মেয়ে দেখানোর নাম করে ডেকে এনে হত্যা

সংবাদ সম্মেলন ও ইনসেটে গ্রেপ্তারকৃত আসামি
সংবাদ সম্মেলন ও ইনসেটে গ্রেপ্তারকৃত আসামি  © টিডিসি সম্পাদিত

মেয়ে দেখানোর নাম করে ডেকে এনে  উল্লাহ নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। মাত্র ২১ ঘণ্টার মধ্যে ক্লু-লেস হত্যা মামলার রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে চাঁদপুর জেলা পুলিশ। আজ রবিবার (১৩ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব পিপিএম, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) লুৎফর রহমানসহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চাঁদপুরের মতলব উপজেলার গোপালকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে পুকুরে পাওয়া হাবিব উল্লাহ নামের এক ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় অবশেষে ক্লু-লেস হত্যা মামলার রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে চাঁদপুর জেলা পুলিশ। ঘটনার মাত্র ২১ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামিকে।

শুক্রবার (১১ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় লোকজন পুকুরে একটি অজ্ঞাত পুরুষের লাশ ভাসতে দেখে মতলব উত্তর থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে, সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। 

প্রথমে মৃত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করা না গেলেও, পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, মৃত ব্যক্তির নাম মো. হাবিব উল্লাহ (৫০)। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার পুটিয়ারপাড় এলাকার বাসিন্দা এবং মেনোয়ারা বেগম মনুর স্বামী। পরবর্তীতে নিহতের পরিবার ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ শনাক্ত করে এবং নিহতের স্ত্রী অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি রুজু হওয়ার পর আধুনিক প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তৎপরতার ভিত্তিতে একটানা ২১ ঘণ্টার অভিযানে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা থেকে কামাল মীরা (৫৫) নামে একজনকে বরিশাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেন তিনি।

আরও পড়ুন: ‘৮ দিন পর আমার পর্তুগালের ফ্লাইট, অলরেডি ২২ লাখ টাকা খরচ করে ফেলেছি’

এ ছাড়াও ৩/৪ মাস আগে নারায়ণগঞ্জের মদনপুরে একটি চায়ের দোকানে হাবিব উল্লাহর সঙ্গে তার পরিচয় হয় কামাল মীরার। এরপর হাবিব তাকে ২য় বিয়ে করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৬ হাজার টাকা নেয়। পুনরায় ১০ জুলাই হাবিব তাকে মেয়ে দেখানোর কথা বলে, মতলব উত্তর থানাধীন এলাকায় নিয়ে আসে এবং আবারও ৪ হাজার টাকা নেয়। এদিন সন্ধ্যায় তারা শাহ সোলেমান লেংটার মাজারে ঘোরাঘুরি করে রাত ১১টার দিকে গোপালকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে একটি পুকুর পাড়ে যায়।

সেখানে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। ধস্তাধস্তির মধ্যে দুজনই পাকা সিঁড়ির ওপর পড়ে গেলে হাবিব উল্লাহর মোবাইল বন্ধ করে দেন। পরে কামাল মীরা হাবিব উল্লাহকে অণ্ডকোষে লাথি মেরে দুর্বল করে পানিতে চুবিয়ে রাখেন। আত্মরক্ষার চেষ্টায় হাবিব কামালের ডান হাতের দুই আঙুলে কামড় দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। হাবিব নিস্তেজ হয়ে পড়লে কামাল সাঁতরে পুকুর পার হয়ে পালিয়ে যান এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন কদমতলী এলাকায় আত্মগোপন করেন।

এদিকে আসামির দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে তদন্ত কার্যক্রম আরও জোরদার করা হচ্ছে। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানান চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!