‘হাতিয়ার হবেন না’, মাদ্রাসা ছাত্র-শিক্ষকদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী

  © টিডিসি ফটো

কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর রাজনৈতিক অভিলাষ চরিতার্থের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত না হতে মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

আজ রোববার (২৮ মার্চ) বিকেলে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ে তিনি এ আহ্বান জানান। মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ পরিচালক মীর আকরাম উদ্দীন আহম্মদের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস পালন না করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনকে অজুহাত বানিয়ে দেশ, রাষ্ট্র ও জনগণের সম্পত্তির ওপর আক্রমণ ও আগুন দিয়ে দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার পেছনে রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে। কোমলমতি শিশু-কিশোরদেরকে রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা, রাজনৈতিক হাঙ্গামার মধ্যে ঠেলে তাদের দিয়ে সরকারি সম্পত্তিতে আগুন দেয়া অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক, অগ্রহণযোগ্য এবং দুষ্কৃতিকারি মনোবৃত্তি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমি কওমী মাদ্রাসার সাথে যুক্ত সকলকে অনুরোধ জানাবো, যে সমস্ত ব্যক্তিবর্গ তাদের রাজনৈতিক অভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য আপনাদেরকে ব্যবহারের অপচেষ্টা করছে, ব্যবহার করছে, তাদেরকে বর্জন করুন, তাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবেন না এবং শিশু-কিশোরদেরকে ব্যবহার করবেন না।’

কওমী মাদ্রাসার কল্যাণে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার বহু কাজ করেছেন এবং ইসলামের খেদমতে তিনি যে সমস্ত কাজ করেছেন অতীতে তা কেউ করেনি উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে এই কওমী মাদ্রাসার স্বীকৃতি দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। প্রায় এক লাখ মসজিদে স্থাপিত মক্তবের আলেমদের প্রতিমাসে সাড়ে চার হাজার টাকা করে ভাতাও তিনি চালু করেছেন। সারাদেশে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পও তিনি বাস্তবায়ন করে চলেছেন এবং শুধু কওমী মাদ্রাসার স্বীকৃতি দিয়েই বঙ্গবন্ধুকন্যা ক্ষান্ত হননি বরং সেখান থেকে পাস করা অনেককে সরকারি চাকুরিও দিয়েছেন। এর আগে পঁচাত্তরের পরের অন্য সরকারগুলো তাদের পাশে বসিয়ে মুরগির কল্লা-মাছের মাথাই খাইয়েছেন, স্বীকৃতি দেননি।’

‘যারা নিজেদের আমিরকে হত্যা করার মতো অপকর্ম করে, তাদের হাতে ধর্ম, রাষ্ট্র কোনটাই নিরাপদ নয়’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমীর মওলানা আহমেদ শফীর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে যে, দলের হাঙ্গামাকারীরা মওলানা শফীর রাইস টিউব এবং অক্সিজেন টিউব খুলে নিয়েছিল এবং সেই কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।’

সম্প্রতি ২০ জন বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিবৃতিটি দেখেছি। যে ২০ জন বিবৃতি দিয়েছেন তাদেরকে বুদ্ধিজীবী বলতে আমার লজ্জা হচ্ছে। কারণ তাদের উচিত ছিল স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিন যারা ধর্মের নামে হাঙ্গামা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেয়া। কিন্তু তারা সেটি না করে সরকারি সম্পত্তিতে আগুন দেয়া, ভূমি অফিস, রেল স্টেশন জ্বালিয়ে দেয়া, থানা ও সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণকারীদের পক্ষ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এরপর তারা আর স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি বলে নিজেদের দাবি করতে পারেন না, টেলিভিশনের পর্দায় গিয়ে তারা সুশীল বলে দাবি করতে পারেন না, তারা উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সাথে মিশে গেছেন। তাই তাদেরকে বুদ্ধিজীবী বলতে লজ্জা হচ্ছে।’


সর্বশেষ সংবাদ