চাকরি ছেড়ে ছিনতাইয়ে জড়ান টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার

আশরাফুল ইসলাম
আশরাফুল ইসলাম  © সংগৃহীত

আশরাফুল ইসলাম। পেশায় ছিলেনে একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। রাজধানীর ধানমন্ডির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে একটি টেক্সটাইল কোম্পানিতে চাকরি করতেন। চাকরির সুবাদে কোম্পানির মিনি ট্রাকচালক লেলিন শেখের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রে তার সঙ্গে ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়েন। 

‘গুরু’ লেলিন শেখের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে হয়ে ওঠেন দক্ষ ছিনতাইকারী। এরপর রিকশা আরোহীদের টার্গেট করে বাইকে এসে তাদের ব্যাগ টাকা ছিনতাই দ্রুত পালিয়ে যান। এমন একটি চক্রের চারজন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে ধরা পড়লে তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের এমন কৌশল জানতে পারে পুলিশ।

আজ সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার ছিনতাই চক্রের এসব তথ্য জানান।

আশরাফুল সম্পর্কে তিনি জানান, এই বস্ত্র প্রকৌশলী ৩৫ হাজার টাকা বেতনে রাজধানীতে একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। ২০১৯ সালে চাকরি ছেড়ে ওই কোম্পানির পিকআপ চালক লেলিন শেখের মাধ্যমে এ চক্রে জড়ান আশরাফুল।

"সেই চাকরি ছাড়ার পর বেশ চলছিল আশরাফুলের জীবন। চাকরি ছেড়ে লেলিনকে মোটরসাইকেলে পেছনে নিয়ে প্রতিদিন বাসা থেকে বেড়িয়ে পড়তেন।

“দামি ও গতিশীল মোটরসাইকেল দিয়ে প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্থানে টান মেরে রিকশা আরোহী বা পথচারীর ব্যাগ নিয়ে পালাত।“

“এমন কোন দিন নেই যে, তারা কারও ব্যাগ টান দিয়ে নেননি,” যোগ করেন এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

আশরাফুল ছাড়া গ্রেপ্তার বাকিরা হলেন- লেলিন, জিল্লুর রহমান খান ও সাইফুল ইসলাম ওরফে শাওন। রাজধানীর মগবাজার ও মোহাম্মদপুরের পশ্চিম কাঁটাসুর এলাকা থেকে তাদের রবিবার গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চক্রটি মিরপুর, পল্লবী, বনানী, গুলশান, ধানমণ্ডি, তেজগাঁও ও আগারগাঁও এলাকায় শতাধিক ছোট-বড় ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেছে।

চক্রটির সন্ধান পাওয়া প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার জানান, রোজার আগে মিরপুর এলাকায় ১১ লাখ এবং ৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের দুটি ঘটনা ঘটে। দুই ঘটনাতেই পল্লবি থানায় পৃথক মামলাও হয়।

ডিবি গুলশানের একাধিক টিম মামলা দুটির ছায়া তদন্তে নেমে সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথম ঘটনায় ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ ও লেনিন এবং দ্বিতীয় ঘটনায় জিল্লুর ও সাইফুলকে মোটরসাইকেল আরোহী হিসেবে শনাক্ত করে। এরপর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ছিনতাইয়ের কৌশল সম্পর্কে হাফিজ আক্তার বলেন, "এরা মূলত ভালো ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল নিয়ে রিকশারোহী বা ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারীর নিকট থেকে আচমকা টান মেরে হাই স্পিডে পালিয়ে যায়।"

তিনি জানান, লেলিন শেখ ও শাওনের বিরুদ্ধে ডিএমপির শাহবাগ, মিরপুর, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, শেরে বাংলা নগর, মোহাম্মদপুর ও পল্লবী থানায় একাধিক ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেল, ছিনতাই করা ৩৪ লাখ টাকা, ৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

গোয়েন্দা পুলিশের এ সংবাদ সম্মেলনে আরও দাবি করা হয়, "এবার রমজানে দু’একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ছাড়া অনকাঙ্খিত কোন ঘটনা ঘটেনি।"

এছাড়া ঈদের ছুটিতে ঢাকার ফাঁকা রাস্তায় দুর্ঘটনা এড়াতে যানবাহনগুলোকে বেপরোয়াভাবে না চালানোরও পরামর্শ দেন হাফিজ আক্তার।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!