মাভাবিপ্রবির ক্যাফেটেরিয়ায় পর্দা কর্নারের দাবি ছাত্রীদের

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি)
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি)  © ফাইল ফটো

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) ক্যাফেটেরিয়ায় পর্দা কর্নার চালুর দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির নারী শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে পর্দানশীল শিক্ষার্থীদের স্বাচ্ছন্দ্যমূলক পরিবেশ নিশ্চিত করতে তারা এই উদ্যোগের আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজা আরেফিন মীম প্রথমে এই বিষয়টি নিয়ে মতামত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন—যারা পর্দা মেনে চলেন, তাদের জন্য ছোট পরিসরেও ক্যাফেটেরিয়ায় আলাদা বসার ব্যবস্থা থাকা উচিত। এতে তারা স্বস্তির সঙ্গে খাবার গ্রহণ করতে পারবেন। অনেকে তাঁর এই দাবির প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমর্থন জানান।

খাদিজা আরও বলেন, আমরা এখন নিজেদের মত প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছি। প্রত্যেকের নিজস্ব চিন্তার অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার থেকেই বিশ্বাস করি— ক্যাফেটেরিয়ায় একটি পর্দা কর্নার থাকা জরুরি। এটি শুধু ব্যক্তিগত চাহিদার বিষয় নয়, বরং সবার জন্য স্বাচ্ছন্দ্যমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ নিশ্চিত করার যৌক্তিক দাবি।

আইসিটি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী তাসলিমা ইসলাম বলেন— অনেক শিক্ষার্থী পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে ক্যাফেতে বসে খেতে পারেন না। তাদের পার্সেল নিতে হয়, যা সবসময় সম্ভব হয় না। আবার পার্সেল নেওয়ার সময় মারাত্মক ভিড় হয়। যদি ক্যাফেতে একটি পর্দা কর্নারের ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে আমাদের মতো শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো হবে।

ফুড টেকনোলজি অ্যান্ড নিউট্রিশনাল সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী তানিয়া আক্তার বলেন— পর্দা কর্নার মানে বৈষম্য তৈরি করা নয়। বরং এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা। অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও চাইলে সেখানে খেতে পারবেন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘সোচ্চার-টর্চার ওয়াচডগ বাংলাদেশ’ এর মাভাবিপ্রবি চ্যাপ্টারের সভাপতি নোমান বিন তাজ বলেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত হওয়া উচিত। যেহেতু এটি একটি সামষ্টিক সমস্যা, তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া।

বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী জেলা সমন্বয়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো মুক্তচিন্তার স্থান, যেখানে সব মতাদর্শের মানুষ তাদের বিশ্বাস ও মূল্যবোধ অনুসারে চলার সুযোগ পাবেন। পারস্পরিক সহমর্মিতা ও সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা বৈষম্যহীন একটি ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে চাই।

এ বিষয়ে এস্টেট অফিস পরিচালক ড. মো. আশরাফ আলী বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা যদি আবেদন করে, তাহলে আমি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমাদের কমিটির কাছে উপস্থাপন করবো। এ বিষয়ে আমরা ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনাকারীদের সঙ্গে পরামর্শ করবো এবং কোথায় এটি স্থাপন করা সম্ভব হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করব।

অন্যদিকে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনাকারী ফারুক জানান, ক্যাফেটেরিয়া মূলত শিক্ষার্থীদের জন্যই। যদি শিক্ষার্থীরা চায়, তাহলে তাদের জন্য একটি কর্নার করে দিতে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি নেই। এস্টেট অফিসের অনুমতি সাপেক্ষে, পশ্চিম পাশের একটি কর্ণারে দুটি টেবিল দিয়ে এটি স্থাপন করা যেতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ