জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পেতে দেরি হচ্ছে কেন, নেপথ্যে কী?

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী  © লোগো

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে। যার ফলে ২০১৮ সালে তারা নির্বাচন করেছে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে। ২০১৪ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে তারা অংশ নেয়নি। দলীয়ভাবে জাতীয় নির্বাচন করতে হলে তাদের নিবন্ধন ফেরত পেতে হবে, প্রতীক ফেরত পেতে হবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখনও কেন জামায়াতে ইসলামী তাদের নিবন্ধন ফেরত পায়নি, এতে অনেকে অবাক হয়েছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জামায়াতের অনেক নেতাকর্মী।

কয়েকটি সূত্র জানায়, আইনগত কিছু জটিলতা ও কৌশলের কারণে এখনও জামায়াত তার নিবন্ধন ফেরত পায়নি। জাতীয় নির্বাচন নাকি স্থানীয় নির্বাচন কোনটি আগে হবে, তার ওপর নির্ভর করছে জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার লড়াই। জামায়াত স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার কথা বলেছে। কেননা এ ক্ষেত্রে দলীয় প্রতীক থাকবে না। নিবন্ধনেরও প্রয়োজন হবে না। তবে বিএনপি চায় আগে জাতীয় নির্বাচন হোক। এখন অন্তর্বর্তী সরকার কী সিদ্ধান্ত নেবে, সেটার ওপর নির্ভর করবে অনেক কিছু।

জামায়াতের একটি সূত্র জানায়, জামায়াত নেতারা আশা করছেন, আইনের লড়াই চালিয়ে যাবেন তারা, শিগগিরই নিবন্ধন পেয়ে যাবেন। একইসঙ্গে তারা নিবন্ধন ও স্থানীয় নির্বাচনের জন্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবেন। নিবন্ধনের ব্যাপারটি যেহেতু আইনগত বিষয়, সেহেতেু জামায়াত আদালতেও লড়াই চালিয়ে যাবে। 

সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে দেশের সব কটি কার্যালয় কার্যত সিলগালা করে রাখা হয়েছিল। জামায়াত একমাত্র দল, যে দলের নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। দুঃখের বিষয়, ফ্যাসিবাদ আপাতত বিদায় নিয়েছে, কিন্তু আমরা নিবন্ধনটা এখনো ফিরে পাইনি। নিবন্ধনের জন্য এখনো আদালতে লড়াই করতে হচ্ছে। এটা বাংলাদেশের জন্য লজ্জার বিষয়। অন্যায়ের কাছে, ফ্যাসিবাদের কাছে মাথা নত না করার কারণে কেড়ে নেওয়া নিবন্ধনটা ফ্যাসিবাদের পরিবর্তনের সঙ্গে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত ছিল।’

জানা যায়, ২০১৩ সালের ১ অগাস্ট বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের বেঞ্চ এক রিটের রায়ে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে। ওই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে জামায়াতের করা আবেদন ওই বছরের ৫ অগাস্ট খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার পর ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। তাতে এ দলটির দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে। শুনানিতে জামায়াতের মূল আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারকের আপিল বেঞ্চ ওই আপিল খারিজ করে দেয়।

ঐতিহাসিক ৫ অগস্ট গণবিক্ষোভের জেরে প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন শেখ হাসিনা। তার আগে ১ অগস্ট জামায়াত ও তাদের ছাত্র শাখা ছাত্রশিবিরকে সন্ত্রাস যোগের কারণ দেখিয়ে নিষিদ্ধ করেছিল তৎকালীন সরকার।  অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর জাময়াতের আবেদনে সেই নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়। এবার নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ফিরে পেলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অধিকারও ফিরে পাবে ২০০১-০৬ সময়ে বিএনপির সঙ্গে সরকারে থাকা দলটি।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘নিবন্ধনের বিষয়ে আমরা আইনি পথেই এগোব। আশা করি, আদালতে আমরা সুবিচার পাব।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence