কথা রাখলো না বশেমুরবিপ্রবি প্রশাসন

কথা রাখলো না বশেমুরবিপ্রবি
কথা রাখলো না বশেমুরবিপ্রবি  © ফাইল ছবি

প্রায় তিনমাস আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ফি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) প্রশাসন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. মোরাদ হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞাপ্তিতে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও সংস্কৃতি ফি, রোভার স্কাউট ফি ও বিএনসিসি ফি ২০ টাকা করে এবং সিলেবাস ফি ৫০ টাকা করে নির্ধারণ করার ঘোষণা দেয়া হয়।

তবে মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে নিজেদের দেয়া ওই নোটিশের বিষয়বস্তুই ভুলে গেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উপাচার্যের দেয়া আশ্বাসের কথা ভুলে বিশ্ববদ্যালয় প্রশাসন সাবেক-বর্তমান সব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আগের মত ফি আদায় করছেন।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী ফি গ্রহণ করা হয়েছে। স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া এক শিক্ষার্থীর টাকা প্রদানের রশিদে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ফি হিসেবে ২০০ টাকা, বিএনসিসি ফি হিসেবে ৫০ টাকা, রোভার স্কাউট ফি হিসেবে ৫০ টাকা এবং সিলেবাস ফি হিসেবে ১৫০ টাকা গ্রহণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: সন্ধ্যার পর ফোন দেওয়া যাবে না বশেমুরবিপ্রবি প্রক্টরকে

শুধুমাত্র স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তির ক্ষেত্রেই নয়। ফি নিয়ে ভোগান্তির মুখোমুখি হচ্ছেন সদ্য স্নাতক সম্পন্নকরা শিক্ষার্থীরাও। চাকরি, বিদেশ গমনসহ বিভিন্ন কারণে সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে গেলে তাদেরকে পূর্বনির্ধারিত ফি অনুযায়ীই বিগত দুই সেমিস্টারের সকল অর্থ নিতে দেখা গেছে।

আইন বিভাগ থেকে সদ্য স্নাতক সম্পন্নকারী শিক্ষার্থী শামস জেবিন বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অতিরিক্ত ফি গ্রহণ করা হতো। সর্বশেষ গত অক্টোবরে শিক্ষার্থীরা ফি কমানোর দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। তখন উপাচার্য স্যার মুক্ত আলোচনায় আশ্বাস দেন ফি কমানো হবে। তার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে গেলেও সেটির এখনো বাস্তবায়ন দেখা যাচ্ছে না। প্রশাসন এখনো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পূর্বেই নিয়মে ফি নিচ্ছে।

আরও পড়ুন: শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়েছে বশেমুরবিপ্রবি

হল ফি সংক্রান্ত ভোগান্তির বিষয়টি উল্লেখ করে কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মাসুকুর রহমান বলেন, ‘আমি শেখ রাসেল হলের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী। নিয়ম অনুসারে প্রতিটি হলের আবাসিক শিক্ষার্থীকে নির্ধারিত বেতন পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু আমাদের হলগুলোর বেতনের সাথে, সংস্থাপন চার্জ অর্থাৎ পানি, বিদ্যুৎ বিলের চার্জ যুক্ত হয়ে মোট ৩৫০ টাকা মাসিক বেতন পরিশোধ করতে হচ্ছে।

মাসুকুর রহমান বলেন, দেশের আর কোন পাবলিক ভার্সিটির আবাসিক শিক্ষার্থীদের এত বেশি বেতন পরিশোধ করতে হয় বলে আমার জানা নেই। ইতোপূর্বে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের কথা দিয়েছিলো ফি কমানো হবে। কিন্তু এ বিষয়ে এখনও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

আরও পড়ুন: কথা রাখলেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য সৌমিত্র শেখর

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি নিজের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে এ শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ফি পুনঃনির্ধারণের বিষয়টিকে ঝুলিয়ে না রেখে প্রশাসন অতিদ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এই বেতন-ফি কমিয়ে আনবে। কারণ বিষয়টি এখনই সমাধান না করলে পরবর্তীতে একসাথে একটি বড় অংকের টাকা দিতে হবে, যা অনেক শিক্ষার্থীর জন্য কঠিন হয়ে যাবে।

নোটিশ প্রদান করেও ফি না কমানোর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মোরাদ হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করবো না। কারণ বিষয়টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন উপাচার্য স্যার।’

আরও পড়ুন: বিদেশী শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে বশেমুরবিপ্রবি

নোটিশ দেওয়ার পরেও স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফি গ্রহণের বিষয়ে কাছে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুবে বলেন, ‘আমরা যে নোটিশটি দিয়েছিলাম সেটি শুধুমাত্র রানিং শিক্ষার্থীদের জন্য। প্রথম বর্ষে যারা ভর্তি হবেন; তাদের জন্য নয়। প্রথম বর্ষে ভর্তির ক্ষেত্রে ফি এবং পরবর্তী দ্বিতীয় থেকে অস্টম সেমিস্টার পর্যন্ত ফি-এর পরিমাণ ভিন্ন।

স্নাতক সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি গ্রহণ প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন কারণে শিক্ষার্থীদের সাথে পুনরায় আলোচনায় বসে ফি নির্ধারণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সুযোগ হয়নি। এ কারণে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ফি গ্রহণ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে ফি কমানো হলে এসকল শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেয়া হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence