শ্বশুরের বাধা, স্ত্রী লুবনাকে শেষবারও দেখা হলো না স্বামী ফারুকের

প্রতীকী
প্রতীকী

ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লুবনা নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গত রবিবার (২০ আগস্ট) লুবনার বাবা নাজিম উদ্দীনের তত্বাবধানে তার ব্রেন টিউমার অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর স্বামী ফারুককে শেষবার দেখার সুযোগ না দিয়েই লাশ দাফন করে দেন নাজিম উদ্দীন।

লুবনার বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার নূরপুর গ্রামে। ২০০৭ সালে চান্দিনা উপজেলার কৈলাইন গ্রামের নাজিম উদ্দীনের কন্যা লুবনাকে বিয়ে করেন ফারুক। বিয়ের পর লুবনার চিকিৎসা নিয়ে ফারুক ও নাজিম উদ্দীনের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিবাদ চলে আসছিলো। গেল রবিবার লুবনার মৃত্যুতে ঠেকে এ বিবাদ।

জানা যায়, বিয়ের দুই/আড়াই বছর পূর্ব থেকে লুবনা মাঝে মাঝে মাথা ব্যাথা অনুভব করতেন। ২০২২ সালে ১২ জুলাই এমআরআই করানো হলে লুবনার ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। স্বামী ফারুকের দাবি, বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা অভিমত প্রকাশ করেন, লুবনার টিউমার অপারেশন করা হলে সে মারা যেতে পারেন। অথবা বিকলাঙ্গ হয়ে পড়তে পারেন।

ফারুক বলেন, ডাক্তারের এ অভিমত প্রকাশের পর শ্বশুর ও বড় জামাই মুনসুর আহমেদ কেনুসহ নিকট আত্মীয় স্বজনদের সাথে পরামর্শ করে লুবনাকে হোমিও চিকিৎসা দেওয়া হয়। হোমিও চিকিৎসায় লুবনার রোগের ধীরে ধীরে উন্নতি ঘটতে থাকে। কিন্তু এক পর্যায়ে আমার শ্বশুর হোমিও চিকিৎসা বাদ দিয়ে তার টিউমার অপারেশন করানোর জন্য চাপাচাপি করতে থাকে। এতে আমি সম্মতি দেইনি।

পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে লুবনাকে বেড়ানোর নামে তার বাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। বেড়াতে যাওয়ার কয়েকদিন পরই স্বামী ফারুককে না জানিয়ে তাকে (লুবনা) পিজি হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এ খবর পেয়ে স্বামী ফারুক স্ত্রী লুবনাকে দেখতে বুধবার (২৩ আগস্ট) ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মুন্সী সাথে নিয়ে পিজি হাসপাতালে ছুটে যান। পরে সেখানে শ্বশুর পক্ষের আত্মীয়-স্বজনরা লুবনাকে দেখতে না দিয়ে তাকে (স্বামী ফারুক) দফায় দফায় লাঞ্চিত করেন।

স্বামী ফারুক অভিযোগ করে বলেন, লুবনার মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পরপরই তাকে আমার গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করানোর জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু তারা আমার অনুরোধে সাড়া দেয়নি। পরে বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে লুবনার লাশ আমার শ্বশুরের কৈলাইনের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফনের উদ্যোগ নেন।

তিনি বলেন, এ খবর পেয়ে আমি আমার স্ত্রীকে শেষবার দেখতে ও জানাজা অংশগ্রহণের জন্য শ্বশুর বাড়িতে ছুটে যাই। কিন্তু সেখানকার পরিবেশ-পরিস্থিতির কারনে স্ত্রীকে দেখা ও জানাজায় আমার অংশগ্রহণের সুযোগ হয়নি। তারা আমার দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্য ছেলে ফাহিমকে তাদের বাড়িতে রেখে দিয়েছে। আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই।

এদিকে, এ বিষয়ে জানতে শ্বশুর নাজিম উদ্দীনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তার থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।


সর্বশেষ সংবাদ