ডাকসু: পুনঃনির্বাচন দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারীরা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০১৯, ০৯:৪৫ AM , আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯, ১১:৩২ AM
ডাকসু নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগে ফের আন্দোলন শুরু হচ্ছে আজ। নির্বাচন বাতিল; পুনঃতফসিল ঘোষণা; উপাচার্যের পদত্যাগ; মামলা প্রত্যাহার ও হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে এই আন্দোলন করবে নির্বাচন বর্জনকারী প্যানেলগুলো। কর্মসূচিকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হচ্ছেন অান্দোলনকারীরা।
সালমান রহমান নামে ছাত্রফ্রন্টের এক নেতা জানিয়েছেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই পূর্বঘোষিত কর্মসূচি রাজু ভাস্কর্য থেকে ভিসি কার্যালয় অভিমুখে বিক্ষোভ শুরু হবে। এর আগে রবিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থীরা।
আন্দোলনকারীরা জানান, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আল্টিমেটাম শনিবার শেষ হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরণের সাড়া না পাওয়ায় ফের পাঁচ দফা দাবিতে আজ ক্লাস বর্জন ও উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে তারা।
নির্বাচনে অনিয়মের কথা উল্লেখ করে ভিপি নুরুলহক নুর বলেন, ১১ মার্চের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। দীর্ঘ ২৮ বছর পর যে নির্বাচন হয়েছে তার মাধ্যমে প্রশাসন কালিমা লেপে দিয়েছে। আমরা বলেছি, পুনঃনির্বাচন দিতে হবে। যারা এই নির্বাচনের সাথে জড়িত তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, গত ১১ মার্চ বহুল প্রতিক্ষিত যে ডাকসুর নির্বাচন হয়েছে তাতে সাধারণ ছাত্রদের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলিত হয়নি। নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছিল, সেই সংকট থেকে উত্তরনের একটি মাধ্যম হিসাবে ডাকসু নির্বাচনকে রোল মডেল হিসাবে উপস্থাপন করা যেত। কিন্তু ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হওয়া ডাকসু নির্বাচনে অনিয়ম কারচুপি প্রতীয়মান হয়েছে। মৈত্রী হলে ক্রস দেওয়া ব্যালট, রোকেয়া হলে ট্রাঙ্ক ভর্তি ব্যালট উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি দাবি করে বলেন, বিভিন্ন হলে কৃত্রিম লাইন, সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে ডুকতে না দেওয়াসহ নানাবিধ সমস্যা হয়েছে। নিরপেক্ষ শিক্ষদের দিয়ে নির্বাচন না দেওয়া, প্রার্থীদের উপর হামলা পর্যন্ত হয়েছে যা একটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে যথেষ্ট।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতন্ত্রের ধারাকে অক্ষুন্ন রাখতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ও সম্মানকে অক্ষুন্ন রাখতে এই নির্বাচনকে প্রশ্নের উদ্ধে রেখে শিক্ষার্থীদের মতামতের দাবির আলোকে ১১মার্চের এই বিতর্কিত নির্বাচন বাতিল করে ফের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ভিপি নুরুল হক নুর, ফারুক হোসেন, রাশেদ খাঁনসহ আরও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ।
এর আগে আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে রবিবার দুপুর ১টায় মধুর ক্যান্টিনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন প্রগতিশীল ছাত্রজোট থেকে ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী। তিনি বলেন, দীর্ঘ ২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে নির্বাচন হয়েছে, সে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একধরনের কলঙ্কজনক অধ্যায় রচিত হয়েছে। আমরা ১১মার্চ নির্বাচনের দিন ৫টি প্যানেল যৌথভাবে এই নির্বাচনকে বর্জন করেছিলাম এবং একইসঙ্গে নির্বাচনের ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করে পুনঃতফসিলের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু শনিবার নুরুর বক্তব্য সবাইকে হতাশ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
এদিকে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে ডাকসুর জিএস প্রার্থী এ আর এম আসিফুর রহমান বলেন, অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, আমরা বিভক্ত হয়ে গেছি কি না? আমরা পাঁচটি প্যানেল নির্বাচন বর্জন করেছিলাম, আমরা একই অবস্থানে আছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। তিনদিন শেষ হয়েছে। আমরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করব। তিনি বলেন, প্রশাসন আমাদের কাছে নির্বাচনে কারচুপির প্রমাণ চাইছে। আমরা বলতে চাই, প্রমাণের পথ আপনারা আগেই বন্ধ করে রেখেছিলেন। নির্বাচনের আগের দিন আমরা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলাম, আপনারা মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবেন না। আমরা আগেই আশঙ্কা করেছিলাম, প্রশাসন এ ধরনের একটি নাটক সাজাতে পারে।
আসিফ বলেন, সুষ্টু নির্বাচনের দায় যেমন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের, একইভাবে কারচুপির প্রমাণ খুঁজে বের করার দায়ও প্রশাসনের। এবং আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কোনো রকম সহযোগিতায় নেই। অতীতে আমরা প্রমাণ উপস্থাপন করেও কোন বিচার পাইনি।