পুরুষ যদি মাকে ভালোবাসে, তবে নারীকে কেন গালিগালাজ করে?
- মোজাফ্ফর হোসেন
- প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৫, ০৫:১৬ PM , আপডেট: ২২ জুন ২০২৫, ০২:৪৮ PM

একজন পুরুষকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, সবচেয়ে বেশি কাকে ভালোবাসে, বলবে মাকে। একজন বাবাকে যদি প্রশ্নটা করা হয়, বলবে কন্যাকে। ভাইকে প্রশ্ন করা হলে বলবে বোনকে, প্রেমিক বলবে প্রেমিকার কথা। তাই যদি হয়, তাহলে আমাদের পুরুষসমাজ এত নারী-এন্টাগনিস্ট, নারীবিদ্বেষী হলো কেমন করে? যে লোকটা সাংঘাতিকভাবে নারী বিদ্বেষী, সারাক্ষণ নারীদের গালিগালাজ করে, সেই লোক কি করে তার মা বা মেয়েকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতে পারে?
এটা তো ঠিক, নারী কয়েক শতাব্দী ধরে সংখ্যায় সংখ্যালঘু না হয়েও সংখ্যালঘুর মতো বাস করে আসছে পুরুষ-ঔপনিবেশিক সমাজে। পুরুষ তার সমস্ত শক্তি (রাজনীতি-অর্থনীতি-সমাজনীতি-শিল্প ও কলানীতি এবং অবশ্যই ধর্মনীতি) দিয়ে নারীর জন্য প্রতিকূল একটি সমাজ গঠন করেছে। এখনো করে যাচ্ছে। ক্ষান্ত দেওয়ার কোনো লক্ষণই নাই (বিশেষত বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে)।
অথচ নারী পুরুষ এক বিছানাতেই বাস। একসঙ্গে ঘুম-খাওয়া-উঠাবসা-প্রেম-ভালোবাসা সবই। যে সম্পর্ক প্রেমের, কামের, মায়ার, স্নেহের, ভালোবাসার, বন্ধুত্বের, শ্রদ্ধার, ঋণের, সেই সম্পর্কের মাঝেই যদি বৈষম্য দূর করে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা না যায়, তাহলে রাষ্ট্রে মানুষে মানুষে শ্রেণিবিভেদ, বর্ণবিভেদ, বৈষম্য দূর হবে কেমন করে? যে সমাজে অর্ধেক মানুষ (পুরুষ) এখন পর্যন্ত বাকি অর্ধেক মানুষের (নারীর) সম্পত্তিতে সম-অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি, সেই সমাজে নাকি সাম্যবাদের আন্দোলন হয়, বৈষম্যহীনতার গল্প শোনা যায়?
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক