‘‘সংঘাত থেকে বিশ্বকে বাঁচাতে রাসুল (স) এর আদর্শে ফিরতে হবে’’

লেখক
লেখক  © ফাইল ফটো

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স)। যিনি অন্ধকারে নিমজ্জিত বর্বর একটি জাতিকে সারা বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর জাতিতে পরিণত করেছিলেন। তাঁর পরশ পেয়ে খাঁটি হয়েছিল আরবের মানুষগুলো। শত-সহস্র বাধা-বিপত্তিকে ডিঙিয়ে তিনি তাঁর মিশনকে সফল করতে পেরেছেন। কোন লোভ-লালসা, ভয়-ভীতি তাঁকে ইসলামের সুমহান বাণী প্রচারের পথ থেকে এতটুকু সরাতে পারেনি।

মানবজাতিকে সঠিক পথের দিকে আহবান করেছেন জীবনভর। মানুষের কল্যাণে নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে এগিয়ে যান এবং সফলকাম হন। চরিত্র গঠন ও সফলতা লাভের জন্য সকলের উচিত একমাত্র রাসূল (সা:) এর আদর্শ অনুসরন করা। বিশ্বনবি (সা:) এর আদর্শে জীবন গঠনেই শান্তি এবং মুক্তি।

মানুষের জীবনকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য রাসূলুল্লাহ (সা:) এর কর্মময় জীবনের বিভিন্ন বিষয়ের প্রাসঙ্গিক ও ব্যবহারিক সুন্নত বা কর্মনীতিগুলো মুসলমান তথা গোটা মানবজাতির জন্য সুন্দর, সুশৃংখল ও রুচিশীল জীবন যাপনের ক্ষেত্রে একমাত্র অনুসরণীয় এবং অনুকরণীয় পাথেয়। নবীর সুন্নত তথা তাঁর আদর্শ যথাযথ অনুসরণ ও অনুকরণ না করে আধুনিকতার নামে মানবতাবিধ্বংসী বিচ্ছিন্ন অপসংস্কৃতি যে আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা বলাই বাহুল্য।

পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘তোমাদের জন্য রাসূল (সা:)এর জীবনেই রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ। বর্তমান ঝঞ্চাবিক্ষুব্ধ এ পৃথিবীতে রাসূল (সা:)এর আদর্শের বড়ই প্রয়োজন। মানুষে মানুষে চলমান হিংসা-বিদ্বেষ, সংঘাত দূর করতে রাসূল (স) এর আদর্শের কোন বিকল্প নেই। নৈতিক চরিত্র গঠনে রাসূল (সা:) এর অনুসরণ করতে পারলে জীবন হয়ে উঠবে সুন্দর, সুশৃংখল। যে জীবন ইহ ও পরকালে মুক্তি আনবে। বর্তমান সময়ে এই নৈতিক চরিত্র গঠনই এক কঠিন কাজ। বিশেষ করে তরুণ ও যুবসমাজ বিপথে পা বাড়িয়ে নিজেদের ধ্বংসের পথে নিয়েই চলেছে ক্রমশ— যা অভিভাবক ও সবার কাছে চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চরিত্র গঠনে প্রিয় নবী (সা:) এর আদর্শই একমাত্র অনুসরণযোগ্য। যে আদর্শ একজন যুবককে গড়ে তুলবে সৎ ও চরিত্রবান মানুষ হিসেবে। রাসূল (সা:) এর আদর্শই পারে একজন মানুষকে সব ধরনের খারাপ ও অনৈতিক কাজ থেকে ফিরিয়ে এনে খাঁটি ও যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে।

বর্তমান বিশ্বে নানা স্থানে ঘটে চলেছে যুদ্ধবিগ্রহ ও সংঘাত। সংঘাতময় এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে রাসূল (সা:) এর আদর্শের দিকে ফিরে যেতে হবে। দেশ-বিদেশের সঙ্কটপূর্ণ স্থানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রিয় নবী (সা:) এর দিকনির্দেশনা কাজে লাগাতে পারলে সুফল বয়ে আনবে। সৌহার্দ্য ও সমঝোতা প্রতিষ্ঠা স্থায়ী হবে।

মানুষ ও মানবতার কল্যাণে বিশ্বনবি (সা:) এর কর্ম ও নির্দেশনা বিশ্ববাসীর জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্ব, কর্মকৌশল সবকিছুই বিশ্বমানবের শান্তি ও মুক্তির জন্য যথেষ্ট। পৃথিবীর জন্য রাসূল (সা:) এর আদর্শ ছাড়া আর কোন আদর্শ বা মতাদর্শের প্রয়োজন নেই। তিনি এমন এক মহামানব যাঁর গুণাবলি ও চরিত্রের সমকক্ষ কিংবা ধারেকাছেও কেউ নেই। সমস্ত মানবিক গুণাবলি দিয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা বিশ্বনবি (সা:) কে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন।

মানুষের পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে পূর্ণাঙ্গ শান্তি প্রতিষ্ঠায় রাসূল (সা:) কেই অনুসরণ করতে হবে। কারণ রাসূল (সা:) এর আদর্শ ছাড়া অন্য কোনো আদর্শ মানুষকে মুক্তি দিতে সক্ষম নয়। জীবনের প্রতিটি দিকের কার্যকর সমাধান রয়েছে শুধু প্রিয় নবী (সা:) এর জীবনেই। তিনি একমাত্র পূর্ণাঙ্গ মহামানব। রাসূল (সা:) এমন একজন মহামানব, যাঁর কোনো গোপন আদর্শ বা চরিত্র বলতে কিছু নেই। তাঁর জীবন চলার পথের প্রতিটি পদক্ষেপ বিশ্ববাসীর সামনে উন্মুক্ত। যেন মানুষকে তার জীবনের কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য অন্য কোনো আদর্শের দিকে ঝুঁকতে না হয়। পৃথিবীর অন্য কোনো মানুষের এমন উন্মুক্ত চরিত্র নেই। যে কারণে তিনিই একমাত্র ব্যতিক্রমী। তাঁকে অনুসরণ করতে পারলেই মিলবে স্থায়ী শান্তি ও মুক্তি। দুনিয়ার জীবন যেমন সুন্দর হবে, তেমনি পরকালীন জীবনও হবে শান্তিময়।

রাসূল (সা:) কে অনুসরণ না করে শুধু লোক দেখানো ভালোবাসায় কোনো সার্থকতা ও সফলতা নেই। তাঁকে যেমন ভালোবাসতে হবে, তেমনি জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে রাসূল (সা:) এর অনুসরণ অপরিহার্য। তাই পরিবার ও সমাজকে সুন্দর, সুশৃংখল ও শান্তিপূর্ণ করতে প্রিয় নবী, বিশ্বনবী (সা:) কে আদর্শ হিসেবে মেনে নিতে হবে। তাঁকে অনুসরণ করতে হবে জীবন চলার প্রতি পদক্ষেপে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে বোঝার তাওফীক দিন। আমিন।

লেখক : শিক্ষক ও কলামিস্ট


সর্বশেষ সংবাদ