বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চলতে বাধা নেই: হাইকোর্ট
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪৭ PM , আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০২:০৬ PM
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতি স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দেয়া বিজ্ঞপ্তিটি স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এ আদেশের ফলে দেশের শীর্ষ এ প্রকৌশল উচ্চশিক্ষালয়ে ছাত্ররাজনীতি চলতে বাধা নেই। সোমবার (১ এপ্রিল) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে সোমবার উচ্চ আদালতে সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ রাব্বি। রিটে বুয়েট কর্তৃপক্ষ রাজনীতি নিষিদ্ধ করে যে নোটিশ দিয়েছিল, তা স্থগিত চাওয়া হয়েছিল।
২০১৯ সালে বুয়েটের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করেন। তখন তিনি জানান, নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষক রাজনীতিরও সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: নিয়মিত এক শিক্ষার্থী ছাড়া কেউই অংশ নেননি বুয়েটের পরীক্ষায়
এদিকে ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে পরীক্ষা বর্জনসহ আন্দোলন করেছেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। তবে অনতিবিলম্বে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি ফেরাতে আল্টিমেটাম দিয়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।
পাশাপাশি বুয়েট শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বির হলের সিট ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি। রবিবার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাবেশে এ আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
এর আগে, ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রবেশ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগে গত শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। এদিন সকাল ৭টায় তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভ চলে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। এদিন তারা দাবি বাস্তবায়নে ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে আবারও আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার বিকেলে বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে তোলা। ছবি: টিডিসি ফটো।
পরদিন রবিবার সকালে বুয়েটের আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা জানান, বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত থাকলে দাবি আদায়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি চলমান রয়েছে। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পাল্টা কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। সেটাও তারা পর্যবেক্ষণ করছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের সার্বিক অবস্থান জানান দিতে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছেন। এদিন দুপুরের পরে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
বিগত ২০১৯ সালের অক্টোবরে আবরার ফাহাদ হত্যার পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ। তবে গত বছর বুয়েট শিক্ষার্থীদের পদ দিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হলে বিষয়টি নিয়ে ফের আলোচনা তৈরি হয়। তখন ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের পুরোনো বিজ্ঞপ্তিটি আবার ওয়েবসাইটে প্রচার করা হয়।
গত বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। তারা বলছেন, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও বুধবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালায়।
বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি ফেরাতে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে প্রতিবাদী সমাবেশ ছাত্রলীগের। রবিবার দুপুরে তোলা। ছবি: ফাইল থেকে
এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে গতকাল বিকেলে শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি বুয়েট প্রশাসনকে লিখিত আকারে জানান। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বুধবার মধ্যরাতের পর ক্যাম্পাসে “বহিরাগতদের” প্রবেশ ও রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক হলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ইমতিয়াজ হোসেন।
ইমতিয়াজকে বুয়েট থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার, হলের সিট বাতিলসহ তার সহযোগীদেরও বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারেরও দাবি শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে দিচ্ছে তার ব্যাখ্যাও চেয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) পদত্যাগ দাবি করেছেন তারা। এসব দাবি আদায়ে পরীক্ষাসহ সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী টানা তৃতীয় দিনের মতো কোনো ধরনের ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নেননি শিক্ষার্থীরা।