থার্টি ফার্স্ট উদযাপনে যা যা করা যাবে না

থার্টি ফার্স্ট উদযাপন
থার্টি ফার্স্ট উদযাপন  © ফাইল ছবি

আজ রাতে অনুষ্ঠিত হবে ইংরেজি নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে বেশ কিছু নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। রাজধানীর বেশ কিছু এলাকায় বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের জন্য ডিএমপি’র পক্ষ থেকে পরামর্শ ও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ভোটে ফেল করলেও এসএসসি পাস করেছেন রবি

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে বিভিন্ন দেশে সকল ধরণের অনুষ্ঠান সীমিত আকারে পালন করা হচ্ছে। ইংরেজি নববর্ষ বরণ উপলক্ষে থার্টি ফার্স্ট নাইটে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে নির্ধারিত অনুষ্ঠানসমূহ উদ্যাপন করতে নগরবাসীদের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, উন্মুক্ত স্থানে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না। উৎসব উদযাপনের নামে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি নিজস্ব সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ঐতিহ্যবিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে থাকে। কতিপয় ব্যক্তি আনন্দের আতিশয্যে পট্কাবাজি, আতশবাজি, অশোভন আচরণ, বেপরোয়া গাড়ি ও মোটর সাইকেল চালানোর মাধ্যমে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা অথবা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটায় এবং ক্ষেত্র বিশেষে প্রকাশ্যে আপত্তিকর আচরণ করে থাকে। এ সকল নৈতিক মূল্যবোধ পরিপন্থী কর্মকান্ড একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে, অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়।

আরও পড়ুন: ঢাবির ক্যান্টিন বয় জাবেদ পেয়েছে জিপিএ-৫, হতে চান ডাক্তার

এমতাবস্থায় আগামী ৩১ ডিসেম্বর রাতে পট্কাবাজি, আতশবাজি, বেপরোয়া গাড়ি ও মোটর সাইকেল চালনাসহ যে কোন ধরণের অশোভন আচরণ এবং বেআইনী কার্যকলাপ হতে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানিয়ে বেশকিছু নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনকালে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির যে কোন ধরণের আশঙ্কা রোধকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বদ্ধপরিকর।

এছাড়াও ঢাকা মহানগরীতে নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে নিম্নোক্ত নির্দেশনাসমূহ মেনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হলো।

বিজ্ঞপ্তি আরও বলা হয়, ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায় এবং প্রকাশ্যে স্থানে কোন ধরণের জমায়েত অথবা সমাবেশ বা উৎসব করা যাবে না।

আরও পড়ুন: স্কুল শিক্ষিকার শয়ন কক্ষ থেকে যুবক আটক

উন্মুক্ত স্থানে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কোন ধরণের অনুষ্ঠান, সমাবেশ, নাচ, গান ও কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। কোথাও কোন ধরণের আতশবাজি বা পট্কা ফোটানো যাবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পরে বহিরাগত কোন ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। শুধুমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত যানবাহন পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে প্রবেশ করতে পারবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা অথবা কর্মচারীরা ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার মধ্যে স্ব-স্ব এলাকায় ফিরে আসতে হবে এবং পরে প্রবেশের ক্ষেত্রে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যেকে পরিচয়পত্র দেখাতে হবে।

গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় সেদিন রাত ৮টার পর বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবে না। তবে এসব এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দারা নির্ধারিত সময়ের পর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং দিয়ে পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে প্রবেশ করতে পারবে। একইভাবে উল্লেখিত সময়ে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় যেসব লোকজন বসবাস করেন না, তাদেরকে এসব এলাকায় যাতায়তের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হলো।

আরও পড়ুন: যে কলেজের সবাই পেয়েছেন ‘গোল্ডেন এ প্লাস’

হাতিরঝিল এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার টার পর থেকে কোন সমাবেশ অথবা অনুষ্ঠান করা যাবে না এবং কোন যানবাহন থামিয়ে অথবা পার্কিং করে কেউ অবস্থান করতে পারবেন না।

এছাড়া গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকার বাসিন্দারা ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার মধ্যে স্ব-স্ব এলাকায় ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করা হলো। ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার পর ঢাকা মহানগরীর কোন বার খোলা রাখা যাবে না। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে সীমিত আকারে আবাসিক হোটেলগুলোতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান করা যাবে।

৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা হতে ১ জানুয়ারি ভোর ৫ টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেঁস্তোরা, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে সকল প্রকার লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র বহন না করার জন্য সংশ্লিষ্ট নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ করা হলো।

ডিএমপি এসব নির্দেশনাপালনে ব্যর্থ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। রাজধানীর কিছু কিছু এলাকায় বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের জন্য ডিএমপি’র পক্ষ থেকে পরামর্শ ও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: আঙুল নেই, কব্জি দিয়ে লিখেই এসএসসি পাস মোবারক

৩১ ডিসেম্বর রাত ৮ট হতে পরদিন ১ জানুয়ারি ভোর ৫ টা পর্যন্ত গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় যানবাহনযোগে প্রবেশের জন্য কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে।

রাত ৮টা হতে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা-ফিনিক্স রোড ক্রসিং, বনানী ১১ নম্বর রোড ক্রসিং, চেয়ারম্যান বাড়ি ক্রসিং, ঢাকা গেট, শুটিং ক্লাব, বাড্ডা লিংক রোড, ডিওএইচএস বারিধারা-ইউনাইটেড হাসপাতাল ক্রসিং ও নতুন বাজার ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে না, তবে এসব এলাকা থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে।

আরও পড়ুন: টাকা না থাকলেও খাওয়া যায় আম জনতার হোটেলে

৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬ টা হতে পরদিন ১ জানুয়ারি ভোর ৫ টা পর্যন্ত পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা অথবা কর্মচারী ব্যতিত অন্য যেকোন ব্যক্তি বা যানবাহন কেবলমাত্র পুরনো হাইকোর্ট- দোয়েল চত্বর-শহীদ মিনার-জগন্নাথ হলের দক্ষিণ গেট-পলাশী মোড় দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। এসব এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে অন্যান্য সকল ক্রসিং বন্ধ থাকবে।

৩১ ডিসেম্বর রাত ৮ট হতে শাহবাগ, নীলক্ষেত ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং, বক্শী বাজার ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং এবং চাঁনখারপুল অথবা শহিদুল্লাহ হল ক্রসিং দিয়ে কোন প্রকার যানবাহন প্রবেশ করবে না বলেও জানানো হয়।

কেউ বেপরোয়া, মদ্যপ ও বিপজ্জনক অবস্থায় গাড়ি চালালে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ