৪ কারণে দগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতে চির বিদায়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০১৯, ১২:২৭ AM , আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৯, ১২:২৭ AM
বুধবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ফেনীর সোনাগাজীর অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি। ৮৫ ভাগ পোড়া শরীর নিয়ে চার দিনের লড়াই শেষে তিনি হার মানলেন। নুসরাতের চির বিদায়ের চারটি কারণের কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এসব হচ্ছে-নুসরাতের শরীরের ৮৫ ভাগ মেজর বার্ন; ৬০ ভাগ গভীর পোড়া; তার শ্বাসতন্ত্র পোড়া ছিল; কেরোসিন নিজেই টক্সিক। এটা ফুসফুস এবং ব্রেনের কার্যক্ষমতাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. তানভীর আহমেদ বলেন, চারটা কারণেই নুসরাতে মৃত্যুর প্রধান কারণ বলা যায়। এরমধ্যে রয়েছে-তার শরীরের ৮৫ ভাগ মেজর বার্ন। এর মধ্যে ৬০ ভাগ গভীর পোড়া। তার শ্বাসতন্ত্র পোড়া ছিল। কেরোসিন নিজেই টক্সিক। এটা ফুসফুস এবং ব্রেনের কার্যক্ষমতাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়।
তানভীর আহমেদ বলেন, এমনিতে সুইসাইডাল বা হোমিসাইডাল দুইটার ক্ষেত্রেই ইনটেনসিভ থাকে। যেগুলো দুর্ঘটনাজনিত, সেগুলোতে কোনও উদ্দেশ্য থাকে না। সেগুলো দুর্ঘটনাবশতই হয়ে যায়। যেগুলো আত্মহত্যার, সেগুলোর ক্ষেত্রে সে নিজে চিন্তা করে যে, আমি কীভাবে পুড়লে মারা যাবো। আর যেগুলো খুনের বিষয় থাকে, সেখানে চিন্তা করে যে, কীভাবে পোড়ালে মারা যাবে; সে আর কিছু করতে পারবে না। সেই কারণে এই দুই ক্ষেত্রের দুর্ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ থাকে।
তানভীর আহমেদের ভাষ্য, নুসরাতের ঘটনাটি আত্মহত্যাজনিত বলে আমাদের মনে হয় না। কারণ, আমরা তাকে যেরকম দেখেছি এবং তার যে অবস্থা এতে করে এটাকে আমরা আত্মহত্যাজনিত কেস কোনোভাবেই বলবো না। তাছাড়া আপনারা মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছেন। আমরাও যতটুকু শুনেছি, এটা কোনোভাবেই আত্মহত্যাজনিত কোনও ঘটনা ছিল বলে আমার মনে হয় না।
বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ৮৫ ভাগ বার্ন হওয়া রোগীর বডিতে অনেক রকম সমস্যা হয়। এই রোগীকে বাঁচানো খুব মুশকিল। আজকে তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। এ ধরনের পেশেন্টের হঠাৎ মৃত্যু হয়। আমরা সিঙ্গাপুরে কথা বলেছিলাম, তারাও বলেছিল চান্স অব সারভাইবেল কম।
জানা যায়, গত শনিবার সকালে ফেনীর পৌর শহরের সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে গেলে মুখোশধারী কয়েকজন তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন নুসরাত।