ক্রসফায়ারে হত্যা: ডিবির সাবেক ওসিসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা তদন্তের নির্দেশ

 আশিকুর রহমান
আশিকুর রহমান  © সংগৃহীত

ময়মনসিংহ নগরীর পুরোহিত পাড়া এলাকায় ক্রসফায়ারে নিহত রাজন হত্যা মামলায় জেলা গোয়েন্দা শাখার সাবেক ওসি আশিকুর রহমান সহ ১৭ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পিবিআইকে তদন্ত পূর্বক রিপোর্ট প্রদানের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নম্বর আমলী আদালতের বিচারক শরিফুল হক এই আদেশ প্রদান করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মুসতাসিনুর রহমান।

মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছেন, পুলিশ পরিদর্শক মুখলেসুর রহমান, কনস্টেবল কাউসার হাবীব, কনস্টেবল গুলজার, কনস্টেবল সোহরাব আলী, এসআই ফারুক আহমেদ, এস আই পরিমল চন্দ্র দাস, এস আই আকরাম হোসেন, এএসআই আব্দুল মজিদ, এএসআই জিন্নাত হাসান মানিক, এএসআই জাকির হোসেন, এএসআই জিল্লুর রহমান, কনস্টেবল সাইদুল, কনস্টেবল সেলিম, কনস্টেবল রাশেদুল, কনস্টেবল সানোয়ার ও কনস্টেবল জহিরুল ইসলাম।

মামলার এজহারে বলা হয়েছে,  ২০১৮ সালের ২২ মে মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে জেলা ডিবির সাবেক ওসি আশিকুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল পুরোহিতপাড়ায় অভিযান চালিয়ে বাদী হারুন অর রশিদের ছেলে রাজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে বাদী তার ছেলে দেখার জন্য ডিবি কার্যালয়ে যায়। কিন্তু দুই দিনেও তাকে ছাড়েনি। এরপর ওই বছরের ২৪ মে সকালে বাদী আবারও ছেলেকে ছাড়াতে ডিবি কার্যালয়ে গেলে ওসি আশিকুর রহমান তার ছেলেকে ছাড়াতে ১০ লাখ টাকা রাতের মধ্যে দিতে হবে এমন দাবি করেন। 

এতে আরও বলা হয়, বাদী টাকা সংগ্রহ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে রাত পৌনে ২ টার দিকে পুরোহিতপাড়া রেলওয়ে ভাঙ্গা ওয়াল সংলগ্ন পুকুরপাড় এলাকায় রাজনকে নিয়ে গিয়ে ওসি আশিকুর রহমানের নির্দেশে সঙ্গে থাকা পুলিশ সদস্যরা হত্যার উদ্দেশ্যে বুকে ও পেটের নিচে কয়েক রাউন্ড গুলি করে। এরপর রাজন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মারা যান। তাকে উদ্ধার করে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের হাতে মরদেহ তুলে দেয়।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মুসতাসিনুর রহমান জানান, গত বছরের ৩১ অক্টোবর নিহত রাজনের পিতা হারুন অর রশিদ জেলা গোয়েন্দা শাখার সাবেক ওসি আশিকুর রহমানসহ ১৭ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। রবিবার বিকেলে আদালত অভিযোগ তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের জন্য জেলা পিবিআইকে নির্দেশ প্রদান 

নিহত রাজনের বাবা হারুন অর রশিদ বলেন, মাত্র ১০ লাখ টাকা দিতে না পারায় ওসি আশিকুর রহমানসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা আমার ছেলে রাজনকে ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে। এই ঘটনায় দায়ীদের বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য আদালতে মামলা করেছি। 

মামলার বাদীর আইনজীবী সালাহ উদ্দিন পাঠান জানান, চাহিদার ১০ লাখ টাকা না পেয়ে ক্রসফায়ারে নামে ডিবির সাবেক ওসি আশিকুর রহমানের নেতৃত্বে গুলি করে রাজনকে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর নিহত রাজনের চাচা আলালকে ওই মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে।, 

তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন পর বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করার জন্য জেলা পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরে বিজ্ঞ আদালত নিশ্চয়ই মামলার বাদির পক্ষে  আদেশ দিবেন। 


সর্বশেষ সংবাদ