অটোপাসে জিপিএ-৫ বাড়ল তিনগুণের বেশি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২১, ১১:৩১ AM , আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২১, ১১:৪০ AM
সদ্য ঘোষিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সবাই পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন। ৯টি সাধারণসহ সব বোর্ডের সমন্বয়ে ঘোষিত ফলাফলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, আগের বছর মোট জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৪৭ হাজার ২৮৬ জন। সে হিসেবে এবার অটোপাসে জিপিএ-৫ পেয়েছে তিনগুণেরও বেশি।
আজ শনিবার (৩০ জানুয়ারি) গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এইচএসসি ও সমমানের ফলাফল ঘোষণা করেন। ফলাফল অনুযায়ী, এবার সবাই শতভাগ পাস করলেও গতবার পাস করে ৭৩.৯৩ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পাওয়ার হার গত বছর ৩.৫৪ শতাংশ হলেও এবার হয়েছে ১১.৮৩ শতাংশ। এবার ছাত্রদের মধ্যে ৭৮ হাজার ৪৬৯ জন এবং ছাত্রীদের মধ্যে ৮৩ হাজার ৩৩৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
ফল ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ফল নিয়ে যারা সমালোচনা করছেন, তারা কি কিছু হয়ে গেলে দায়িত্ব নেবেন? এখন এই ফল নিয়েও কথা বলছেন। তবে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই, যে সবাই মিলে ফলটা তৈরি করতে পেরেছে। করোনাভাইরাস আমরা সবাই যদি আরেকটু মেনে চলেন তাহলে খুব তাড়াতাড়ি আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারবো। আমরা ফেব্রুয়ারি মাসটা দেখবো। ফেব্রুয়ারি যদি ভালো থাকে, তাহলে পরবর্তী মাসে আমরা সীমিত পরিসরে শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিতে পারবো বলে আশা করি।’
তিনি বলেন, ‘আগে একটি বিষয়ে ফেল করলে পরের বছর সব বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হতো। সেটি আমরা পরিবর্তন করে দিয়েছি। ফলে সে ওই একটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে পারে। তখনও অনেকে সমালোচনা করে। আজকেও আমরা যেভাবে ফল দিলাম, এতে আশা করি সবার ভালো হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি মনে হচ্ছে জেলখানায় বন্দি আছি। ভাগ্যিস আমরা ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করতে পেরেছি। এতে আমরা সবকিছু করতে পেরেছি। ইতিমধ্যে আমরা ভ্যাকসিন এনেছি। আমরা ইতিমধ্যে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করেছি। শিক্ষক বা শিক্ষার সঙ্গে যারা কর্মরত, তাদের যাতে দ্রুত দেওয়া হয় তা বলে দিয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে এবার সবাই ফলাফল তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞসহ সবার মতামত নিয়ে এই ফলাফল তৈরি করা হয়েছে। এটা অনেক কঠিন কাজ ছিল। শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে এক বছর নষ্ট হোক আমরা চাই না। সেজন্য এই ফলাফলটা আমরা দিলাম। করোনা আমরা মোকাবিলা করার চেষ্টা করছি। এটা থেকে মুক্তি পেলে আবার সবাই ক্লাসে ফিরতে পারবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘অনেকে এটা নিয়ে কথা বলছেন। এভাবে তিক্ততা তৈরি করা ঠিক না। এটি নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করলে শিশুদের মনে মানসিক চাপ পড়বে। করোনাকালের শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে আমরা নানা উদ্যোগ নিয়েছি। সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে ক্লাস করা হয়েছে, যাতে তাদের পড়াশোনা চলতে পারে। এসব ক্লাস বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমেও দেওয়া হয়েছে।’
পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করার সময় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান ছাড়াও বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার সামনে থাকা বাটন চেপে এ ফলাফল ঘোষণা করেন। এর আগে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানদের নিকট থেকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ফলাফল গ্রহণ করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিল করে অটোপাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরীক্ষা ছাড়া সেই ফলাফলই আজ ঘোষণা করা হলো। এবার তাই কেউ ফেল করেনি। জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফল গড় করে এইচএসসির ফল ঘোষণা করা হয়েছে।