‘শিরক’ আখ্যা দিয়ে কাটা হলো শতবর্ষী বটগাছ, ভিডিও ভাইরাল

‘শিরক’ আখ্যা দিয়ে কাটা হলো শতবর্ষী বটগাছ
‘শিরক’ আখ্যা দিয়ে কাটা হলো শতবর্ষী বটগাছ  © সংগৃহীত

মাদারীপুরে শিরক ও বিদআতের অজুহাতে কেটে ফেলা হয়েছে শতবর্ষী একটি বটগাছ। এই বটগাছের গোড়ায় মোমবাতি জ্বালিয়ে ও লাল কাপড় বেঁধে অনেকেই মানত করতেন- এটি ইসলামের দৃষ্টিতে শিরক বা বিদআত উল্লেখ করে স্থানীয় আলেম-ওলামা ও মুসল্লিরা গাছটি কেটে ফেলেছেন। জেলার সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের ‘আলম মীরার কান্দি’ এলাকার ঘটনাটি ঘটেছে। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, বটগাছটি ‘অলৌকিক ক্ষমতার’ অধিকারী বলে বিশ্বাস করতেন অনেকে। এ কারণে প্রাচীন এই বটগাছের গোড়ায় অনেকে মোমবাতি জ্বালিয়ে মানত করতেন। মনের বাসনা পূর্ণ করতে শতবর্ষী বটগাছের গোড়ায় মোমবাতি, আগরবাতি, নতুন গামছা, কাপড় ও মিষ্টি দিতেন এলাকার মানুষ। তাদের বিশ্বাস, এখানে মানত করলে পূর্ণ হয় মনের আকাঙ্ক্ষা।

বট গাছটি ওই এলাকার কুমার নদের পাশে থাকায় মানুষের প্রশান্তির একটি স্থান ছিল। অনেকেই কৃষিকাজ করে এই গাছে ছায়ায় বিশ্রাম নিতেন। নদী পার হতে এলে গাছের নিচে অপেক্ষা করতেন।

গতকাল সোমবার (৫ মে) দুপুরে কুমার নদের পাশে থাকা শত বছরের বটগাছটি করাত দিয়ে কেটে ফেলা হয়। এরই একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। চরঘুনসি এলাকার বাসিন্দা আব্দুর সাত্তার হাওলাদারের মালিকানাধীন গাছটি ১৫০০ টাকায় আলেমরা কিনে এটি কেটে ফেলেন বলে জানান স্থানীয়রা।

মাইনুল ফয়সাল নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, শিরক করলো কারা আর ক্ষতিগ্রস্থ হলো কে! গোটা জাতি এতটা অশিক্ষিত কি করে হয় আমার মাথায় আসে না। বটগাছের অপরাধ কী?

ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেক স্থানীয় বাসিন্দা বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ। ঘটনার তদন্তে নেমেছেন তারা।

জেলা বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর বলেন, আগে যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাছটি কাটার পরিকল্পনা হয়েছিল, তা অস্বীকার করছেন গাছমালিক। জমির মালিক সত্তর হাওলাদার বলেছেন, গাছ তিনি ১৫০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। আমার ধারণা, ঘটনা আগেরটা ঠিক, তবে জমির মালিককে ম্যানেজ করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি এবং তদন্ত করা হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার (৬ মে) মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, গতকাল রাতে বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ ঘটনার সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট, তাদেরকে ডাকা হয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে পরে বিষয়টি আপনাদেরকে জানাতে পারবো।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!