ফেরি সিন্ডিকেটের কারণে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা, অ্যাম্বুলেন্সে শিশুর মৃত্যু

বাবার সামনে মারা যায় শিশুটি
বাবার সামনে মারা যায় শিশুটি   © ফাইল ফটো

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মীরগঞ্জ ফেরিঘাটে প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফেরি ছাড়ায় অ্যাম্বুলেন্সে থাকা অবস্থায় এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই নবজাতকের বাবা বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মুলাদী পৌর শহরের বাসিন্দা সাব্বির হোসেন লিমন এ অভিযোগ করেছেন।

রবিবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় বাবুগঞ্জ উপজেলার মীরগঞ্জ ফেরিঘাটে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরদিন সোমবার দুপুরে সাব্বির হোসেন লিমন তার ফেসবুক আইডি থেকে আবেগঘন একটি পোস্ট দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এ ঘটনায় অনেকেই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মন্তব্য করেছেন। আবার কেউ কেউ এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেছেন।

সাব্বির হোসেন লিমন ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘মীরগঞ্জ ফেরি এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট বন্ধ রেখে আমার সুস্থ ছেলেটার প্রাণ কেড়ে নিলো। (৬.৪০ মিনিটের ফেরি ছেড়েছে ৮টা ২০ মিনিটে)। মেডিকেল থেকে সুস্থ অবস্থায় রিলিজ দিয়েছে আমার নবজাতক ছেলেটাকে, অ্যাম্বুলেন্সে বাড়ি নিয়ে আসছিলাম। ফেরিতে সাইফুল নামের একজন আছেন ,আমি প্রতিবাদ করায় তিনি আমার ওপর হামলা করার চেষ্টা করেন। একদিকে আমার ছেলের লাশ, অন্যদিকে সন্ত্রাসী সাইফুলের হামলার চেষ্টা ... অনেক অসহায় হয়ে পড়েছিলাম আমি।’

তিনি আরও লেখেন, ‘পিতার চোখের সামনে সন্তানের মৃত্যু যে কত কষ্টের তা আমি ছাড়া কেউ বুঝবে না। এই ফেরি সিন্ডিকেটের কারণে মরে গেলো আমার নিষ্পাপ ছেলেটা।’

আরও পড়ুনঃ ৩ লাখে ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি, ভাইভায় এসে আটক

এ বিষয়ে সোমবার রাতে সাব্বির হোসেন লিমন বলেন, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে গত ১৪ আগস্ট আমার স্ত্রী ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। শনিবার (২০ আগস্ট) আমার স্ত্রী ও নবজাতককে বাড়ি যাওয়ার জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়। ওইদিন নগরীতে এক স্বজনের বাড়িতে আমরা ছিলাম। পরদিন রবিবার বিকেলে নবজাতককে নিয়ে নগরী থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে আমরা মুলাদী বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেই। মুলাদী যেতে আড়িয়ালখাঁ নদী পার হতে হয়। যানবাহন ফেরি দিয়ে পার হয়। নগরী থেকে অ্যাম্বুলেন্স রওনা হওয়ার আগেই খবর নিয়ে জানতে পারি বাবুগঞ্জের মীরগঞ্জ ফেরিঘাট থেকে ফেরি ছাড়বে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে। অ্যাম্বুলেন্স চালক দ্রুত চালিয়ে ৬টা ৩৮ মিনিটে ফেরিঘাটে এসে পৌঁছায়। এর প্রায় ১০ মিনিট পর অপরপ্রান্ত থেকে ফেরি মীরগঞ্জ ফেরি ঘাটে আসে। অন্য যানবাহনের সঙ্গে আমাদের অ্যাম্বুলেন্সটি ফেরিতে ওঠে। কিছুক্ষণের মধ্যে যানবাহনে ফেরি ভর্তি হয়ে যায়। তবে এরপরও ফেরিটি ঘাটে অপেক্ষা করছিল।

তিনি বলেন, এদিকে ফেরিতে অ্যাম্বুলেন্স ঘেঁষে যানবহন ছিল। এক কথায় ফেরিটি গাড়িতে ঠাসা ছিল। অ্যাম্বুলেন্সের এসি খারাপ ছিল। প্রচণ্ড গরম ও বাতাস চলাচল কম থাকায় আমরা হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। কিন্তু নবজাতককে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের বাইরে বের হবো তার উপায় ছিল না। কারণ অ্যাম্বুলেন্সের পাশে আরেকটি গাড়ি ঘেঁষে ফেরিতে রাখা ছিল।

 

সর্বশেষ সংবাদ