ইএফটিতে বেতন না পাওয়ার কারণ ও করণীয় জানাল মাউশি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:১৭ PM , আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:১৭ PM

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রায় ৪ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীকে ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার বা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে দেড় লাখের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী প্রথম ধাপে ইএফটিতে বেতন পেয়েছেন। আরও এক লাখ শিক্ষক-কর্মচারী চলতি সপ্তাহে বেতনের মেসেজ পাবেন। তবে শিক্ষক-কর্মচারীদের বড় একটি অংশ দুই ধাপেই ইএফটিতে বেতন পাবেন না। নানা কারণে তাদের তথ্য এন্ট্রি করা হয়নি বলে জানা গেছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম ইএমআইএস সেলের একটি সূত্র জানিয়েছে, একাধিক কারণে শিক্ষক-কর্মচারীদের বড় একটি অংশ প্রথম ধাপে ইএফটিতে বেতনের মেসেজ পাননি। দ্বিতীয় ধাপেও তারা মেসেজ পাবেন না। এই কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- এমপিও মডিউলে যে তথ্য চাওয়া হয়েছে, সে অনুযায়ী তথ্য না দেওয়া এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের সঙ্গে তথ্যের মিল না থাকা।
ওই সূত্র জানিয়েছে, অনেক শিক্ষকের জাতীয় পরিচয়পত্রে যে নাম দেওয়া আছে, এমপিও শিটে সেই নাম নেই; আবার কারো কারো নামের শুরুতে মোহাম্মদ থাকলেও তিনি মো. লিখেছেন। এছাড়া জন্ম তারিখ ভুল দেওয়া, নামের বানান ভুল করা, দ্বৈত এমপিওসহ আরও কিছু কারণে শিক্ষক-কর্মচারীরা ইএফটিতে বেতন পাননি।
আরও পড়ুন: বেসরকারি শিক্ষকদের ইএফটিতে দ্বিতীয় ধাপের বেতন কবে?
জানতে চাইলে ইএমআইএস সেলের সিনিয়র সিস্টেম এনালিষ্ট খন্দকার আজিজুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘বেশ কিছু কারণে শিক্ষকরা বাদ পড়েছেন। দ্বিতীয় ধাপের মেসেজ পাঠানোর প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর প্রতিষ্ঠান প্রধানদের তথ্য সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে। এছাড়া কী কারণে শিক্ষকরা বেতনের মেসেজ পাননি সেটিও জানিয়ে দেওয়া হবে।’
শিক্ষকদের করণীয়
ইএমআইএস সেল জানিয়েছে, যে শিক্ষক-কর্মচারীরা ইএফটিতে বেতনের মেসেজ পাননি তাদের অপেক্ষা করতে হবে। দ্বিতীয় ধাপে বেতনের পাঠানোর কাজ শেষ হলে তৃতীয় ধাপে মেসেজ পাঠানো হবে। তবে এর আগে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের ড্যাশবোর্ডে প্রবেশের এক্সেস ওপেন করে দেওয়া হবে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে ইএমআইএস সেলের এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ‘প্রথম ধাপে যারা ইএফটিতে বেতনের মেসেজ পাননি এবং দ্বিতীয় ধাপে যারা মেসেজ পাবেন না, তাদের আপাতত অপেক্ষা ছাড়া কিছু করার নেই। দ্বিতীয় ধাপের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর কী কারণে বেতনের মেসেজ পাঠছানো হয়নি সে বিষয়টি প্রতিষ্ঠান প্রধানদের জানিয়ে দেওয়া হবে।’
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, প্রতিষ্ঠান প্রধানরা বেতন না পাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের ভুল হওয়া তথ্যগুলো সংশোধন করে দেবেন। এরপর পুনরায় তথ্য পাঠাবেন। পরবর্তীতে সেই তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই শেষে বাদ পড়া শিক্ষক-কর্মচারীদের তৃতীয় ধাপে ইএফটিতে বেতনের মেসেজ পাঠানো হবে।
জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পান। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হয়। এই অর্থ তুলতে শিক্ষকদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হত।
ব্যাংকগুলো মাধ্যমে বেতন-ভাতা ছাড়ের জন্য কয়েক পর্যায়ে অনুমোদনসহ সংশ্লিষ্ট কাজে অনেক ক্ষেত্রেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পেতে দেরি হয়। অনেক সময় পরের মাসের ১০ তারিখের পরও আগের মাসের বেতন-ভাতা জোটে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। পরবর্তীতে গত ১ জানুয়ারি এক লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা পেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বেসরকারি স্কুল-কলেজের ৩ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে ২ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য যাচাই করছে মাউশি। ২৭ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য পায়নি সংস্থাটি। অবশিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য পেলেও তাতে ত্রুটি থাকায় সেগুলো সংশোধন করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।