ছাত্রদল কর্মীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে শাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ

শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ  © টিডিসি

সম্প্রতি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শাহপরাণ হলের ৪৩৬ নম্বর কক্ষে ঢুকে ছাত্রদল কর্মীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী শেখ ফাকাব্বির সিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। খুলনার একটি হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামি তিনি। 

আজ বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। 

এ সময় ‘সন্ত্রাসীদের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে, ডিরেক্ট অ্যাকশন’, ‘সন্ত্রাসী কার্যক্রম, এই ক্যাম্পাসে চলবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আমরা একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস চেয়েছিলাম, কিন্তু কিছু দুষ্কৃতকারী পুরোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আবারও অপরাজনীতির চেষ্টা চালাচ্ছে। ফাকাব্বিরের মতো যেসব সন্ত্রাসী ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানাই।’

আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে শিবিরকে জড়িয়ে ছাত্রদলকর্মীর অপপ্রচারের প্রতিবাদে বিবৃতি

গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাই পরবর্তী সময়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের চোখের সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছে, অথচ প্রশাসন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। ৫ জানুয়ারি আবাসিক হলে ঢুকে ফাকাব্বির সন্ত্রাসী কাণ্ড চালিয়েছে। আমরা তার বহিষ্কার চাই।’

৫ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে ছাত্রদল কর্মী শেখ ফাকাব্বির বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলের ৪৩৬ নম্বর কক্ষে ঢুকে ছুরি দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন বলে জানান ওই কক্ষে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা। কক্ষটিতে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আমিরুল ইসলাম, আতিকুজ্জামান ও আবু হুরায়রা রাতিন থাকতেন।

সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রত্যক্ষদর্শী ও ফাকাব্বিরের সাবেক রুমমেট সুসম সাহা বলেন, ‘ফাকাব্বিরের সঙ্গে আমি মেসে থাকতাম। সে দীর্ঘদিন নেশাগ্রস্ত। সেদিন সে আমার খোঁজেই হলে আসে। আমিরুলের গলায় ছুরি ধরার পর চিৎকার করে বলে, এই তোরা শিবির না? তোরা শিবির।’ 

আরও পড়ুন: ধূমপান করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

এরপর নিজের হাঁটুতে নিজেই আছড় কেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রাইভেট গ্রুপ ‘সাস্টিয়ান ভয়েসে’ শিবিরকে জড়িয়ে পোস্ট দেন ফাকাব্বির। পোস্টে ফাকাব্বির লেখেন, ‘আমি শাহপরাণ হলে টাকা নিতে আসলে শিবিরের ছেলেরা আমাকে কুপিয়ে জখম করে। পরবর্তী সময়ে আনুমানিক রাত ২টার দিকে একই গ্রুপে ক্ষমা চেয়ে ফাকাব্বির লেখেন, আমি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শিবিরকে জড়ানোর চেষ্টা করেছি ‘ এ রকম ভবিষ্যতে আর করবেন না বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন তিনি।

জানা যায়, শেখ ফাকাব্বির বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন আখালিয়া আবাসিক এলাকার একটি মেসে থাকেন। তার সঙ্গে থাকেন একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রিয়াদ ভূঁইয়া। রিয়াদ ভূঁইয়া জানান, ফাকাব্বির দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। তিনি নিয়মিত গাঁজা সেবন করে রুমে। এমনকি খুলনার একটি হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামিও তিনি। 


সর্বশেষ সংবাদ