একটি ‘প্রতিষ্ঠান’ ছিলেন বঙ্গবন্ধু: বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য
- বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২১, ০৪:৫৬ PM , আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২১, ০৪:৫৬ PM
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শুধু একজন নেতা বা ব্যক্তি নন, তিনি ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠান। বঙ্গবন্ধু তৃণমূল পর্যায় থেকে উঠে আসা একজন নেতা, যিনি পরবর্তীতে বিশ্ব নেতৃত্বে পরিণত হয়েছেন।’
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি উদ্যোগে আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ধারাবাহিক আলোচনা সিরিজের অংশ হিসেবে “বঙ্গবন্ধু: গৌরবগাঁথা ও বিজয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে সাধারণ মানুষের মনের কথা নির্দ্বিধায় তুলে ধরেছেন, যা আজ সারা পৃথিবীতে স্বীকৃত। তিনি জানতেন কখন কোন সিদ্ধান্ত কীভাবে নিতে হয়। তার নেতৃত্বে প্রচন্ড দেশপ্রেম ও জনগণের প্রতি ভালোবাসা ছিল। তার কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সুদক্ষ নেতৃত্বের মাধ্যমে অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
আলোচনায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. আক্তার হুসাইন। প্রবন্ধের উপর প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শেখ শামস মোরসালিন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ড. হাসিবুর রহমান।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. একিউএম মাহবুব।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আবু সালেহ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণেই মাত্র নয় মাসে, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছি। বিশ্বের অনেক দেশে দশকের পর দশক স্বাধীনতা যুদ্ধ করলেও বঙ্গবন্ধুর মতো একজন বলিষ্ঠ নেতৃত্ব তাদের না থাকায় আজও তারা স্বাধীন হতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু নিয়মতান্ত্রিক ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই স্বাধীনতার সংগ্রামকে ফলপ্রসূ করেছেন এবং বিজয় এনে দিয়েছেন।
আলোচনায় প্রবন্ধ উপস্থাপক অধ্যাপক ড. আক্তার হুসাইন বলেন, বাঙালি জাতির জন্য সংগ্রামের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু জাতির জনকে পরিণত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু তার অর্জনের মাধ্যমে সারা বিশ্বে এমন উচ্চতায় পৌঁছেছেন, তাঁর মতো নেতা পাওয়া বিশ্বে বেশ দুষ্কর।
শেখ মোরসালিন তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যে উপমায় আখ্যায়িত করি না কেন, সেটি তার জন্য কম হয়ে যায়। কেননা তিনি তার আপন মহিমায় উদ্ভাসিত। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যে সংবিধান প্রণয়ন করেছিলেন এটি তার একটি বিরাট অর্জন। বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে স্বল্প সময়ের মধ্যে মিত্রবাহিনীকে ফেরত পাঠাতে পেরেছিলেন যা পৃথিবীর ইতিহাসে একটি বিরল দৃষ্টান্ত।
অনুষ্ঠানের অপর আলোচক ড. হাসিবুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর গৌরবময় অর্জন মূলত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমাদের সামনে প্রতিফলিত হয়।
তিনি বলেন, ১৯৪৭ এ পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়েছিল সেটি ছিল ইতিহাসের একটি অনিবার্য ফলশ্রুতি, এটি কোন জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ছিল না। মূলত ব্রিটিশদের “ভাগ কর ও শাসন কর” নীতির ফলে হিন্দু ও মুসলমানদের মাঝে বিভেদ তৈরি হয়েছিল, তার অনিবার্য ফল হিসেবে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুই একমাত্র নেতা যিনি তাঁর জীবদ্দশায় স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, যার মূল ভিত্তি ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদ।
আলোচনা অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি এবং ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুল বাশার রিপন খলিফা। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি, ‘শেখ মুজিব’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়, পরবর্তীতে তিনি বাঙালি জাতির পিতা হিসেবে আবির্ভূত হন।
তিনি বলেন, ২০০৪ সালে বিবিসির জরিপে তাকে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে অভিহিত করা হয়। ২০১৯ সালের ১৬ আগস্ট জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনায় কূটনীতিকরা তাকে ‘বিশ্ববন্ধু’ হিসেবে অভিহিত করে। কাজেই এটাও তার গৌরবেরই একটি অংশ, যেখানে তিনি বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ব বন্ধুতে পরিণত হয়েছেন।