মা ও নবজাতকের মৃত্যু, ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবিতে রিট
- আদালত প্রতিবেদক
- প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৫০ PM , আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৫০ PM

নোয়াখালীর সাউথবাংলা হাসপাতালে ডাক্তারদের অবহেলা ও অপচিকিৎসার কারণে মা ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপ্রিম কোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। আইনি নোটিশ দেওয়ার পরও বিবাদীরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এই রিট করা হয়েছে।
বুধবার ( ৫ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সেনবাগ প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক এমএ আউয়ালের পক্ষে রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. সোলায়মান (তুষার) ।
রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্টার, বাংলাদেশ নার্সিং মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের রেজিস্টার, নোয়াখালী জোলার সিভিল সার্জন, নোয়াখালীর সাউথবাংলা হাসপাতাল, হাসপাতালের পরিচালক মহিউদ্দিন, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেস্থেসিয়া) ডাক্তার মো. আক্তার হোসেন অভি, তার স্ত্রী ও নোয়াখালী মেডিক্যাল অ্যাসিসট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস), জুনিয়র লেকচারার ডাক্তার ফৌজিয়া ফরিদ, সাউথ বাংলা হাসপাতালের মেডিকেল সহকারী জাহিদ হোসেন ও সাউথ বাংলা হাসপাতালের ওটি ইনচার্জ সজিব উদ্দিন হৃদয়কে বিবাদী করা হয়েছে।
এর আগে, ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. সোলায়মান (তুষার) ডাকযোগে সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ প্রেরণ করেন।
নোটিশে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১৬ অক্টোবর রাতে সেনবাগ প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক এমএ আউয়াল তার অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে উম্মে সালমা নিশির চিকিৎসার জন্য সাউথ বাংলা হাসপাতালে আসেন। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, কর্মরত মেডিক্যাল সহকারী জাহিদ হোসেনের সহায়তায় ডা. আক্তার হোসেন অভি ও তার স্ত্রী ডা. ফৌজিয়া ফরিদ রোগীকে হাসপাতালে আনুষ্ঠানিকভাবে ভর্তি না করে, রোগীর কোনও রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে এবং অভিভাবকের সম্মতি না নিয়েই তাড়াহুড়া করে সিজার করেন। এসময় ঘটনাস্থলেই মা ও সন্তানের মৃত্যু হয়। ঘটনা ধামাচাপা দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসক ডা. অভি ও তার স্ত্রী ফৌজিয়া ফরিদ প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন জানিয়ে আইসিইউ সাপোর্টের কথা বলে কুমিল্লায় রেফার করে। ভিকটিমের অভিভাবকরা তাকে কুমিল্লার টাওয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার জানান অনেক আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তারদের ভুল ও অপচিকিৎসার কারণেই ভিকটিম ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। যা সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৮ ও ৩২ এর লঙ্ঘন। তারা এর দায় কোনোমতেই এড়াতে পারেন না।
আইনি নােটিশে ভিকটিম উম্মে সালমা নিশি ও তার নবজাতক মৃত্যুর ঘটনায় ৫ দিনের মধ্যে ভিকটিমের পরিবারকে ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. সােলায়মান (তুষার) বলেন, নোয়াখালীর সাউথ বাংলা হাসপাতালে আমার মক্কেলের মেয়ের সাথে যা ঘটেছে তা খুবই হৃদয় বিদারক। একজন গর্ভবর্তী নারীকে কোনোরকম পরীক্ষা না করেই সিজার করা কোনোক্রমেই মেনে না যায় না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তারদের অর্থের লোভেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। ডাক্তার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুটি মৃত্যুর দায় এড়াতে পারে না। তিনি আরো বলেন, আইনি নোটিশ দেওয়ার পর বিবাদীরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটটি শুনানির জন্য অতি দ্রুতই সংশ্লিষ্ট কোর্টে উত্থাপন করা হবে বলে তিনি জানান।