গবেষণাপত্রের আদলে বুয়েট-মেডিকেল শিক্ষার্থীর বিয়ের কার্ড, তোলপাড় নেট দুনিয়ায়

গবেষণাপত্রের আদলে বুয়েট-মেডিকেল শিক্ষার্থীর বিয়ের কার্ড
গবেষণাপত্রের আদলে বুয়েট-মেডিকেল শিক্ষার্থীর বিয়ের কার্ড  © সংগৃহীত

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে বিচিত্র এক আমন্ত্রণপত্র। ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ পড়ুয়া সানজানা তাবাসসুম স্নেহা ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) পড়ুয়া মাহজিব হোসেন ইমনের বিয়ের এই কার্ড সাজানো হয়েছে গবেষণাপত্রের আদলে। গত ১৪ অক্টোবর রাজধানীর মিরপুরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়।

বিয়ের কার্ড যেভাবেই সাজানো হোক না কেন—এর ভেতরে লেখা কথাগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রায় একই রকম হয়। মূলত বর ও কনের পরিচয় দিয়ে যার কাছে কার্ডটি পাঠানো হয়েছে বিয়ের অনুষ্ঠানে তাঁর অংশগ্রহণ কামনা করা হয়। তবে স্নেহা-ইমন দম্পত্তির বিয়ের কার্ডটি নানা আলোচনা এবং হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেকেই এই কার্ডটিকে গবেষণাপত্রের সঙ্গেও তুলনা করেছেন। 

একটি পরিপূর্ণ গবেষণাপত্রের মতোই এই নিমন্ত্রণপত্রেও সারসংক্ষেপ, ভূমিকা, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, উপসংহার, রেফারেন্সের মতো বিষয়গুলোর উল্লেখ আছে। সারসংক্ষেপে বিয়ে নিয়ে ছোট পরিসরে বেশ একটা ধারণা পাওয়া যায়। পবিত্র কোরআনের আয়াত দিয়ে সাজানো হয়েছে ভূমিকা। গবেষণাপদ্ধতিতে বলে দেওয়া আছে বিয়ের সময় ও স্থান (গুগল ম্যাপসহ)।

ব্যতিক্রম এই কার্ডের সবার ওপরেই বর ইমন এবং কনে স্নেহার পরিচয় লেখা রয়েছে। যে জায়গায় বিয়ের অনুষ্ঠান হবে সেই ঠিকানাও লেখা রয়েছে। এসব ছাড়াও বিয়ের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে কার্ডটিতে একটি লেখাও অন্তর্ভুক্ত আছে। আছে হবু দম্পতির প্রথম দেখা কোথায় কীভাবে হয়েছিল—সেই বিষয়ে তথ্য। সবার নিচে একটি উপসংহার লেখার মতো এমন আরও কিছু বিষয় রয়েছে সচরাচর যা দেখা যায় না কোনো নিমন্ত্রণপত্রে। 

কীভাবে ভাবনাটা মাথায় এসেছে, এ বিষয়ে ইমন বলেন, আইডিয়াটা কিন্তু আমার নয়। বেশ কয়েক বছর আগে নাইজেরিয়ান একজন এরকম একটা কার্ড বানিয়েছিলেন। তখনো কার্ডটা ভাইরাল হয়েছিল। সেখান থেকেই আইডিয়াটা নেওয়া। আর এটাই যে আমার বিয়ের কার্ড হিসেবে ছাপানো হয়েছে, তাও নয়। এটা বন্ধুবান্ধবকে অনলাইনে পাঠানোর জন্য মজা করে বানানো।

কার্ডটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় বিব্রত হচ্ছেন কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরও বলেন, নাহ। বিয়ে তো হয়েই গেছে। এখন তো আর কেউ দাওয়াত ছাড়া হাজির হতে পারবে না! অনেকে দেখে মজা পাচ্ছেন, তাই ভালো লাগছে।

গত ২৫ নভেম্বর ওই বিয়ের কার্ডটি অ্যাক্সে শেয়ার করে এক ব্যক্তি লিখেছেন—‘এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না এটি একটি বিয়ের কার্ড।’ 

মাত্র তিন দিনেই এটির ভিউ সংখ্যা ৩৪ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। প্রায় ৭০ হাজার রিয়েকশনের পাশাপাশি এটি শেয়ার করেছেন অন্তত ২৫ হাজার মানুষ। কার্ডের নিচে মন্তব্য করা মানুষের সংখ্যাও হাজারের কাছাকাছি।

পোস্টদাতাকে উদ্দেশ্য করে কার্ডটির নিচে একজন লিখেছেন, ‘আপনি বলতে চাইছেন এটি কোনো গবেষণাপত্র নয়?’ 

আরেকজন লিখেছেন, ‘দুই গবেষক বিয়ে করতে যাচ্ছে, বুঝেছেন।’ অন্যদের মধ্যে কার্ডটিকে কেউ ভেবেছেন আদালতের আদেশনামা, কেউ ভেবেছেন গোয়েন্দা তথ্য, কেউ স্কুলের রিপোর্ট! এদিকে নিজের বিয়ের কার্ডটিও এটার মতো করার ঘোষণা দিয়েছেন কৌতূহলী আরেকজন।


সর্বশেষ সংবাদ