দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স এখন অপরাধীদের অভয়ারণ্য

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স  © সংগৃহীত

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স এখন যেন এক অরক্ষিত দুর্গ। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকেই কুচক্রী একটি মহল সুযোগ নিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় কমপ্লেক্স চত্বরে। সীমানা প্রাচীর ভেঙে নিয়ে বিক্রি করে ফেলে ইট, রড ও লোহার গ্রীল। হাতিয়ে নেয় কয়েক লক্ষাধিক টাকা।

এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে গত আট মাসে কমপ্লেক্স এলাকায় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে চুরি, ছিনতাই ও মাদকসেবীদের দৌরাত্ম্য। সীমানা ছাড়া খোলামেলা এই সরকারি স্থাপনাটি পরিণত হয়েছে এক ভয়াবহ অপরাধকেন্দ্রে। প্রশাসনিক ভবন, অফিসার্স কোয়ার্টার ও ডরমিটরিতে বসবাসকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রয়েছেন চরম নিরাপত্তাহীনতায়।

পরিষদ চত্বরে ঘুরে দেখা যায়, ভাঙা সীমানা প্রাচীর থেকে এখনও চুরি হয়ে যাচ্ছে ইট ও গ্রীল। পরিত্যক্ত ভবনগুলোতে মাদকসেবীদের উপস্থিতি স্পষ্ট—মেঝেজুড়ে ছড়িয়ে আছে ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, ফয়েল পেপার, বোতল। জানালার গ্রীল, দরজার চৌকাঠ, এমনকি বৈদ্যুতিক সুইচ-বাল্ব পর্যন্ত নেই।

প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, উপজেলা অফিসগুলোতে সংরক্ষিত থাকে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কাগজপত্র ও প্রযুক্তি যন্ত্রাংশ। এসব চুরি হলে নাগরিকসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। 

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসক মো. শামছুজ্জামান আসিফ বলেন, “নিরাপত্তা ছাড়া কোনো সরকারি কার্যক্রম চলতে পারে না। তাই দ্রুত সীমানা প্রাচীর নির্মাণ দরকার।” তিনি জানান, রাতের আঁধারে একাধিকবার বখাটেদের তাড়াতে হয়েছে কমপ্লেক্স চত্বর থেকে।

নির্বাহী এলাকার বাসিন্দা মো. মমিন মিয়া, রেজা মিয়া ও নাজমা বেগম জানান, পুকুরপাড়ের রাস্তায় প্রায়ই ছিনতাই হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি—কমপ্লেক্স এলাকায় অপরাধীদের অবাধ চলাফেরা বন্ধ করতে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান বলেন, “সম্প্রতি বেশ কিছু চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে কমপ্লেক্স এলাকায়। দ্রুত সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও রাতভর নৈশ প্রহরীর মাধ্যমে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। পুলিশি টহলও জোরদার করা হবে।”


সর্বশেষ সংবাদ