যশোরের কেশবপুর
মাছের ঘেরে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সাফল্য, আয় বাড়ছে কৃষকদের
- যশোর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৮ PM
যশোরের কেশবপুরের খুকশিয়া বিল একসময় জলাবদ্ধতায় পরিত্যক্ত ছিল। তবে এখন সেই বিলের মাছের ঘেরের ভেড়িতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাচ্ছেন কৃষকরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যশোর, খুলনা, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে এসব তরমুজ, আর এতে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এলাকার কৃষকরা।
জানা গেছে, কেশবপুর সদর থেকে পূর্বাঞ্চলে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে শ্রীহরি নদীর তীরে অবস্থিত বিল খুকশিয়া। এ বিলের ৬ হাজার ৩৭৫ বিঘা ফসলি জমি দীর্ঘ ২০ থেকে ২২ বছর ধরে জলাবদ্ধতা থাকায় কৃষকরা ফসল ফলাতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েন। বিলের জলাবদ্ধতা নিরসন করে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে ২০০৫ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড শ্রীহরি নদীতে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে এবং বিল খুকশিয়ার তলদেশ উঁচু করার জন্য জোয়ার আঁধার (টিআরএম) প্রকল্প গ্রহণ করলেও সফলতা মেলেনি। প্রকল্প শেষে জমির মালিক কৃষকরা বিলটিতে মাছের ঘের তৈরি করেন এবং মাছের ঘেরের ভেড়িতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজসহ বিভিন্ন প্রকার সবজির চাষ করেন। বিল খুকশিয়ায় দেখা যায়, অধিকাংশ ঘেরের বেড়িতে তরমুজ চাষ হচ্ছে।
কৃষক ইকবাল হোসেন বলেন, ১৩ বিঘা মাছের ঘেরের ভেড়িতে ১ হাজার ৪০০টি তরমুজের মাচা তৈরি করে ফলন পেয়েছেন ২৭৫ মণ। প্রতি মণ তরমুজ ১ হাজার ২০০ টাকা করে বিক্রি করছেন।
একইভাবে আবদুল হালিম খান মাছের ঘেরের ভেড়িতে ১২০টি মাচা তৈরি করে ৩০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। কৃষক আবদুল কুদ্দুস ৭ বিঘা মাছের ঘেরের ভেড়িতে তরমুজ চাষ করেছেন। তার উৎপাদিত তরমুজ আকারেও বেশ বড়।
তরমুজ চাষি ইসরাফিল বলেন, ২০ থেকে ২২ বছর বিল খুকশিয়া জলাবদ্ধ থাকায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। ২০০৫ সালে ওই বিলে টিআরএম প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্প শেষে বিলটিতে কৃষকরা মাছের ঘের তৈরি করেন। ওই সব ঘেরের ভেড়িতে এ বছর কৃষকরা তরমুজ চাষ করে অনেক ফলন পেয়েছেন। ধান, মাছ চাষের পাশাপাশি তরমুজ চাষে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
কেশবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিল খুকশিয়ায় মাছের ঘেরের ভেড়িতে তরমুজ চাষ ওই এলাকার কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করছে। এশিয়ান-১, পাকিজা সুপার, ব্লাক কিং, ব্লাক কুইন জাতের তরমুজ এখানে বেশি আবাদ করা হয়েছে। এ চাষে কৃষকদের উদ্ভুদ্ধ করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন বলেন, মাছের ঘেরের ভেড়িতে তরমুজ চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন সবজি চাষ করে এলাকার কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের তরমুজ চাষে বিভিন্নভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।