খেলার মাঠ নেই ৭২ শতাংশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে

ভাড়া ভবনে শিক্ষাক্রম পরিচালনা করছে অধিকাংশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল
ভাড়া ভবনে শিক্ষাক্রম পরিচালনা করছে অধিকাংশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল  © টিডিসি ফটো

শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ এবং প্রচলিত শিক্ষা ধারাকে উৎসাহিত করার অন্যতম মাধ্যম সহশিক্ষার নানা কার্যক্রম। সেজন্য দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবেই বিবেচনা করা হয় শিশুদের খেলাধুলার উন্মুক্ত স্থান বা খেলার মাঠকে। ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ছাড়াও শিক্ষালয়ের নিয়মিত সমাবেশ আয়োজন ও শ্রেণীকক্ষের বাইরে পাঠদান এবং সহশিক্ষা কার্যক্রমের বিভিন্ন কাজে লাগে এসব খেলার মাঠ। যদিও বর্তমানে খেলার মাঠ নেই দেশের ইংরেজি মাধ্যমের (ইংলিশ মিডিয়াম) ৭২ দশমিক ২৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠানে।

বর্তমানে সংখ্যার হিসেবে দেশের মোট ১৩৭টি অনুমোদিত ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১০টি প্রতিষ্ঠানেই নেই শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার সুযোগ। অন্যদিকে বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্যারেন্টস ফোরামের দাবি, শিক্ষার্থীরা খেলার সুযোগ পায় বা তার আয়োজন রয়েছে- এ রকম প্রতিষ্ঠানের হার মাত্র ১০ শতাংশের মতো। ফলে খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকছে ইংরেজি মাধ্যমের ৯০ শতাংশের মতো শিক্ষার্থী।

আমাদের অধিকাংশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে সুস্থ বিনোদন ও খেলাধুলার জন্য কোনো মাঠ নেই। অথচ শিশু শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলার মাঠ জরুরি। শহরের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোর প্রায় ৯০ শতাংশের মতো প্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ নেই। ফলে স্কুলগুলো ইনডোর গেমের উপর নির্ভরশীল—এ কে এম আশরাফুল হক, সভাপতি, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্যারেন্টস ফোরাম।

শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশ নিশ্চিত করতে তাদের পর্যাপ্ত এবং পরিমিত খেলাধুলা ও সহশিক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। সেজন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অত্যাবশ্যকীয়ভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য থাকতে হবে খেলাধুলার সুযোগ, উন্মুক্ত মাঠ। কোনো প্রতিষ্ঠানে খেলাধুলার মাঠ বা সুযোগ না থাকলে তাকে পূর্ণাঙ্গ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলা যায় না বলে মত শিক্ষাবিদদের। শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার সুযোগ নিশ্চিতে যে-সব প্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ নেই; সেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলার সুযোগ নিশ্চিতে ব্যবস্থা নিতে হবে কর্তৃপক্ষকে—বলছেন শিক্ষাবিদরা।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সুযোগ বা খেলার মাঠ একটি অবিচ্ছেদ অনুষঙ্গ জানিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ না থাকলে তারা খেলাধুলার সুযোগ পাবে না। এতে শিশু শিক্ষার্থীদের মনো:সামাজিক উন্নতি বাধাগ্রস্ত হবে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের শারীরিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি বাধাগ্রস্ত হবে শিশুর সামাজিক বিকাশও। এছাড়াও খেলাধুলার সুযোগ না পাওয়ার ফলে শিশুরা পিছিয়ে থাকে অভিযোজনেও। পাশাপাশি শঙ্কা রয়েছে শিশুর স্থূলতা বেড়ে যাওয়ারও।

মাঠ না থাকায় ইংরেজি মাধ্যমের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে সহশিক্ষামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয় শ্রেণিক্ষেই। ফাইল ছবি

উন্নত বিশ্বের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলোয় শিক্ষার পাশাপাশি শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য সহশিক্ষাক্রমিক বিভিন্ন বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে এ শিক্ষাবিদ বলছেন, সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রমকে দেখতে হবে শিক্ষার অংশ হিসেবে। সেজন্য শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিতে হবে ইনডোর-আউটডোর সব ইভেন্টেই। যাদের খেলার মাঠ নেই বা খেলাধুলার পর্যাপ্ত সুযোগ থাকে না; তারা শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিতে পারে পাশাপাশি থাকা কোনো মাঠে খেলার সুযোগ দিয়ে। এছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় নিয়মিত তদারকিও থাকা উচিত—যুক্ত করেন অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য খেলার মাঠ রয়েছে এরকম প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল তার্কিশ হোপ স্কুল, সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গ্রিন হ্যারাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সেইন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল, বিএএফ শাহীন ইংলিশ মিডিয়াম কলেজ, বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টিউটরিয়াল (বিআইটি), স্যার জন ইউলসন স্কুল, প্লেড্জ হার্বার ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকা (আইএসডি), আঁগা খান স্কুল, হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, সানিডেল স্কুল, আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ, ফ্লোরেন্স ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও দি বাডস্ রেসিডেনসিয়্যাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজে।

দেশে বর্তমানে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে সর্বশেষ প্রতিষ্ঠিত তিনটিসহ ১৪০টি। এর মধ্যে ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেলের সংখ্যা যথাক্রমে ৩০ এবং ৯০টি। এ ছাড়াও জুনিয়র স্কুল রয়েছে ১৭টি।

অন্যদিকে কিছু প্রতিষ্ঠানে ইনডোর গেম বা অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের সীমিত পরিসরে খেলাধুলার সুযোগ দিচ্ছে। এছাড়াও কিছু প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার সুযোগ দিতে ভাড়া করছে পাশাপাশি থাকা কোনো উন্মুক্ত মাঠ বা খেলাধুলা করা যায়—এমন স্থান। এছাড়া ছোট পরিসরে খেলার মাঠ রয়েছে ডিপিএস এসটিএস স্কুল ও সানবিমস স্কুলের। তবে সদ্য প্রতিষ্ঠিত ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষালয়গুলোর মধ্যে হেইলিবারি ভালুকা ও গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে শিক্ষার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে বৃহৎ পরিসরে খেলাধুলায় অংশগ্রহণের সুযোগ।

বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো’র (ব্যানবেইস) সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, দেশে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৩৭টি। তবে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএমএসএবি) বলছে, দেশে বর্তমানে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পাঠদান করছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৫০ এর বেশি।

আর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকার তথ্য বলছে, তাদের অধীনে এখন পর্যন্ত ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে অনুমোদন নিয়েছে মোট ১৬৬টি প্রতিষ্ঠান। তবে এর মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের প্রয়োজনীয় বিষয়াদি হালনাগাদ না করায় তাদের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল মনছুর ভূঁইয়া।

বেশকিছু ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে ছোট পরিসরে খেলার মাঠ। ফাইল ছবি

বর্তমানে দেশের ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলোর জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা ও আইন না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না শিক্ষা বোর্ডগুলো। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এর কমিটি থেকে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল পরিচালনা সংক্রান্ত একটি আইন ও নীতিমালার করার প্রস্তাব দেওয়া হলেও এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট আইন ও নীতিমালা হয়নি। 

ফলে এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৭ সালের ৫ জুন নির্দেশিত ১৯৬২ সালের রেজিস্ট্রেশন অব প্রাইভেট স্কুলস অর্ডিন্যান্সের ক্ষমতা বলে বিদেশি কারিকুলামে পরিচালিত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নীতিমালা-২০১৭ মোতাবেক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রাপ্ত অনুমোদনে চলছে এসব প্রতিষ্ঠান। জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম) থেকে এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা করে তা সর্বশেষ ২০২২ সালে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা থাকলেও তা পাঠানো হয়নি।

শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ না থাকলে তারা খেলাধুলার সুযোগ পাবে না। এতে শিশু শিক্ষার্থীদের মনো:সামাজিক উন্নতি বাধাগ্রস্ত হবে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের শারীরিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি বাধাগ্রস্ত হবে শিশুর সামাজিক বিকাশও। এছাড়াও খেলাধুলার সুযোগ না পাওয়ার ফলে শিশুরা পিছিয়ে থাকে অভিযোজনেও। পাশাপাশি শঙ্কা রয়েছে শিশুর স্থূলতা বেড়ে যাওয়ারও—মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন।

ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো আইন ও নীতিমালা না থাকায় এসব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হয়। এতে টিউশন ফি, পরীক্ষার ফি, ভর্তি ফিসহ নানা ফি ও খরচাদি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের মতো করে ঠিক করে। ফলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিক্ষা ও সহশিক্ষাখাতে বিভিন্ন ধরনের ফি প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রহণ করলেও তার বিপরীতে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বলছেন, প্রতিষ্ঠানগুলো অতিরিক্ত অনেক ফি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করে থাকে, যা অপ্রয়োজনীয়। এছাড়াও বিভিন্ন খাতে গৃহীত এসব ফি শিক্ষার্থীদের পেছনে কতটুকু খরচ করা হয়, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে অভিভাবকদের। তবে দেশের ব্যয়বহুল এসব প্রতিষ্ঠান শিক্ষা বিস্তার ও মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা নিশ্চিতে যা ভূমিকা রাখছে তা নিয়েও সন্তুষ্ট নন শিক্ষাবিদ ও দেশের শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।

সহশিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করতে শিক্ষার্থীদের জন্য থাকে বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, দেশে বর্তমানে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে সর্বশেষ প্রতিষ্ঠিত তিনটিসহ ১৪০টি। এর মধ্যে ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেলের সংখ্যা যথাক্রমে ৩০ এবং ৯০টি। এ ছাড়াও জুনিয়র স্কুল রয়েছে ১৭টি।

ব্যানবেইসের প্রতিবেদন বলছে, বিগত বছরের তুলনায় ২ হাজার ৬৩১ জন শিক্ষার্থী বেড়ে দেশে বর্তমানে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭১ হাজার ৪৫৬ জন। আর এসব শিক্ষার্থীকে পাঠদানের দায়িত্বে রয়েছেন ৯ হাজার ৬৬৬ জন শিক্ষক। দেশে এখনও অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে আরও দুটি প্রতিষ্ঠান।

আরও পড়ুন: দেশে ব্যয়বহুল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ছে

দেশে বর্তমানে ব্রিটিশ কারিকুলামভিত্তিক ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ‘অর্ডিনারি লেভেল’, সংক্ষেপে ‘ও’ লেভেল এবং পরবর্তী নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি ‘অ্যাডভান্স’ লেভেল, সংক্ষেপে ‘এ’ লেভেল হিসেবে গণ্য করা হয়। পরবর্তী শিক্ষা স্তরে এ-১ ও এ-২ শ্রেণিভুক্ত এবং যার পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন হয় যুক্তরাজ্যের স্কুল-কলেজের আদলে। এ ছাড়াও দেশে ইংরেজি মাধ্যমের পাশাপাশি ‘ইংলিশ ভার্সন’ নামেও শিক্ষাদান হয় মাতৃভাষাকে ছাপিয়ে। 

অভিযোগ রয়েছে, ইংরেজি মাধ্যমের প্রতিষ্ঠানগুলোয় কোনো নীতিমালা ও নজরদারির না থাকার ফলে তাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ভর্তি ও টিউশন ফি হিসেবে মাত্রাতিরিক্ত আদায় করছে শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে। প্রতিষ্ঠানগুলো বছরে ভর্তি ফি’র নামে কয়েক লাখ টাকা নেওয়ার পাশাপাশি টিউশন ফি হিসেবে মাস বা বছরান্তে নেয় বিপুল পরিমাণ অর্থ। এছাড়াও কোচিং সেন্টার, বই ও স্টেশনারিসহ আরও বেশ কয়েক ধরনের খরচ রয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে।

সদ্য প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলো চেষ্টা করছে শিক্ষা ও সহশিক্ষায় সমন্বয় করতে। ফাইল ছবি

এ নিয়ে বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্যারেন্টস ফোরামের সভাপতি এ কে এম আশরাফুল হক বলছেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য খেলার মাঠ থাকা আবশ্যকীয়। কিন্তু আমাদের অধিকাংশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে সুস্থ বিনোদন ও খেলাধুলার জন্য কোনো মাঠ নেই। অথচ শিশু শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলার মাঠ জরুরি। শহরের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোর প্রায় ৯০ শতাংশের মতো প্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ নেই। ফলে স্কুলগুলো ইনডোর গেমের উপর নির্ভরশীল। 

সমাধান হিসেবে এ অভিভাবক বলছেন, যদি স্কুলগুলোকে সরকার স্বল্প মূল্যে জায়গা দেয়, তবে স্কুলগুলোর পক্ষে সম্ভব হবে শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলার পর্যাপ্ত সুযোগ নিশ্চিতের। এ বিষয়ে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, উন্নত বিশ্বে প্রাইভেট স্কুলগুলোকে সরকার নামমাত্র মূল্যে জমি দেওয়াসহ সুবিধা দেয় নানান আর্থিক খাতে।


সর্বশেষ সংবাদ