এসএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁসে যুক্ত কেন্দ্রসচিব

এসএসসির প্রশ্নফাঁস
এসএসসির প্রশ্নফাঁস  © সংগৃহীত

দিনাজপুর বোর্ডের প্রশ্নফাঁসের পেছনে মূল হোতা হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে কেন্দ্রসচিবকে। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) কুড়িগ্রাম জেলায় প্রশ্নফাঁসের ঘটনাটি ঘটে। প্রশ্নফাঁসের কারণে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, কৃষিশিক্ষা ও রসায়নের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে মামলা করা হয়। নেহাল উদ্দিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আদম মালিক চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা করেন। 

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, কেন্দ্র সচিবের কক্ষ থেকে গণিত (আবশ্যিক), উচ্চতর গণিত, কৃষিশিক্ষা, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানের প্রশ্নপত্রের প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে একটি প্যাকেট ছাড়া সব কটি প্যাকেটের মুখ খোলা ছিল। মামলায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, কেন্দ্র সচিবসহ ওই বিদ্যালয়ের চার শিক্ষকসহ ১০ থেকে ১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছিলো।

গ্রেপ্তার করা হয়েছে কেন্দ্রসচিব লুৎফর রহমান এবং শিক্ষক জোবাইর হোসেন ও আমিনুর রহমানকে। তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

আরও পড়ুনঃ এসএসসির স্থগিত চার বিষয়ের পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভূরুঙ্গামারীর একজন শিক্ষক  জানান, তার কাছে পড়তে গিয়ে কিছু শিক্ষার্থী ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা জানায়। গত সোমবার ওই বিষয়ের পরীক্ষা শেষে তিনি আগে ছড়িয়ে পড়া হাতে লেখা প্রশ্ন ও উত্তরপত্র মিলিয়ে দেখেন। এতে হুবহু মিল পাওয়া যায়। এরপর তিনি বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান। সাংবাদিকরা তা প্রশাসনকে জানান। 

শিক্ষা প্রশাসনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শুরুতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানোর পর সবাই নড়েচড়ে বসে। একপর্যায়ে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. কামরুল ইসলাম, বোর্ড সচিব মো. জহির উদ্দিন কুড়িগ্রামে যান। তারা কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলামকে নিয়ে ভূরুঙ্গামারীতে গিয়ে থানায় রাখা প্রশ্নপত্রের প্যাকেটের সংখ্যা যাচাই করে জানতে পারেন যে সেখানে পরবর্তী পরীক্ষার কিছু প্রশ্নপত্র নেই। 

পুলিশ কর্মকর্তা এসআই সাঈদ মো. আতিক নুর প্রশ্নপত্রগুলো জব্দ করেন এবং আসামিকে হেফাজতে নেন। কেন্দ্রসচিব জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অপর আসামি মো. আবু হানিফের সহায়তায় কৌশলে ইতিমধ্যে হয়ে যাওয়া পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের প্যাকেটের মধ্যে করে পরবর্তী পরীক্ষার প্রশ্নপত্রগুলো নিয়ে আসেন তিনি। পরে অন্য আসামিদের মাধ্যমে গোপনে প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন। 

আরও পড়ুনঃ প্রশ্নফাঁসে জড়িত আরও তিন শিক্ষক গ্রেপ্তার

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, তারা মনে করছেন ভূরুঙ্গামারীতে বাছাইয়ের সময়ই পরবর্তী পরীক্ষার কিছুসংখ্যক প্রশ্নপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ কারণে থানায় গিয়ে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা দেখতে পান কর্মকর্তারা। এমনও হতে পারে যে ‘যোগসাজশে’ প্রথম পরীক্ষার দিন পরবর্তী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কৌশলে নেওয়া হয়েছে। অথবা দায়িত্বপ্রাপ্তদের গাফিলতি রয়েছে। নইলে প্রশ্নপত্র নেওয়া সম্ভব নয়।

এ বিষয়ে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. কামরুল ইসলাম বলেছেন, তদন্তে যদি দেখা যায় কোনো কর্মকর্তা জড়িত, তাহলে তাকেও ধরা হবে। 


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!