এমপক্স নিয়ে ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার’ হুঁশিয়ারি: দিয়েছে একগুচ্ছ সুপারিশ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ০৮:২৬ PM , আপডেট: ২১ জুন ২০২৫, ০৭:০৮ AM

বিশ্বজুড়ে ফের বাড়তে থাকা এমপক্স সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে নতুন করে সতর্কবার্তা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এমপক্স যা আগে ‘মাঙ্কিপক্স’ নামে পরিচিত ছিল। এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। ১৯৭০ সালে কঙ্গোতে প্রথম এটি মানুষের মধ্যে শনাক্ত হয়। বর্তমানে এই ভাইরাস বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে বিশেষ করে যেখানে স্থানীয় সংক্রমণ, গুচ্ছ সংক্রমণ কিংবা ভ্রমণ-সংশ্লিষ্ট সংক্রমণ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিধিমালার আওতায় গঠিত জরুরি কমিটির বৈঠকের সুপারিশের ভিত্তিতে সংস্থাটি একগুচ্ছ হালনাগাদ অস্থায়ী সুপারিশ প্রকাশ করেছে যা আগামী ২০ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
এমপক্সের লক্ষণ ও বিস্তার
এমপক্স সংক্রমণের লক্ষণগুলো সাধারণত সংক্রমণের ৫ থেকে ২১ দিনের মধ্যে দেখা দেয়। সাধারণ উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, পেশির ব্যথা, ক্লান্তি, গলাব্যথা বা গ্রন্থি ফোলা এবং শরীরে ফুসকুড়ি বা ঘা। এই ঘাগুলো মুখ, হাত-পা, যৌনাঙ্গসহ শরীরের যেকোনো স্থানে হতে পারে। ধীরে ধীরে এগুলো পুঁজযুক্ত হয়ে শুকিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: বিমানে থাকা ২৪২ জনেরই মৃত্যু হয়েছে
কারা এই সুপারিশের আওতায়?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নতুন অস্থায়ী সুপারিশগুলো মূলত সেই অংশীদার রাষ্ট্রগুলোর জন্য প্রযোজ্য, যেসব দেশে এমপক্স ভাইরাসের স্থানীয় সংক্রমণ বিদ্যমান, গুচ্ছ সংক্রমণের ঘটনা শনাক্ত হয়েছে অথবা ভ্রমণ–সংশ্লিষ্টভাবে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এসব পরিস্থিতিতে থাকা দেশগুলোর জন্য প্রস্তুতি, নজরদারি ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি বলে বিবেচনা করেছে সংস্থাটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নতুন সুপারিশে যা যা রয়েছে তা হলো—
জরুরি সমন্বয় জোরদার
হটস্পট এলাকায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা, অর্থনৈতিক সম্পদের যথাযথ বরাদ্দ এবং স্থানীয় প্রতিরোধ কাঠামো শক্তিশালী করার আহ্বান জানানো হয়েছে। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিরোধ কাঠামোর পুনর্গঠন অত্যাবশ্যক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশেষ করে শরণার্থী, মানবিক সংকটে থাকা জনগোষ্ঠীর মধ্যে কাজ করা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে এক দিনে ১৫ জনের করোনা শনাক্ত
সহযোগিতামূলক নজরদারি
এমপক্স শনাক্তে পরীক্ষার সুযোগ বাড়ানো, নমুনা পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং জিনোম সিকোয়েন্সিং কার্যক্রম জোরদারের সুপারিশ করা হয়েছে। আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত ও নজরদারিতে জোর দিতে বলা হয়েছে।
নিরাপদ ও বিস্তৃত ক্লিনিক্যাল সেবা
আক্রান্তদের চিকিৎসা, পুষ্টি এবং মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। শিশু, গর্ভবতী নারী এবং এইচআইভি আক্রান্তদের জন্য বিশেষ সেবা সম্প্রসারণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য প্রশিক্ষণ, পর্যাপ্ত সুরক্ষা উপকরণ (PPE) এবং নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পানি, স্যানিটেশন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা জোরদারের উপরও আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তা, সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এমপক্স সংক্রমণ আবারও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। তাই সংস্থাটি সদস্য দেশগুলোর কাছে এই সুপারিশগুলো দ্রুত ও কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য জরুরি আহ্বান জানিয়েছে।