দেশের শিক্ষিত তরুণদের ৪২ শতাংশই বিদেশে পাড়ি জমাতে চান
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:১৮ PM , আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:২৮ PM
দক্ষতা অনুযায়ী চাকরির বাজার তৈরি না হওয়া, গুণগত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের স্বল্পতা, উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগের অভাব এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা শঙ্কাসহ বিভিন্ন কারণে দেশের মোট শিক্ষিত তরুণদের ৪২ শতাংশ বিদেশে পাড়ি জমাতে চান। বিওয়াইএলসি ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস অ্যান্ড জাস্টিস সেন্টারের এক যৌথ সমীক্ষায় উঠে এসেছে এ তথ্য।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টার (বিওয়াইএলসি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিওয়াইএলসি ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস অ্যান্ড জাস্টিস সেন্টারের ‘ইয়ুথ ম্যাটার্স সার্ভে ২০২৩’ শীর্ষক যৌথ সমীক্ষার বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তথ্য উপস্থাপন করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন ব্যবস্থাপক আবুল খায়ের সজীব ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস অ্যান্ড জাস্টিস সেন্টারের সাবেক গবেষণা সহযোগী হোসাইন মোহাম্মদ ওমর খৈয়াম।
দেশের আট বিভাগের ৫ হাজার ৬০৯ তরুণ-তরুণীর মাঝে জরিপে অংশ নেয়। এর মধ্যে ৭৫ দশমিক ৫ শতাংশই দেশ ছাড়ার কারণ হিসেবে আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তাকে দায়ী করেছেন। ৫০ দশমিক ৯ শতাংশ তরুণ আবার মনে করেন, তাদের যে দক্ষতা রয়েছে দেশে সে অনুযায়ী চাকরি নেই। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই মনে করেন ৪২ দশমিক ৩ শতাংশ তরুণ এবং ৪০ দশমিক ৮ শতাংশ মনে করেন দেশে উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ কম। এছাড়া ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কারণে দেশ ছাড়তে চাইছেন ৩৩ দশমিক ৯ শতাংশ তরুণ-তরুণী।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার সুযোগ, আবেদনের সময় বাড়ল
জরিপে অংশ নেয়া ৮৮ দশমিক ৯ শতাংশ তরুণ সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দুর্নীতিকে চিহ্নিত করেছেন। ৫৫ দশমিক ৩ শতাংশ তরুণ বিশ্বাস করেন বর্তমানে দেশে শান্তিপূর্ণ অবস্থা নেই। অপরদিকে ৬৩ শতাংশ তরুণ মনে করেন গত পাঁচ বছরে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এছাড়া ২৯ শতাংশ তরুণ মনে করেন দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার হ্রাস পাচ্ছে, যা সুশাসনকে বাধাগ্রস্ত করছে।
বিওয়াইএলসি জরিপে দেখা যায়, বর্তমানে ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণই ভবিষ্যতে উদ্যোক্তা হতে চেয়েছেন। শিক্ষার মানোন্নয়নেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন তরুণরা। জরিপে অংশ নেয়া ৫৭ দশমিক ৭ শতাংশই মনে করেন এক্ষেত্রে শিক্ষকের মান বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এছাড়া ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ তরুণ বিশ্বাস করেন পাঠ্যক্রমে নেতৃত্বচর্চা ও সফট স্কিল উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ যুক্ত করে শিক্ষার মান বাড়ানো সম্ভব।
এসকল কারণে উন্নত জীবনের আশায় ৪২ শতাংশ তরুণ-তরুণী বিদেশে পাড়ি জমাতে চান। তবে বিদেশ যাওয়ার পর যদি দেখেন এসব সংকট সমাধান হয়েছে তাহলে ৮৫ শতাংশই আবার দেশে ফিরে আসতে চান বলে জরিপে উঠে এসেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সিপিজের গবেষণা সহযোগী তাসনিয়া খন্দকার ও বিওয়াইএলসির নির্বাহী পরিচালক তাহসিনাহ আহমেদ।
বাংলাদেশের যুবসমাজের অবস্থান, সমসাময়িক ভাবনা ও প্রত্যাশা জানতে বিওয়াইএলসি পাঁচ বছর পরপর জাতীয় নির্বাচনের আগে এ সমীক্ষা পরিচালনা করে।