গার্মেন্টস কর্মী হত্যা মামলায় প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড
- নেত্রকোনা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ০৮:৫২ PM , আপডেট: ২২ জুন ২০২৫, ০৩:০০ PM
নেত্রকোনায় গার্মেন্টস কর্মী কমলা খাতুন হত্যা মামলায় পরকীয়া প্রেমিক নিজাম উদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। একইসাথে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
রবিবার (৪ মে) বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ মো. হাফিজুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত নিজাম উদ্দিন নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া গ্রামের মো. চাঁন মিয়ার ছেলে।
মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী কমলা খাতুনের ভাই নিজাম উদ্দিন। তবে তিনি দুর্গাপুর উপজেলার বাসিন্দা।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, নিহত কমলা খাতুন নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বাসিন্দা। স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর তিনি গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার মিরা বাজারে ছোট বোন চম্পা খাতুনের সঙ্গে বসবাস করতেন এবং স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন।
২০২২ সালের কোরবানির ঈদের পর কমলা খাতুন বাড়ি থেকে ফিরে যান টঙ্গীতে। মাঝে মাঝে পরিবারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতেন।
বাদী নিজাম উদ্দিন জানান, ২০২২ সালের ১৯ নভেম্বর বিকেল ৩টার দিকে পূর্বধলার খলিসাউড়া গ্রামের পাবই দাসপাড়া বালুচড়া বাজারের পাশে পাকা রাস্তার ধারে অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে নেত্রকোনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। সেখানে গিয়ে ভাই নিজাম উদ্দিন মরদেহটি শনাক্ত করেন। কমলা খাতুনের পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে গিয়েছিল।
পরে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে জানা যায়, ১৮ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে কমলা খাতুন তার ভাতিজা মামুদের বাসায় যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন। এরপর তিনি আর ফেরেননি।
কমলার বোন চম্পা খাতুন জানান, তাদের পাশের একটি বাসায় থাকা এক ব্যক্তিকে ‘দুলাভাই’ বলে ডাকতেন কমলা। ঘটনার পর ওই ব্যক্তিকে খবর দিতে গেলে দেখা যায়, তার বাসায় তালা দেওয়া। পরে পুলিশি তদন্তে নিশ্চিত হওয়া যায়, ওই ‘দুলাভাই’ই পূর্বধলার নিজাম উদ্দিন।
পুলিশ তদন্তে উঠে আসে, বিয়ের জন্য কমলার চাপ সইতে না পেরে পরিকল্পিতভাবে তাকে গাজীপুর থেকে পূর্বধলায় নিয়ে গিয়ে হত্যা করেন নিজাম উদ্দিন। ঘটনার পর তিনি গা-ঢাকা দেন।
আদালত সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রায়ে নিজাম উদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে নিহতের পরিবার। তারা দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন।