‘ঢাবিতে মাস্টার্সে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা উচিত’

ড. মো. কামরুল হাসান মামুন
ড. মো. কামরুল হাসান মামুন  © ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বছর থেকেই অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রেগুলার মাস্টার্সের সুযোগ পাবেন, সিনেটে চূড়ান্ত অনুমোদন। তবে সিদ্ধান্তটিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়া হয়নি। মাস্টার্স-এ আসন সংখ্যা বেঁধে দিয়ে নতুন করে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা উচিত। তবে আজকের সিদ্ধান্তকে একটি ভালো শুরু বলা যায়।

এছাড়া আজকে আরো একটি সিদ্ধান্ত হয় সেটি হলো এখন থেকে ‘টিচিং ইভ্যালুয়েশন’ কার্যক্রম চালু করা হবে। শিক্ষার্থীরা অনলাইনে নির্ধারিত ফরমে ৫টি সূচক ও তৎসংশ্লিষ্ট উপসূচকের আলোকে এই মূল্যায়ন করতে পারবেন। তবে ইভ্যালুয়েশন ফর্মের মান এবং এর উপর কতটা গুরুত্ব দেওয়া হয় তার উপর এর সফলতা নির্ভর করে।

এছাড়া আরো একটি সিদ্ধান্ত হয়। এখন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকগণকে প্রদত্ত গবেষণা ভাতা (প্রতি মাসে ৫০০০/-) রহিত করা হলো। খুবই ভালো সিদ্ধান্ত। এর পরিবর্তে শিক্ষা ও শিক্ষণ উপকরণ ক্রয়ের জন্য প্রত্যেক শিক্ষককে বাৎসরিক ৬০,০০০/- (১২X৫০০০/-=ষাট হাজার) টাকা প্রদান করা হবে। অর্থাৎ নাম তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি শুধু খাতের নাম পরিবর্তন করা হলো। কিন্তু যা করা উচিত ছিল তা করা হয়নি। শিক্ষকদের মধ্যে যাদের পিএইচডি আছে তাদের পিএইচডি-র জন্য বিশেষ ইনক্রিমেন্ট দেওয়া উচিত। তার উপর যাদের পোস্ট-ডক আছে তাদের আরো এক ধাপ বিশেষ ইনক্রিমেন্ট দেওয়া উচিত। এর মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষার যথাযথ মূল্যায়ন হয় এবং একই সাথে আমাদের শিক্ষার্থীদের দেশে ফিরে আসার প্রবণতাকে উৎসাহিত করা হবে। আরেকটি বিষয় দেশেই সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতনের বিরাট পার্থক্যের কারণে আমাদের অনেক মেধাবী শিক্ষক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে যাচ্ছে। এটি খুব নীরবে ঘটছে। এটি এখনই না থামালে এর জন্য একদিন বড় মূল্য দিতে হবে বলে রাখছি।

তাছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়। ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ন্যানোপ্রযুক্তি সেন্টার’ (উটঘঈ) নামক একটি সেন্টার প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কিন্তু একই সাথে অন্তত আরো ৩০টি সেন্টারের বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত হলে খুশি হতাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৫৬ টি গবেষণা সেন্টার আছে। সেখান থেকে কি বছরে ৫৬টি আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়? যদি না হয় তাহলে কেন এতগুলো সেন্টার রাখা হবে। অধিকাংশ সেন্টারের কোন ইমপ্যাক্ট নাই। সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

সব শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি কিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্তের জন্য।

লেখক: অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ