বাংলাদেশে শুরু হতে যাচ্ছে প্রাণঘাতী নিপাহ ভাইরাসের ভ্যাকসিন ট্রায়াল

নিপাহ ভাইরাস
নিপাহ ভাইরাস  © সংগৃহীত

প্রাণঘাতী নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধে তৈরি একটি সম্ভাবনাময় ভ্যাকসিনের মধ্য পর্যায়ের (মিড-স্টেজ) ট্রায়াল শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। ২০২৬ সালের প্রথমার্ধেই এ ট্রায়াল শুরু হবে বলে জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বায়োটেক প্রতিষ্ঠান ‘পাবলিক হেলথ ভ্যাকসিনস’ (পিএইচভি) উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন ‘পিএইচভিও২’ নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধে বিশ্বের অন্যতম অগ্রগামী উদ্যোগ হিসেবে মধ্য পর্যায়ের পরীক্ষায় আসতে সক্ষম হয়েছে।

বাংলাদেশে ট্রায়াল চালাতে পিএইচভিকে ১৭.৩ মিলিয়ন ডলার দেবে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনস (সিইপিআই)। সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে টিকা গবেষণায় কাজ করে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠান।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ভ্যাকসিনটির প্রাথমিক ট্রায়ালে দেখা গেছে এটি নিরাপদ এবং এটি প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। বাংলাদেশে যে ট্রায়ালটি হবে সেখানে নিপাহ ভাইরাসের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনটির নিরাপত্তা, সহনশীলতা এবং সক্ষমতা পরীক্ষা করা হবে। গবেষকরা প্রাপ্ত বয়স্ক ৫০০ বাংলাদেশি ও ৭০ শিশুর ওপর ট্রায়াল চালানোর পরিকল্পনা করছেস।

সিইপিআইর গবেষণা ও উন্নয়ন নির্বাহী পরিচালক ডাক্তার কেন্ট কেস্টার বলেছেন, ‘ভ্যাকসিনটি প্রাথমিক ট্রায়ালে আশাব্যঞ্জক ফলাফল দেখিয়েছে। এটির একটি মাত্র ইনজেকশনের  নিলেই দ্রুত প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হতে পারে, যা প্রাণঘাতী নিপাহ ভাইরাসের বিরুদ্ধে একটি আদর্শ প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা হয়ে উঠবে।’

তিনি বলেন, ‘এ অতিরিক্ত তহবিলের মাধ্যমে সিইপিআই পিএইচভি-এর সঙ্গে অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখতে পেরে আনন্দিত, যার ফলে ভ্যাকসিনটি দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়ালে অগ্রসর হতে সক্ষম হবে এবং নিপা ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি আগের চেয়ে আরও কাছে আনতে সহায়তা করবে।’ 

প্রসঙ্গত, নিপাহ হলো প্যারামাইক্সোভাইরাস পরিবারের একটি জুনোটিক ভাইরাল রোগ। এ রোগে আক্রান্ত ৭৫ শতাংশ মানুষেরই মৃত্যু হতে পারে এবং বর্তমানে নিপাহ ভাইরাসের স্বীকৃত চিকিৎসা বা ভ্যাকসিন নেই। সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশে নিপাহ ভাইরাসের আক্রান্তের ঘটনা সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। তবে ভাইরাস বহনকারী বাদুড় বিশ্বের অনেক জায়গায় পাওয়া যায়, যার ফলে আনুমানিক ২ বিলিয়ন মানুষ এই ভাইরাসের সম্ভাব্য মারাত্মক সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে।

বাংলাদেশে হতে যাওয়া ট্রায়ালটি যদি সফলতার মুখ দেখে তাহলে ভ্যাকসিনটি আরও বেশি উৎপাদন করা হবে এবং আক্রান্ত দেশগুলোতে পাঠানো হবে। যেন ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে এটির প্রতিরোধ ব্যবস্থা পাওয়া যায়।

সিইপিআই নিপাহ ভাইরাস গবেষণার বিশ্বের বৃহত্তম তহবিলদাতা, যারা তাদের নিপাহ ভ্যাকসিন ও জীববিজ্ঞান কর্মসূচি এবং সম্পর্কিত বিজ্ঞান প্রকল্পগুলোতে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!