কুয়েট অধ্যাপকের মৃত্যু, উত্তাল ক্যাম্পাস

দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে ক্লাস-পরীক্ষা
দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে ক্লাস-পরীক্ষা  © সংগৃহীত

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)। গত মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) বিকালে তার মৃত্যু হয়।

অধ্যাপক সেলিম হোসেন কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ ছিলেন। তার মৃত্যুর পর কুয়েটের সব ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে ক্লাস-পরীক্ষা। ক্যাম্পাসের দুর্বার বাংলা চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করে শিক্ষক সমিতি। দায়ী ছাত্রদের বহিষ্কার ও শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

জানা যায়, দোষীদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারসহ চার দফা দাবিতে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। দুপুরে প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান শিক্ষকরা।

সকালে সাড়ে ১০টায় শিক্ষক সমিতির আহ্বানে শিক্ষকরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমবেত হন এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এরপর বেলা সোয়া ১১টায় শিক্ষকরা প্রতিবাদ র‌্যালি বের করেন। শেষে বেলা সাড়ে ১১টায় কুয়েট ক্যাম্পাসের দুর্বার বাংলা চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রতীক চন্দ্র বিশ্বাস। বক্তৃতা করেন– ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. সাইফুর রহমান খান, অধ্যাপক ড. শিবেন্দ্র শেখর শিকদার, অধ্যাপক ড. মোস্তফা সরোয়ার, পল্লব কুমার চৌধুরী, অধ্যাপক ড. রাফিজুল ইসলাম, কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপক ড. পিন্টু চন্দ্র শীল, অধ্যাপক ড. সোবহন মিয়া, অধ্যাপক ড. সজল কুমার অধিকারী, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর প্রমুখ।

সমাবেশে ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, আমরা শিক্ষকরা ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু স্বাভাবিক পরিবেশ চাই। যাতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিরাপদে ক্যাম্পাসে অবস্থান করাসহ নির্বিঘ্ন পদচারণা করতে পারেন।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. সজল কুমার অধিকারী বলেন, সেলিম একজন সম্ভাবনাময় শিক্ষক ছিলেন। তার মৃত্যু একটি সম্ভাবনার মৃত্যু। এ ধরনের মানসিক নির্যাতনের মূলোৎপাটন করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে ক্যাম্পাস সবার জন্য নিরাপদ হয়। মানসিক নির্যাতনে সেলিমের মৃত্যুর বিচার না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা ক্লাসে যাবে না।

অধ্যাপক ড. মোস্তফা সরোয়ার বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগের সেই সব মানসিক নির্যাতনকারীদের ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। এ ঘটনায় দ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হবে, শিক্ষকদের এমনটা প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু ঘটনার তিন দিন হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনও দৃশ্যমান কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। অবিলম্বে জড়িতদের বহিষ্কার করতে হবে।

অধ্যাপক ড. শিবেন্দ্র শেখর শিকদার বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মানুষ গড়ার প্রতিষ্ঠান। সেখানে যদি অমানুষ তৈরি হয় তা কাম্য নয়। মানসিক নির্যাতনে মৃত্যুবরণ করা সেলিম আসলে হত্যার শিকার। সুতরাং সেলিমকে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের আগে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করতে হবে। হত্যাকারীর সঙ্গে ক্যাম্পাসে সহাবস্থান করতে চান না শিক্ষকরা। সমাবেশ থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়।

গত মঙ্গলবার ছাত্রলীগ নেতাদের মনোনীত ছাত্রকে লালন শাহ হলের ডিসেম্বর মাসের জন্য ডাইনিং ম্যানেজার না করায় প্রভোস্ট ড. সেলিমকে চাপ দেয় তারা। এরপর ওই দিনই তার মৃত্যু হয়। এদিকে, এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence