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান এ রকম একটি বক্তব্য রাখবেন সেটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। উনার প্রধানমন্ত্রীসহ পুরো জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।