আর্জেন্টিনার পতাকার আদলে বাড়ি বানালেন ভোলার মিঠুন
- ভোলা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২২, ০৯:০৮ AM , আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২২, ০৯:০৮ AM
কাতার বিশ্বকাপের উন্মাদনা শুরু হয়ে গেছে সবখানেই। সারাদেশের মতো দ্বীপজেলা ভোলাতেও চলছে সেই উন্মাদনা। প্রায় সব পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন দেশের পতাকা। শহরের খেলার সামগ্রীর দোকানগুলোতে সমর্থকদের জার্সি কেনার ধুম পড়ে গেছে।
দিন যত ঘনিয়ে আসছে ঠিক ততই বাড়ছে উত্তাপ-উন্মাদনা। এদিকে দলকে ভালোবেসে অজিৎ দে মিঠু নামের এক সমর্থক আর্জেন্টিনার পতাকার আদলে সাজিয়েছেন নিজের বাড়ি। যেটি এখন ‘আর্জেন্টিনা বাড়ি’ নামে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। দূর-দূরান্ত থেকে সেই বাড়ি দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন অনেকেই। অজিৎ দে মিঠুন ভোলা সদরের বাপ্তা ইউনিয়নের বাপ্তাগ্রামের বাসিন্দা।
তিনি পেশায় মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায়ী। নিজের উপার্জনের একটা অংশ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ করে নিজের বাড়ি সাজিয়েছেন অর্জেন্টিনার পতাকার আদলে। আর স্থানীয়রা বাড়িটির নামকরণ করে ফেলেছেন আর্জেন্টিনা বাড়ি হিসেবে।
তারা এই বাড়ির পাশে নিজেদের ফ্রেমবন্দি করছেন আর মিঠুনকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। আর্জেন্টিনা দলকে ভালোবেসেই এমনটি করেছেন বলে জানান বাড়ির মালিক অজিৎ। তিনি বলেন, ম্যারাডোনা যখন খেলতো তখন থেকেই আর্জেন্টিনা দলকে ভালোবাসি। দলটির প্রতি ভালোবাসা থেকেই নিজের বাড়ি আর্জেন্টিনার পতাকার আদলে রং করেছি। পুরো ঘরটি রং করতে চারজন শ্রমিকের পাঁচ দিন সময় লেগেছে। এতে খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা।
স্বামীর এই উদ্যোগকে সমর্থন করে অজিতের স্ত্রী মিতু রানী বলেন, আমি নিজেও আর্জেন্টিনার সমর্থক। বাড়ি রং করার বিষয়টি আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। বাড়ি দেখতে প্রতিদিন অনেক মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। সেটি আমার কাছে বিরক্ত না লেগে বরং ভালো লাগে। ‘মৃণাল কান্তি নিবাস’ নামের বাড়িটি এখন সবার কাছেই যেন আর্জেন্টিনা বাড়ি হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছে।
সেই বাড়িটি দেখতে আসা সাগর মিত্র, নীল কান্ত দে, রাজিব দাস ও খোকন চৌধুরী বলেন, বাড়িটি অনেক সুন্দর হয়েছে। বাড়ির মালিক স্বল্প আয়ের মানুষ হলেও আর্জেন্টিনার প্রতি তার এমন ভালোবাসা অনেকের কাছেই অনুকরণীয়।
কাতার বিশ্বকাপ ফুটবলকে কেন্দ্র করে এমন উন্মাদনা শুধু বাপ্তা গ্রামে নয়, ছড়িয়ে পড়েছে জেলার সব জায়গায়। শহরের পাড়া-মহল্লা, অলিগলিতে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন দেশের পতাকা। জার্সি গায়ে জড়িয়ে দলের সমর্থন নিয়ে যুক্তিতর্কের যেন শেষ নেই সমর্থকদের। প্রিয় দল বিজয়ী হবে এমন প্রত্যাশা তাদের।
ব্রাজিল সমর্থক জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিব মাহমুদ হিমেল বলেন, বিশ্বকাপ মানেই একটা উৎসবমুখর পরিবেশ। আমরা আশা করছি এবার ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হবে। ব্রাজিল সার্পোটারদের নিয়ে একটা শো-ডাউন দেয়া হবে।
ব্রাজিল সমর্থক বিশ্বজিৎ বলেন, আমাদের এলাকায় ৬০ হাত লম্বা ব্রাজিলের পতাকা টানিয়ে দিয়েছি। সেটা দেখতেও অনেকে আসছেন।
বিগত বিশ্বকাপের তুলনায় এ বছর জার্সি কেনাবেচা অনেক বেশি বলে জানালেন ব্যবসায়ী মো. সোহাগ। তিনি বলেন, দোকানে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার জার্সি অনেক বেশি বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি সামনে বিক্রি আরও বেশি হবে।
খেলাকে কেন্দ্র করে উন্মাদনার পাশাপাশি সম্প্রীতিও বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ইয়ারুল আলম লিটন। তিনি বলেন, দল বা দলের সমর্থন নিয়ে যতই যুক্তিতর্ক হোক না কেন, কোনো মতেই ঝগড়া-বিবাদে জড়ানো যাবে না। আমি খেলোয়াড়দের সেভাবেই নির্দেশনা দিয়েছি। এবার আমরা বড় পর্দায় খেলা দেখানোর ব্যবস্থাও রেখেছি। ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দর্শকরা খেলা উপভোগ করতে পারবেন