ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা, গ্রেফতার ১

ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা
ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা  © প্রতীকী ছবি

ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে মোঃ আবু মুসা আসারী নামে এক ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এসময় তার কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের ভুয়া ২টি পরিচয়পত্র, একাধিক ভুয়া এনআইডি কার্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্রের কপি উদ্ধার করা হয়।

রবিবার (২৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টায় গেন্ডারিয়া থানার নারিন্দা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এ ব্যাপারে গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, ভিকটিমের মেয়ে গত ১০ অক্টোবর ২০২১ ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এবং ফলাফল খারাপ হয়। পরবর্তীতে গত ১২ অক্টোবর ২০২১ ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর গ্রেফতারকৃত মুসা আসারী এর সহিত ফেইসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। মুসা আসারী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, সে তার মেয়ের রোল নম্বর নিয়ে তাৎক্ষণিক চেক করে জানায় যে মেয়ের পরীক্ষার রেজাল্ট ভালই হয়েছে। ভিকটিমের মেয়ে সরকারীভাবে চান্স পেয়েছে কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনিয়মের কারণে তাকে চান্স না দিয়ে অন্য কাউকে চান্স দেওয়া হয়েছে। তিনি যদি মেয়েকে ডেন্টালে চান্স পাওয়াতে চান তাহলে এখন দশ লক্ষ টাকা দিতে হবে। ভিকটিমের কাছে এত টাকা না থাকায় মুসা বলে এখন দুই লক্ষ টাকা দিন বাকি টাকা ডেন্টালে ভর্তির পরে দিলে হবে।

তিনি জানান, অভিযুক্তের কথা বিশ্বাস না করায় তখন ভিকটিমের ইমো আইডিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এর নাবিউল হাসান সহকারী সচিব এর পরিচয় পত্র পাঠিয়ে দেয়। সেই সাথে ভিকটিমের মনে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য মোবাইলে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সহিত ফেইক চ্যাটিং স্ক্রীনশট পাঠায়। উক্ত পরিচয় পত্র দেখে ভিকটিম কিছুটা আশ্বস্ত হলে মুসার সাথে দেখা করে যাত্রাবাড়ী থানার শহীদ ফারুক সড়কের রেটিনা কোচিং সেন্টারের সামনে চাহিদা মোতাবেক অভিযুক্তকে দুই লক্ষ টাকা প্রদান করেন।

তিনি আরও বলেন, টাকা দেয়ার পরের দিন মুসাকে ফোন দিয়ে রেজাল্টের বিষয়ে জানতে চাইলে সে জানায়, আজকের মধ্যেই উপরের মহলে আরো এক লক্ষ টাকা দিতে হবে নতুবা তার মেয়ের রেজাল্ট আগেরটাই বলবৎ থাকবে। তখন মুসার কথাবার্তা ভিকটিমের সন্দেহজনক মনে হলে তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে অনুমান করেন। অপরদিকে মুসা ভিকটিমের কাছে টাকার জন্য বারবার ফোন দিতে থাকে এবং মেসেঞ্জারে ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদান করতে থাকে যে, চাহিদা মোতাবেক টাকা না দিলে ভিকটিমের মেয়েকে কোথাও ভর্তি হতে দিবে না।

এ ঘটনায় গত শনিবার (২৩ অক্টোবর ২০২১) যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা রুজু হয়। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তের জন্য গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগে হস্তান্তর হলে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিম, গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রবিবার (২৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে আটটায় গেন্ডারিয়া থানার নারিন্দা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত মুসা অনেক প্রার্থীদের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে মর্মে এই কর্মকর্তা জানান।


সর্বশেষ সংবাদ