ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে গুলি করে তরুণীকে হত্যার ঘটনায় প্রেমিক গ্রেপ্তার

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © টিডিসি ফটো

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে গুলি করে নারী সাহিদা আক্তার রাফাকে (২৪) হত্যার ঘটনায় বরিশালের ভোলা থেকে প্রেমিক তৌহিদ শেখ তন্ময়কে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

সোমবার (২ ডিসেম্বর) তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মুন্সীগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় কেরাণীগঞ্জের একটি পুকুর থেকে হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর আজাদ বলেন, প্রেমিক তৌহিদ শেখ তন্ময়কে ভোলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়ছে। আমাদের অভিযান এখনো চলছে। এর আগে এই ঘটনায় রোববার সকাল ১০টার দিকে নিহতের মা জরিনা খাতুন‌ বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন।

প্রেমের সম্পর্কের জেরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে ওই মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় নিহত তরুণী সাহিদা আক্তারের প্রেমিক তৌহিদকে আসামি করে এই মামলা দায়ের করেন‌ তিনি। এদিকে নিহতের মরদেহ মায়নাতদন্ত শেষে নিহতের মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে নিহত ওই নারীকে মুন্সীগঞ্জের মহাসড়কে ৫ রাউন্ড গুলি করে হত্যা করা হয়। 

এর আগে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কোলাপাড়া ইউনিয়নের দোগাছি ফুটওভার ব্রিজের অদূরে ঢাকামুখী সার্ভিস লেন থেকে গুলিবিদ্ধ নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সকাল ৮টার দিকে স্থানীয়রা প্রথমে মরদেহ দেখতে পান। পরে খবর পৌঁছায় পদ্মা সেতু উত্তর থানা ও সেতুর নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা পেট্রোল টিমের কাছে। তারা জানান শ্রীনগর থানা পুলিশকে। 

স্থানীয় কয়েকজন জানান, ভোরে ওই নারীকে পদ্মা সেতু উত্তর থানা সংলগ্ন খান বাড়ি সিএনজি স্ট্যান্ড এলাকা থেকে মুখে দাড়িওয়ালা এক যুবকের সঙ্গে মহাসড়কের সার্ভিস লেনে হেঁটে এগোতে দেখা যায়। সেখানে তর্কে জড়ান তারা। চড়-থাপ্পড় দিতে দেখা যায় নারীকে। তবে গুলি করতে দেখেননি কেউ। বেলা পৌনে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে মরদেহের ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বিকেলে নিহত নারীর সঙ্গে থাকা মোবাইলের সিমের সূত্র ধরে ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করে থানা পুলিশ। পরে খবর পেয়ে ছুটে আসেন পরিবারের সদস্যরা। 

পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহত সাহিদা রাজধানী ঢাকার ওয়ারিতে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন ও নারিন্দা এলাকার বলধা গার্ডেন সংলগ্ন জনৈক কামাল মিয়ার বাড়িতে বাচ্চাদের দেখাশোনার কাজ করতেন। ময়মনসিংহ সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি গ্রামের মৃত মো. মোতালেবের মেয়ে সাহিদা। তারা ২ ভাই ও ৩ বোন। তাছাড়া ৭-৮ বছর আগে সাহিদার একটি বিয়েও হয়েছিল। পরে সেই সম্পর্ক টিকেনি। 

নিহতের মা জরিনা খাতুন বলেন, তৌহিদ নামের এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের সূত্রে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করত সাহিদা। তাদের মধ্যে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে প্রায়ই মারামারি হতো। এমনকি আমি নিজেও ওই যুবকের কাছে মারধরের শিকার হয়েছি বেশ কয়েকবার। একপর্যায়ে আমি প্রেমের বিষয়টি মেনেও নেই। কিন্তু ছেলের পরিবার মানতে চাইতো না। আমার কাছে ছেলের মা বিয়ে বাবদ ১০ লাখ টাকাও চায়। আমি বাসা-বাড়ি কাজ করে খাই। ১০ লাখ টাকা কোথা থেকে দেব? কয়েক মাস আগে চাঁদপুরে গিয়ে আপত্তিকর অবস্থায় তৌহিদ-সাহিদা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। থানা থেকে আমাকে খবর দেয়া হলে আমি রাগে যাইনি। পরে ছেলের পরিবারের সদস্যরা গিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে দুইজনকে। তবে আমার ছেলেটাকে সুবিধার মনে হতো না। শুনেছি সে গাঁজার ব্যবসা করে। আমি প্রায়ই আমার মেয়েকে বলতাম এই ছেলের সঙ্গে এভাবে যেখানে সেখানে ঘোরাঘুরি না করতে। কিন্তু আমার কথা শুনতো না।

নিহতের মা জরিনা আরও বলেন, গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে সাহিদা আমাদের সঙ্গে বাসায় ছিল। এমন সময় ফোনে ডেকে নেওয়া হয় সাহিদাকে। পরে শনিবার দুপুরে আমার মেয়েকে গুলি করে হত্যার খবর পাই পুলিশের কাছ থেকে। আমি শুনেছিলাম ছেলের বাড়ি বিক্রমপুর। মনে হয় ওই ছেলেই আমার মেয়েকে এখানে নিয়ে এসে হত্যা করেছে।

মুন্সীগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর আজাদ বলেন, একজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। প্রেমের সম্পর্কের জেড়ে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে মামলাটি করেছেন নিহতে মা জরিনা খাতুন।  

এ ব্যাপারে শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইয়ুম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, গোয়েন্দা পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে শুনেছি বিস্তারিত কিছু আমি বলতে পারব না।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence